ঢাকা: ২০১৪ সালে ২৪০০ মেগাওয়াট বিদুৎ উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন চীনের ক্যামেন পাওয়ার স্টেশন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র মডেল হিসেবে পুরস্কৃত হয়। আর এ পাওয়ার স্টেশনের আদলেই পটুয়াখালীতে তৈরি হবে ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন পাওয়ার প্ল্যান্ট।
নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি’র (এনডব্লিউপিজিসিএল) এমডি খোরশেদুল আলম বাংলানিউজকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে পরামর্শক নিয়োগ এবং ইপিসি (ইঞ্জিনিয়ারিং প্রকিউরমেন্ট অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন) ঠিকাদার নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রথম ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ২০১৮ সালকে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। চীনে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানির দ্বিতীয় বোর্ড সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু হলে ইন্দোনেশিয়া থেকে জাহাজের মাধ্যমে কয়লা আসবে পটুয়াখালীর আন্ধারমানিক চ্যানেলে। সেখান থেকে ঢাকনাযুক্ত কনভেয়ার বেল্টের মাধ্যমে পৌঁছে যাবে কোল ইয়ার্ডে। কোল ইয়ার্ডটির ওপরে থাকবে কংক্রিটের শেড, যা পরিবেশন দূষণ রোধ করবে।
বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে ৪৭০০ থেকে ৫০০০ কিলোক্যালোরি তাপমান ক্ষমতার কয়লা ব্যবহার করা হবে। প্রথম ইউনিটটির ৬ মাসের ব্যবধানে উৎপাদনে আসবে দ্বিতীয় ইউনিট। আর সে লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বোর্ড সভায়।
বৈঠকে সার্বিক অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করা হয় বলেও জানান খোরশেদুল আলম।
চীনের রাষ্ট্রীয় কোম্পানি সিএমসির সঙ্গে যৌথ মালিকানায় নির্মাণ করা হবে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি। যৌথ কোম্পানিটির নামকরণ করা হয়েছে- ‘বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি’।
সমান শেয়ারে গঠিত এই কোম্পানির বোর্ডে বাংলাদেশের তিনজন ও চীন সরকারের মনোনীত তিনজন পরিচালক রয়েছেন। পাঁচ বছর পর পর পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান পরিবর্তিত হবেন।
প্রথম দফায় চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন বাংলাদেশের বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মনোয়ার ইসলাম।
ইতোমধ্যে, প্রিফিজিবিলিটি স্টাডি শেষ করেছে চীনা প্রতিষ্ঠান এফইডিআই। বাংলাদেশের পরিবেশ অধিদফতরের শর্তসাপেক্ষে ছাড়পত্র নিয়ে পটুয়াখালীতে এক হাজার একর ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
এত কম সময়ে আর কোনো কোম্পানি এত বেশি অগ্রগতি দেখাতে পারেনি বলে বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মনোয়ার ইসলাম বাংলানিউজকে জানিয়েছেন।
তেল দিয়ে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ পড়ে ১৮ থেকে ২০ টাকার মতো, যে কারণে দফায় দফায় বিদুতের দাম বাড়িয়েও লোকসান ঠেকানো যাচ্ছে না।
অন্যদিকে, কয়লার বর্তমান দর অব্যাহত থাকলে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে প্রতি ইউনিটের বিদ্যুৎয়ের জন্য ব্যয় হবে ৫ টাকার কম; যার ফলে প্রতি বছরে ৩৫ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হবে বলে দাবি করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৫