ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

উৎপাদনে যাচ্ছে বেলারুশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০১৯
উৎপাদনে যাচ্ছে বেলারুশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র গোলটেবিল বৈঠক।

ঢাকা: ২০২০ সালের জানুয়ারিতে উৎপাদনে যাচ্ছে পূর্ব ইউরোপের দেশ বেলারুশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। বহু বছর পর ইউরোপে চালু হতে যাচ্ছে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। যে কারণে এ বিদ্যুৎকেন্দ্রকে ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলে রয়েছে ব্যাপক কৌতূহল।

প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রতিটি ধাপে জনগণ ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে বেলারুশ কর্তৃপক্ষ অব্যাহতভাবে প্রকল্পের উন্মুক্ততা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণের প্রচেষ্টা চালিয়েছে।

এমনই অভিমত ব্যক্ত করেন ‘পারমাণবিক শক্তিতে জনগণের নিয়ন্ত্রণ: বেলারুশ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের “জিরো ব্যাকগ্রাউন্ড” পরিমাপ এবং ডকুমেন্টের আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ মুল্যায়ন’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা।

সম্প্রতি ২৪তম বেলারুশ এনার্জি ও ইকোলজি ফোরামের অংশ হিসেবে বেলারুশে আয়োজিত এ গোলটেবিল বৈঠকটিতে অংশ নেন বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিবেশ সংস্থা, বেলারুশ এনার্জি মন্ত্রণালয় এবং বেলারুশ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রতিনিধিরা।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশন-রোসাটমের এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।

বেলারুশ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাংলাদেশে বাস্তবায়নাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি রেফারেন্স প্রকল্প হিসেবে বিবেচিত। রুশ রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশন রোসাটমের প্রকৌশল শাখা এতমস্ত্রয়এক্সপোর্ট জেনারেল কন্ট্র্যাক্টর হিসেবে টার্ন-কি ভিত্তিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।

পরিবেশ বিশ্লেষণ এবং ডাটা সংগ্রহের জন্য বেলারুশ পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প কর্তৃপক্ষ নিয়মিতভাবে স্থানীয় জনগণ ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করে আসছে। চলতি বছরের আগস্ট মাসে আন্তর্জাতিক পরিবেশ এনজিও গ্রিন ক্রস, পরিবেশ নিরাপত্তা সংক্রান্ত এজেন্সি আলফা- এক্স৯১, বিজ্ঞান ও শিক্ষা সংস্থা এনার্জি অ্যান্ড ইকোলজিসহ বিভিন্ন পাবলিক ও বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান বেলারুশের অস্ট্রোভেটস অঞ্চলে অবস্থিত পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পটির পাশের এলাকার ‘জিরো ব্যাকগ্রাউন্ড’ পরিমাপ করে। বায়ু, মাটি, পানি, গাছপালা ইত্যাদির নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার মাধ্যমে এ পরিমাপ কার্যক্রম চালানো হয়।

সেপ্টেম্বর মাসে ৮টি দেশের (লিথুনিয়া, কাজাখস্তান, হাঙ্গেরি, অস্ট্রিয়া, ইতালি, বেলারুশ, ইউক্রেন এবং রাশিয়া) পরমাণু বিশেষজ্ঞরা বেলারুশ প্রকল্পের পরিবেশগত নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিভিন্ন ডকুমেন্ট মূল্যায়ন করেন।

বেলারুশ এনার্জি মন্ত্রণালয়ের পারমাণবিক শক্তি বিভাগের উপ-পরিচালক লিলিয়া ডুলিনেটস বলেন, ‘পরিবেশ নিরাপত্তা সংক্রান্ত ডকুমেন্টের আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ মূল্যায়ন এবং আন্তর্জাতিক টিম দ্বারা জিরো ব্যাকগ্রাউন্ড পরিমাপের ফলাফল এসপু কনভেনশন অনুযায়ী আমাদের বেলারুশ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকল্প-পরবর্তী বিশ্লেষণের ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে। ’

ভিয়েনা ইন্টারন্যাশনাল নিউক্লিয়ার কম্পিটেন্স সেন্টারের প্রতিনিধি ইয়ানকো ইয়ানেভ বলেন, ‘সামগ্রিকভাবে এটি প্রকল্পের মানের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইন্ডিকেটর এবং একই সঙ্গে পারমাণবিক স্থাপনার নিরাপদ পরিচালনা, আন্তর্জাতিক এবং আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) নীতি অনুসরণে বেলারুশের অঙ্গীকারের প্রতিফলন। ভবিষ্যতে বেলারুশ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনাকালীন রেডিও-ইকোলজি অবস্থা পর্যবেক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক এবং স্বাধীন বিশেষজ্ঞদের আমন্ত্রণ জানানো প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। ’

রুশ গ্রিন ক্রসের প্রেসিডেন্ট এবং রুশ ইকোলজিক্যাল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান অধ্যাপক সের্গেই বারানোভস্কি বলেন, ‘বেলারুশ প্রকল্পের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিভিন্ন ডকুমেন্ট বিশ্লেষনে জনমূল্যায়ন (পাবলিক এক্সপার্টাইজ) একটি কার্যকরি পদ্ধতি। এছাড়াও বিভিন্ন কর্মকান্ডের পরিবেশগত, আর্থ-সামাজিক এবং অন্যান্য প্রভাব বিচার কাজেও এটি কার্যকর। অধিকন্তু, জনসাধারণ এবং বিশেষজ্ঞদের মধ্যে উন্মুক্ততার পরিবেশ সৃষ্টিতে এটি একটি ভালো সুযোগ। ’

বাংলাদেশে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের মতো বেলারুশ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ৩+ প্রজন্মের ভিভিইআর-১২০০ রিয়্যাক্টর ভিত্তিক দু’টি ইউনিট থাকবে। ভিভিইআর-১২০০ বর্তমানে সর্বাধিক নিরাপদ হিসেবে বিবেচিত, যা সকল সমসাময়িক, আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড চাহিদা এবং আইএইএ সুপারিশ পূরণে সক্ষম।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০১৯
এসকে/এইচএডি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।