ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

আরও ১১শ’ ৬৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দিতে চায় ত্রিপুরা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫১ ঘণ্টা, আগস্ট ১, ২০১৭
আরও ১১শ’ ৬৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দিতে চায় ত্রিপুরা

ঢাকা:  ত্রিপুরার পালাটানা বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে আরও ১১শ’ ৬৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ বাংলাদেশকে দিতে চায় ওটিপিসি (ওএনজিসি ত্রিপুরা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড)। যার প্রথম ধাপে আসবে ৬৫ মেগাওয়াট, ২০১৮ সালে ৭শ’ এবং ২০১৯ সালে আরও ৪শ’ মেগাওয়াট।

পালাটানা বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বর্তমানে ১শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কিনছে বাংলাদেশ।  ভারতীয় রাষ্ট্রীয় কোম্পানি এনটিপিসি’র (ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার কোম্পানি) মাধ্যমে এ বিদ্যুৎ কুমিল্লা সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের গ্রিডে যোগ হচ্ছে।


 
আর নতুন করে ১১শ’ ৬৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পালাটানা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদক রাষ্ট্রীয় কোম্পানি ওটিপিসি নিজেই দেওয়ার জন্য আগ্রহ দেখিয়েছে। এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে ওটিপিসি সূত্র জানিয়েছে।
 
ওটিপিসির প্রস্তাবের পর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এ বিদ্যুতের বায়ার যেহেতু বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি), তাই পিডিবির বরাবরে চিঠি দিতে হবে। মন্ত্রণালয়ের পরামর্শে ওটিপিসি আবারও পিডিবির চেয়ারম্যান বরাবর আগ্রহপত্র দিয়েছে বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন ওটিপিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সত্যজিৎ গাঙ্গুলী।
 
ওটিপিসির এ প্রস্তাবটি এখন যাচাই-বাছাই চলছে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র।
 
ওটিপিসি তাদের প্রস্তাবে দর উল্লেখ না করলেও বর্তমানে যে দরে ১শ’ মেগাওয়াট দিচ্ছে একই দরের বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছে বলে জানা গেছে। বর্তমানে সাড়ে পাঁচ রুপি দরে বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ দিচ্ছে ওটিপিসি।
 
ত্রিপুরার পালাটানা গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশ অংশে ২৭ দশমিক ৮ কি.মি. ও ভারতীয় অংশে ২৪ কি.মি. সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। লাইনটি কুমিল্লার কসবা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।
 
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ’র (পিজিসিবি) জনসংযোগ কর্মকর্তা বদরুদ্দোজা সুমন বাংলানিউজকে জানান, আমাদের বর্তমান লাইনটি দিয়ে সর্বোচ্চ ৫শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা সম্ভব। আর এইচভিডিসি (উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন গ্রিড উপকেন্দ্র) যুক্ত করা গেলে ৭শ’ মেগাওয়াট পর্যন্ত লোড নিতে পারবে। এইচভিডিসি যোগ করতে হলে কাজ শুরুর পর ২ বছর সময় প্রয়োজন হবে।

ভারত থেকে আমদানি করা ৫শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুতের মধ্যে ২শ’ ৫০ মেগাওয়াট ইউনিট প্রতি ২.৫০ টাকা ও ২শ’ ৫০ মেগাওয়াট ইউনিটপ্রতি ৪.৫০ টাকা দরে এবং পালাটানা থেকে ১শ’ মেগাওয়াট সাড়ে ৫ রুপি দরে কিনছে বাংলাদেশ।

পালাটানা যখন বিদ্যুৎ দেবে, বাংলাদেশ তখনই টাকা পরিশোধ করবে। এছাড়া আর কোনো চার্জ নেই। অন্যদিকে ভেড়ামারা দিয়ে ভারত থেকে বর্তমানে যে ৫শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হচ্ছে, সেখানে বিদ্যুৎ না কিনলেও ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হচ্ছে বাংলাদেশকে।
 
বড় বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো যথাসময়ে আসতে পারছে না, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর অগ্রগতি সন্তোষজনক নয়। আবার আইপিপি নিয়ে বসে রয়েছে সরকারি দলের অনেক লোক। পিডিবি না পারছে তাদেরকে দিয়ে করাতে, না পারছে লাইসেন্স বাতিল করে অন্যকে দিতে।
 
উৎপাদন যখন পরিকল্পনা অনুযায়ী হচ্ছে না, অন্যদিকে লাইন সম্প্রসারণ দ্রুতই হচ্ছে, সে কারণে ফেলে আসা লোডশেডিং আবার পিডিবির মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঠিক সে সময়ে ওটিপিসির প্রস্তাবকে স্বস্তির খবর হিসেবে দেখছে পিডিবি।
 
এতে একদিকে যেমন বিনিয়োগের প্রয়োজন হচ্ছে না, সেইসঙ্গে কোনো সময়ের প্রয়োজন হচ্ছে না। বলা চলে, রেডি বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ পাচ্ছে বাংলাদেশ। এরকম একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে (১৩২০ মেগাওয়াট) প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা প্রাক্কলন করা হয়েছে।
 
পালাটানা বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি গ্যাসভিত্তিক হওয়ায় এখানকার বিদ্যুতের দাম অনেক কম। সে কারণে অন্যকোনো বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চেয়ে এখান থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করা বাংলাদেশের জন্য লাভজনক মনে করছে সংশ্লিষ্টরা।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ০১, ২০১৭
এসআই/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।