ঢাকা: প্রকল্প অনুমোদনের আগেই রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে রাশিয়ার ঠিকাদারকে আরও ৪০০ কোটি টাকা দিচ্ছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়।
অননুমোদিত প্রকল্পের থোক বরাদ্দ হিসেবে আরও ৫০ মিলিয়ন ডলার (প্রতি ডলার ৮০ টাকা হিসাবে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা) সরকারি কোষাগার থেকে বরাদ্দ দেওয়াসহ অর্থ অবমুক্তির প্রস্তাবে বুধবার (০৯ নভেম্বর) সম্মতি দিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
এর আগে ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন (মূল পর্যায়)’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়কে আরও ৪০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়। যা রাশিয়ার ঠিকাদারকে দেওয়া হবে।
ফলে প্রকল্প অনুমোদনের আগেই মোট ৮০০ কোটি টাকা পাচ্ছে রাশিয়ার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
পরিকল্পনা বিভাগের সচিব তারিক-উল-ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ‘রাশিয়ার ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তি অনুসারে চুক্তি মূল্যের ১০ শতাংশ অর্থ অগ্রিম পরিশোধ করতে হবে। মন্ত্রী এর অনুমোদন দিয়েছেন। তবে এখনও প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়নি। আশা করছি, আগামীতে একনেক সভায় প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হবে’।
পাবনা জেলার রুপপুরে পদ্মাপাড়ে ১ হাজার ৬২ একর জায়গায় রাশান ফেডারেশনের সহযোগিতায় নির্মিত হবে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি। দেশের সবচেয়ে ব্যয়বহুল এ প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে চলছে দেয়াল নির্মাণসহ নানা অবকাঠামোগত কাজ। মাটি ভরাটের কাজও শেষ হয়েছে প্রায় ৯০ শতাংশ।
কমিশন সূত্র জানায়, এবার শুরু হবে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে মূল প্ল্যান্ট নির্মাণের কাজ। ৫০ বছর অর্থনৈতিক জীবন বিবেচনায় দু’টি ইউনিটে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। বিদ্যুৎ খরচ পড়বে ইউনিট প্রতি মাত্র ৩ টাকা। ২০১৭ সালেই প্রকল্পের মূল নির্মাণ কাজ শুরু হবে। প্রতিটি ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াটের প্রথম ইউনিটটি ২০২৩ সালে ও দ্বিতীয়টি ২০২৪ সালে চালু হবে।
পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের মূল নির্মাণ প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।
সব মিলিয়ে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ (মূল পর্যায়) প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে এক লাখ ১৩ হাজার ১৩৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৯১ হাজার কোটি টাকা ঋণ হিসেবে দেবে রাশিয়া।
সংশ্লিষ্টদের নিয়ে পিইসি সভা শেষে প্রকল্পটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য একনেক সভায় উপস্থাপন করা হবে।
মূল ইউনিট নির্মাণের পাশাপাশি দৈনিক ১ হাজার ৭৫০ কিউবেক মিটার পানি এবং বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য ৮১ মিলিয়ন কিউবেক মিটার পানির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও এ প্রকল্পের আওতায় করা হবে। নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎ প্ল্যান্টে ৫০ বছর ধরে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে ফুয়েল এবং ম্যানেজমেন্টও এর আওতাভুক্ত।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০১৬
এমআইএস/এএসআর