ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

লোকসানে আরইবি, গ্রাহকের জামানত ভাঙিয়ে বেতন

স্পেশাল করেপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫৪ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১৭
লোকসানে আরইবি, গ্রাহকের জামানত ভাঙিয়ে বেতন লোকসানে আরইবি, গ্রাহকের জামানত ভাঙিয়ে বেতন

ঢাকা: ধারণার চেয়ে প্রায় বিশ শতাংশ বেশি চাহিদা বেড়েছে। যে কারণে কোথাও কোথাও লোডশেডিং হচ্ছে। ২০১৮ সালের জুন নাগাদ নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হবে।

শনিবার (১৫ জুলাই) পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) জেনারেল ম্যানেজার সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমন আশার কথা শোনালেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
 
প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যের আগে নওগাঁ, ময়মনসিংহ, যশোর, সিরাজগঞ্জ, দিনাজপুর ও রাউজান পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজাররা তাদের এলাকায় লোডশেডিং হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন।

নওগাঁর জিএম বলেন. ওই অঞ্চলে পিকআওয়ারে ৩৭০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে গতকাল (১৪ জুলাই) সরবরাহ করা হয়েছে ২৪০ মেগাওয়াট।
 
এ সময় প্রতিমন্ত্রী তাকে প্রশ্ন করেন, আপনার নেওয়ার সক্ষমতা ঠিক আছে কি না। জবাবে নওগাঁর জিএম বলেন, আমার এলাকায় অনেক বেশিলোড নেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে। ৩৬৭ মেগাওয়াট রিসিভ করার রেকর্ড রয়েছে। কিন্তু আমরা বিদ্যুৎ চাইলে উৎপাদনের ঘাটতি রয়েছে বলে জানানো হয়।
 
আরও কয়েকজন জিএম লোডশেডিংয়ের অভিযোগ করলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা বিদ্যুতের চাহিদার যে প্রজেকশন তৈরি করেছিলাম, তার চেয়ে শহরে ২০ শতাংশ আর গ্রামে ১৫ শতাংশ চাহিদা বেড়েছে। যে কারণে উৎপাদন বাড়লেও কোথাও কোথাও ঘাটতি রয়েছে। এ ছাড়া গ্যাসের ঘাটতির কারণে বর্তমানে ১৬’শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হচ্ছে।
 
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখন মাথাপিছু বিদ্যুতের ব্যবহার হচ্ছে প্রায় ৪’শ কিলোওয়াট। বাংলাদেশ যখন উন্নত বিশ্বে প্রবেশ করবে তখন প্রায় ১০ হাজার কিলোওয়াট আওয়ার বিদ্যুতের প্রয়োজন পড়বে। সে ভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডকে।
 
আরইবি চেয়ারম্যান স্বাগত বক্তব্যে বলেন, সেপ্টেম্বর ২০১৬ হতে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ৮৮০ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। এ ঘাটতি মেটাতে গ্রাহকের জামানত, কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিল ভেঙে বেতন –ভাতা দেওয়া হচ্ছে।
 
জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আরইবি গঠন করাই হয়েছে জনগণকে সেবা দেওয়ার জন্য। মুনাফা করতে হবে এ কথা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলেন। আপনারা প্রজেক্ট নিয়ে আসেন আমরা অর্থ দিব।
 
বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে বলেন, আমরা এখন ভর্তুকি দিচ্ছি এটা হচ্ছে বিনিয়োগ। আমরা যখন মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হব, তখন মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে তখন তারা দশ টাকা দিয়ে বিদ্যুৎ কিনতে পারবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ড. আহমদ কায়কাউস বলনে, ঘুষ-দুর্নীতি আগের তুলনায় কমেছে এ কথা ঠিক। তবে সেবার মান পুরোপুরি উন্নত হয়নি। বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে লোক মারা যাচ্ছে আমরা এর দায় এড়াতে পারি না।
 
সচিব বলেন, মানুষ আমাদের কাছে আসছে তার সংযোগের খোঁজ নিতে। আমরা যখন খোঁজ নিচ্ছি তখন বলা হচ্ছে ওই এলাকা প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে দুই তিন মাসের মধ্যে হয়ে যাবে। এই কথাটাই সাধারণ মানুষকে আপনারা যদি সুন্দর করে বুঝিয়ে বলেন, তাহলে আমাদের কাছে আসে না। এখানে সেবায় অনেক ঘাটতি রয়েছে।
 
পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, কোথায় সমস্যা দেখা দিলে গ্রাহকরা অভিযোগ না দেওয়া পর্যন্ত কোনো সমস্যার প্রতিকার হচ্ছে না। এখান থেকে বের হয়ে আসতে হবে আরইবিকে।
 
গ্রামাঞ্চলের বিদ্যুৎ বিতরণের দায়িত্বে থাকা আরইবির বর্তমান গ্রাহক সংখ্যা ১ কোটি ৯২ লাখ। সরকার ২০২১ সালে শতভাগ বিদ্যুৎ সংযোগের পরিকল্পনা গ্রহণ করলেও আরইবি ২০১৮ সালের মধ্যেই শতভাগ করতে চায়। সে হিসেবে ব্যাপক আকারে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া অব্যাহত রেখেছে। বিগত ২ বছরে ৭৩ লাখ সংযোগ প্রদান করে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৯ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১৭
এসআই/এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।