খুলনা: পড়ন্ত বিকেলে আকাশে দারুণ সব রং খেলা করছে। ছোট-বড় কত রকম পাখি দলবেঁধে মহানন্দে ফিরছে নীড়ে।
কাছে-দূরের গাছপালায় হাওয়ার নাচন। বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রের চারপাশের পরিবেশ কথা বলছিলো এভাবেই। এর মাঝেই একদল শিশু-কিশোর মেতেছে খেলায়। এই বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রটি যেনো তাদের খেলার মাঠ! এসব শিশু-কিশোর নিজেও জানে না কতটা ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে খেলছে তারা।
শনিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রূপসা শিল্পাঞ্চলের ৩১/১১ কেভি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-৪ এ গিয়ে এ দৃশ্য দেখা যায়।
রূপসার বীর শ্রেষ্ঠ রুহুল আমীন সড়কের পশ্চিম পাশে রূপসা নদীর পাড়ে ওয়েস্টার্ন জোন পাওয়ার ডিস্টিবিউশন কোম্পানির (ওজোপাডিকো) অধীনে এ কেন্দ্রটি পরিচালিত হচ্ছে।
অভিযোগ রয়েছে, কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে এ কেন্দ্রটি বছরের পর বছর অরক্ষিত। নাম সর্বস্ব একটি গেট থাকলেও তা অনেক আগেই নষ্ট হয়ে গেছে। কোথাও নেই সীমানাপ্রাচীর। নেই কোনো প্রহরীও।
অরক্ষিত এ উপকেন্দ্র ঘিরে মাঠের মতো খেলছে রনি, মনি ও রাজুসহ কয়েকজন। ওদের সবার বয়স ১০ বছরের মধ্যে।
কথা বললে তারা জানায়, বিদ্যুৎ কেন্দ্র ওদের খেলার মাঠ। এখানে ওরা প্রতিদিন ২০-২৫ জন মিলে খেলাধুলা করে।
কোদাল নিয়ে হা-ডু-ডু’র ঘর (কোর্ট) কাটা অবস্থায় কথা হয় মিজান ও রসুলের সঙ্গে। তারা জানায়, কাল থেকে এখানে হা-ডু-ডু খেলা শুরু হবে।
এখানে খেলা ঝুঁকিপূর্ণ তা জানে কিনা জানতে চাইলে এসব শিশুরা বলে, বিদ্যুৎ আমাগে ধরে না। আমরা বারো মাস এহানে খেলি। কেউ কিছু কয়ও না।
এসব শিশু-কিশোরদের অধিকাংশ বস্তি এলাকার বাসিন্দা। এলাকার সচেতন মহল মনে করছে, এ ধরনের অরক্ষিত উপকেন্দ্রগুলোতে যে কোনো সময় নাশকতাকারীরা হামলা চালাতে পারে। এছাড়া খেলতে খেলতে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে শিশুরা।
এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা আল মাহমুদ প্রিন্স বাংলানিউজকে বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বছরের পর বছর এ কেন্দ্রটি অরক্ষিত রেখেছে। যার কারণে শিশুরা সুযোগ পেয়ে খেলার মাঠ বানিয়েছে। এদের কিছু হলে তার দায় নেবে কে।
অরক্ষিত এ বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রটি সম্পর্কে ওয়েস্টার্ন জোন পাওয়ার ডিস্টিবিউশন কোম্পানির (ওজোপাডিকো) নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল আজীজ বাংলানিউজকে বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জানা আছে। ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮০৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৩, ২০১৫
এমআরএম/এএ