ঢাকা: পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) প্রায় সাত লাখ গ্রাহক বিতরণ ট্রান্সফরমারের লাখাধিকই ওভারলোডেড। মোট বিতরণ ট্রান্সফরমারের ১০ দশমিক ৩৫ শতাংশ ওভারলোডেড হওয়ায় সিস্টেম লসের পাশাপাশি প্রায়ই ঘটছে নানা রকম দুর্ঘটনা।
এসব সমস্যা নিরসনে ৭০ হাজার বিতরণ ট্রান্সফরমার ওভারলোড মুক্ত করার পরিকল্পনা নিয়েছে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)। এসব অধিক ওভারলোডেড ট্রান্সফরমার খুলে নিয়ে কম ভোল্টেজ এলাকায় প্রতিস্থাপন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আরইবি কর্তৃপক্ষ বলছে, পবিস আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সেবা দিতেও হিমশিম খাচ্ছে তারা। আর ট্রান্সফরমার ওভারলোডেড হওয়ার কারণে নতুন নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়াও সম্ভব হচ্ছে না। এমন অবস্থায় ট্রান্সফরমার ওভারলোড মুক্ত করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে আরইবি’র প্রধান প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম ভূইয়া বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমানে সাত লাখ বিতরণ ট্রান্সফরমারের মধ্যে এক লাখের বেশি ওভারলোডেড। এর কারণে প্রতিনিয়তই দুর্ঘটনা ঝুঁকি বাড়ছে। গ্রাম পর্যায়ে অধিক পরিমাণে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ায় বিতরণ ট্রান্সফরমার ওভারলোডেড হচ্ছে। এই সমস্যা উত্তোরণে ৭০ হাজার ওভারলোডেড ট্রান্সফরমারকে প্রতিস্থাপন করবো।
তবে কোনো ওভারলোডেড ট্রান্সফরমার ফেলে না দিয়ে তা সারাদেশে চাহিদা অনুযায়ী ব্যবহার করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ট্রান্সফরমার ওভারলোডেড একটি চলমান প্রক্রিয়া। এটা একদিকে চলতে থাকবে, অন্যদিকে ওভারলোড মুক্ত করা হবে।
সূত্র জানায়, পল্লী বিদ্যুতায়ন কার্যক্রমের আওতায় ৭০ হাজার ওভারলোডেড বিতরণ ট্রান্সফরমার প্রতিস্থাপন প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ২৪ কোটি টাকা। জানুয়ারি ২০১৬ থেকে ডিসেম্বর ২০১৭ মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বাপবিবো)। বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের ৬১টি জেলার ৭৭টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি (পবিস) এলাকায় তা বাস্তবায়ন করবে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ওভারলোডেড বিতরণ ট্রান্সফরমার প্রতিস্থাপনের পাশাপাশি সিস্টেম লস কমানোসহ বর্ধিত বিদ্যুতের চাহিদা মেটানো হবে। পবিসগুলোর অপারেশনাল ও আর্থিক অবস্থার উন্নতিও করা হবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, জুন ২০১৫ সাল পর্যন্ত ১ কোটি ১৭ লাখ গ্রাহককে বিদ্যুৎ সেবা দিয়েছে পবিস। এই পর্যন্ত ৭ লাখ বিতরণ ট্রান্সফরমার স্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু এই সংখ্যা যথেষ্ট নয়। মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটায় বিদ্যুতের নানা ধরণের ব্যবহার বেড়েই চলেছে। প্রতিটি আবাসিক গ্রাহকের লোড ১ কিলোওয়াট অতিক্রম করেছে। অতিরিক্ত গ্রাহক সংযোগের কারণে ট্রান্সফরমার ওভারলোড হচ্ছে।
এসব বিবেচনায় নিয়ে এ প্রকল্পের আওতায় চার হাজারটি ওয়ান ফেজ ১০ কেভিএ, ১৯ হাজারটি ওয়ান ফেজ ১৫ কেভিএ, ২৩ হাজারটি ওয়ান ফেজ ২৫ কেভিএ ও ১০ হাজারটি ওয়ান ফেজ সাড়ে ৩৭ কেভিএ বিতরণ ট্রান্সফরমার কেনা হবে। এছাড়া ৫ হাজার ওয়ান ফেজ ৫০ কেভিএ, দুই হাজার ওয়ান ফেজ ৭৫ কেভিএ, পাঁচ হাজার থ্রি ফেজ ১০০ কেভিএ ও দুই হাজারটি থ্রি ফেজ ২০০ কেভিএ বিতরণ ট্রান্সফরমারও কেনা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৭১১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০১৬
এমআইএস/জেপি/এইচএ/