ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

চালু হচ্ছে উপকেন্দ্র: ঘুচবে পাহাড়ে বিদ্যুতের সমস্যা

অপু দত্ত, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩, ২০১৮
চালু হচ্ছে উপকেন্দ্র: ঘুচবে পাহাড়ে বিদ্যুতের সমস্যা খাগড়াছড়ির ঠাকুরছড়ায় নির্মাণাধীন ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্রের কাজ জোরেশোরে এগিয়ে চলেছে। ছবি-বাংলানিউজ

খাগড়াছড়ি: অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সমাধান হতে যাচ্ছে খাগড়াছড়িবাসীর বিদ্যুৎ সমস্যা। অচিরেই জেলা সদরের ঠাকুরছড়া এলাকায় নির্মাণাধীন ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্র্র চালু হতে যাচ্ছে। উপকেন্দ্রটি চালু হলে খাগড়াছড়িসহ রাঙ্গামাটির ৩টি উপজেলা বিদ্যুৎ সুবিধা ভোগ করবে।

এর আগে ২০১৩ সালে খাগড়াছড়ি সফরকালে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের সাথে গ্রিড উপকেন্দ্র্রটির নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৩ সালে উপকেন্দ্র্রটির নির্মাণকাজ শুরু করার কথা থাকলেও কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের শুরুর দিকে।

কয়েক দফা সময় বাড়িয়ে ৫ একর জায়গার উপর এই উপকেন্দ্রটির নির্মাণকাজ এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে।

উপকেন্দ্রটির নিয়ন্ত্রণ কক্ষসহ অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণের কাজ চলমান থাকলেও টাওয়ার, ট্রান্সফরমার ও অন্যান্য সরঞ্জাম স্থাপন এবং সঞ্চালন লাইনে সংযোগ দেওয়াসহ গুরুত্বপূর্ণ কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। ১৩ কেভি সঞ্চালন লাইনটি চট্টগ্রাম থেকে খাগড়াছড়ি পর্যন্ত প্রায় ৮০ কিলোমিটার। চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা হয়ে রাঙ্গামাটির কাপ্তাই’র চন্দ্রঘোনা, মানিকছড়ি ও খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলা হয়ে ঠাকুরছড়ায় যুক্ত হবে।

এদিকে ১৩২ কেভি গ্রিড নেটওয়ার্ক ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট’র প্রকল্প পরিচালক ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোঃ শফিউল্লাহ এক বিজ্ঞপ্তিতে আগামী ৩ এপ্রিল গ্রিড সাবস্টেশনের সঞ্চালন লাইন চালুর কথা বলেছেন। মঙ্গলবার সকালে চন্দ্রঘোনা সাব স্টেশন থেকে খাগড়াছড়ির ঠাকুরছড়ার উপকেন্দ্র পর্যন্ত সঞ্চালন লাইনে বিদ্যুৎ সঞ্চালন পরিক্ষামূলকভাবে  চালু করা হবে। কোনো ত্রুটি ধরা না পড়লে উপকেন্দ্রটিতে স্থাপন করা সরঞ্জাম পরীক্ষা করা হবে। এরপর খাগড়াছড়ি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ হয়ে বিদ্যুৎ পৌঁছে যাবে ঘরে ঘরে।  

দেশের দীর্ঘতম বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের দৈর্ঘ্য প্রায় ১শ ৫ কিলোমিটার। আশির দশকে অনেকটা দায়সারাভাবে চট্টগ্রামের হাটহাজারী থেকে টানানো লাইন দিয়েই চলছে খাগড়াছড়ির ৮ উপজেলা ছাড়াও পাশের জেলা রাঙ্গামাটির নানিয়ারচর, বাঘাইছড়ি ও লংগদু উপজেলার বিদ্যুৎ সরবরাহ। বছরের পর বছর বাড়িঘর থেকে শুরু করে ব্যবসা-বাণিজ্যস্থল, অফিস-আদালত, হাসপাতাল সবক্ষেত্রে বিদ্যুতের চরম ভোগান্তিতে অতিষ্ঠ এই জেলার মানুষ উপকেন্দ্রটির জন্য অপেক্ষায় ছিলেন।

খাগড়াছড়ি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: আবু জাফর বলেন, দীর্ঘ বছর ধরে খাগড়াছড়িসহ রাঙ্গামাটির কয়েকটা উপজেলার মানুষ যে বিদ্যুৎ নিয়ে চরম ভোগান্তিতে ছিল এটা নিঃসন্দেহে বলা যায়। বিশেষ করা বর্ষাকালে বিদ্যুতের নিদারুণ বিপর্যয় ঘটতো। তবে এই সমস্যার সমাধান হচ্ছে। এখন উপকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ পেলে ব্যবসা বাণিজ্যসহ সবক্ষেত্রে আমূল ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। সব ঠিক থাকলে আমাগী শুক্রবারের মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।

এই বিষয়ে ১৩২ কেভি গ্রিড নেটওয়ার্ক ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট’র প্রকল্প পরিচালক ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোঃ শফিউল্লাহ জানান, দুর্গম এলাকার বৈদ্যুতিক পিলার স্থাপনে জটিলতাসহ পাহাড় ধসের কারণে মালামাল পরিবহনসহ নানা কারণে একটু বিলম্ব হয়েছে। অবশেষে আমরা কাজ প্রায় শেষ পর্যায় নিয়ে আসতে পেরে খুশি। মঙ্গলবার (০৩ এপ্রিল) সঞ্চালন লাইনটি চালু করবো। সবকিছু ঠিক থাকে তাহলে অচিরেই উপকেন্দ্র থেকে গ্রাহকরা সুবিধাভোগ করবেন।

উপকেন্দ্রটি চালু হলে খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটির জনগণের ব্যবসা-বাণিজ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা ও কৃষিসহ বিভিন্ন খাত এবং আর্থ-সামাজিক খাতে উন্নয়ন ঘটবে। স্থানীয়দের প্রত্যাশা জেলার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গ্রিড উপকেন্দ্রটি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯১৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০১৮
জেএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।