ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

গাজীপুরে অবৈধ গ্যাস সংযোগ, সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২০
গাজীপুরে অবৈধ গ্যাস সংযোগ, সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব

গাজীপুর: গাজীপুরে দিন দিন বাড়ছে ঝুঁকিপূর্ণভাবে নেওয়া তিতাস গ্যাসের অবৈধ সংযোগ।  এতে সরকার হারাচ্ছে রাজস্ব।

বাড়ছে প্রাণহানির ঝুঁকি। এসব অবৈধ সংযোগ থেকে স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে গাজীপুর তিতাসের কিছু অসাধু কর্মকর্তা প্রতি মাসে বিল তোলার নামে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। এর সঙ্গে জড়িত আছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা।

২০১০ সালের ১৩ জুলাই থেকে আবাসিক গ্যাস সংযোগ বন্ধ ঘোষণা করা হলেও স্থানীয় প্রভাবশালী ও দালালদের মাধ্যমে অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে নেওয়া হয় এসব সংযোগ।  

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুরে বিভিন্ন এলাকায় দিন দিন বেড়েই চলেছে অবৈধ গ্যাস সংযোগ। রাতের আঁধারে এসব সংযোগ দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে স্থানীয় দালাল ও তিতাসের অসাধু কর্মকর্তারা। অবৈধ সংযোগ দিতে এসব অসাধু কর্মকর্তারা ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত নেন। আর বিল হিসেবে যে টাকা তারা নিয়ে যান তার পুরোটাই যায় তাদের পকেটে। এতে সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে।  

মাঝে মধ্যে অভিযান চালিয়ে এসব অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আবার ঠিক করে দেন তিতাসের সেই কর্মকর্তারা। প্রতি মাসে ঠিকটাক মতো টাকা দিলে সংযোগ কখনো বিচ্ছিন্ন করা হয় না। তবে বকেয়া পড়লেই অভিযান চালিয়ে অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।  

রাতের আঁধারে অদক্ষ লোক দিয়ে অবৈধ গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়। এতে ঝুঁকিতে থাকে আশপাশের বাড়ির লোকজন। যে কোনো সময় অবৈধ গ্যাস সংযোগের কারণে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। এমনকি ঘটতে পারে প্রাণহানির ঘটনাও। গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস লিকেজ হয়েও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাও ঘটে।

এলাকাবাসীরা জানায়, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কোনাবাড়ী থানাধীন জরুন, বাইমাইল পেয়ারা বাগান, কুদ্দুছ নগর, কোনাবাড়ী হাউসিং, দেওয়ালিয়াবাড়ি ও কোনাবাড়ী কলেজ গেটসহ বেশকিছু এলাকায় শত শত অবৈধ গ্যাস সংযোগ আছে।  

দেওয়ালিয়াবাড়ি এলাকার এক বাসিন্দা জানান, তার বাড়িসহ দু’টি বাড়িতে অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ রয়েছে। এজন্য প্রতিমাসে তাকে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা দালালদের দিতে হয়। পরে ওই টাকা তারা ভাগাভাগি করে নেয়।

অপর এক ব্যক্তি জানান, তার বাড়িতে অবৈধ গ্যাস সংযোগ রয়েছে। এজন্য তাকে মাসে ১০ হাজার টাকা দিতে হয়। এছাড়া তার বাড়ির আশপাশে অনেকের বাড়িতেই অবৈধ গ্যাস সংযোগ রয়েছে।

কালিয়াকৈর চন্দ্রা তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ম্যানেজার মামুনুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, এসব অবৈধ গ্যাস সংযোগের বিষয় তার জানা নেই। তবে ওইসব এলাকায় বেশ কিছুদিন আগে অভিযান চালিয়ে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এছাড়া অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ দিয়ে টাকা লেনদেনের বিষয়ে কোনো কর্মকর্তা জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পর্যায়ক্রমে এসব অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২০
আরএস/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।