ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

৫ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘কয়লা বিষয়ক কোর্স’ চালুর উদ্যোগ

ইসমাইল হোসেন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৬
৫ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘কয়লা বিষয়ক কোর্স’ চালুর উদ্যোগ

ঢাকা: সুন্দরবনের কাছে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে দেশের প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কয়লা বিষয়ক স্বতন্ত্র কোর্স চালুর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
 
কয়লা নিয়ে গবেষণা, উৎপাদন এবং এর বহুমাত্রিক ব্যবহারের জন্য বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়সহ (বুয়েট) পাঁচটি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘কোল বেইজড পাওয়ার প্ল্যান্ট’ বা ‘কোল মাইনিং’ সম্পর্কিত কোর্স চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।


 
এই কোর্স চালুর ফলে গ্যাস সংকটের সময়ে কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনসহ নানামুখী ব্যবহার সম্ভব হবে বলে মনে করছে বিদ্যুৎ বিভাগ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
 
বর্তমানে দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া ও ফুলবাড়ি, জয়পুরহাটের দীঘিপাড়া, রংপুরের খালাশপীর এবং বগুড়ার কুচমা’য় কয়লাক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে।
 
জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের হিসেবে, এসব ক্ষেত্রে প্রায় তিন হাজার ৩শ মিলিয়ন টন উন্নতমানের কয়লা মজুদ রয়েছে। বর্তমানে কেবল বড়পুকুরিয়া থেকে বছরে এক মিলিয়ন টন কয়লা উত্তোলন করা হচ্ছে। নানা জটিলতায় ঝুলে রয়েছে বাকি চারটি ক্ষেত্র থেকে কয়লা উত্তোলন।
 
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, দেশে কয়লা খনির সম্ভাবনা এবং কয়লা উৎপাদন ও ব্যবহার নিয়ে গবেষণার জন্য স্বতন্ত্র কোর্স চালুর উদ্যোগ নিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
 
বর্তমানে ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিন্ন নামে ভূ-তত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বা এ সম্পর্কিত কোর্সের মধ্যে কয়লা নিয়ে পড়ানো হয়। তবে আলাদাভাবে কোনো কোর্স নেই।
 
বুয়েট ছাড়াও এই কোর্স চালু হওয়া অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো- চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট), খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট), রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) এবং ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েট)।
 
বিদ্যুৎ বিভাগ জানায়, দেশে ক্রমেই গ্যাস ফুরিয়ে আসছে। কয়লা উত্তোলনে এখনই পদক্ষেপ নিতে না পারলে সংকট দেখা দিতে পারে। দেশীয় ক্ষেত্রগুলো থেকে কয়লা উৎপাদন বাড়াতে কার্যকরী উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।
 
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) ২০১০ সালের মাস্টার প্ল্যানে বলা হয়, ২০৩০ সালে ৪০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা। ওই সময়ে কয়লা দিয়ে উৎপাদন করা হবে ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। এর মধ্যে দেশীয় কয়লা দিয়ে ১২ হাজার এবং আমদানি করা কয়লা দিয়ে আট হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। দেশীয় কয়লা দিয়ে যে ১২ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা বলা হয়েছে, তাতে বছরে প্রায় ৩৬ মিলিয়ন টন কয়লা প্রয়োজন।
 
বিদ্যুৎ বিভাগের উপসচিব এ কে এম মোস্তফা কামাল বাংলানিউজকে বলেন, এখন আমাদের মূল লক্ষ্য কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। এজন্য বিদ্যুৎ বিভাগ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়লা সম্পর্কিত স্বতন্ত্র কোর্স চালুকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
 
এই কোর্স চালুর জন্য আগামী ১৩ অক্টোবর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের সভাপতিত্বে সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এতে শিক্ষা ও বিদ্যুৎ সচিব, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন চেয়ারম্যান, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের ডাকা হয়েছে।
 
এছাড়াও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক, ইজিসিবির এমডি, আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানির এমডি, নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির এমডি, রুরাল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের এমডি, কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির এমডি, বাংলাদেশ ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেডের এমডিকে সভায় ডাকা হয়েছে।
 
সভায় কয়লা বিষয়ক কোর্স চালুর রূপরেখা নির্দিষ্ট করা হবে বলে জানান উপসচিব মোস্তফা কামাল।  
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৬
এমআইএইচ/এসএনএস

** উন্নত কয়লা মজুদ রেখেই আমদানির পরিকল্পনা!

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।