ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি

লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত নিটওয়্যার শিল্প, নির্ধারিত সময়ে শিপমেন্ট নিয়ে শঙ্কা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২২ ঘণ্টা, জুলাই ৭, ২০২২
লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত নিটওয়্যার শিল্প, নির্ধারিত সময়ে শিপমেন্ট নিয়ে শঙ্কা

নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের শহর ও উপজেলাগুলোতে অতিরিক্ত মাত্রায় বেড়েছে লোডশেডিং। সহসাই এ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) কর্মকর্তারা।

 

বুধবার (৬ জুলাই) সকাল থেকে সদর, বন্দর, সিদ্ধিরগঞ্জ, ফতুল্লা, রূপগঞ্জ, আড়াইহাজারের বিভিন্ন এলাকায় এক/দুই ঘণ্টা পর পর লোডশেডিং হতে দেখা গেছে।
 
নারায়ণগঞ্জ শিল্পাঞ্চল হওয়াতে বিদ্যুৎ স্বাভাবিক না থাকায় শিল্প কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এতে করে বিপাকে পড়ছেন শিল্প কারখানার মালিকরা।  দ্রুত এ অবস্থা স্বাভাবিক না হলে অনেক কারখানায় নির্ধারিত সময়ে শিপমেন্ট পাঠাতে পারবেন না বলে আশঙ্কা করছেন তারা।  

বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) কার্যকরী কমিটির নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম জানান, এভাবে লোডশেডিংয়ের কারণে আমাদের যেহেতু জেনারেটর আছে আমরা এক ঘণ্টা চালাতে পারি। এরপর আমাদের বিশ্রাম দিতে হয়। লোডশেডিং হয় ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা। এক টানা তিন বা চার ঘণ্টা লোডশেডিং হলে আমাকে এক ঘণ্টা জেনারেটর চালিয়ে বন্ধ রাখতে হয়। এতে উৎপাদন বিশালভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সবচেয়ে বড় কথা আমার নিটওয়্যার শিল্পের সবচেয়ে বড় উপাদান হচ্ছে গ্যাস। গ্যাস না পাওয়া বা গ্যাস স্বল্পতার কারণে আমাদের ৫০ শতাংশের নিচে এসেছে উৎপাদন। যা হতো তার চেয়ে এখন ৫০ শতাংশ কম উৎপাদন হচ্ছে, এতে আমি শিপমেন্ট ফেল করছি। শিপমেন্ট শিডিউল ফেল করার কারণে বায়ারদের কাছে এখন আমাকে দেন দরবারে যেতে হচ্ছে।  এয়ার শিপমেন্ট এ ধরনের শর্তে যেতে হচ্ছে। এয়ার শিপমেন্ট মানে আমার টোটাল ভ্যালুর ৬০ শতাংশ টাকা। এ ধরনের একটি সংকটের মধ্য দিয়ে আমাদের যাচ্ছে। এমনিতেই সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীতে গ্যাস লাইনে দুর্ঘটনার কারণে ১১ দিন আমাদের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ ছিল। তখন একটা বড় আকারের সমস্যা হয়েছে এবং আবার এই সমস্যা। সব মিলিয়ে বড় ধরনের বিপদে রয়েছি আমরা।  

তিনি আরও বলেন, এ সংকট দীর্ঘমেয়াদি হলে আমরা বায়ারদের কাছে যে কমিটমেন্ট করেছিলাম সেটি ফেল করবো। আজ শ্রীলংকা থেকে তাদের বায়াররা অর্ডার প্রত্যাহার করছে। ভিয়েতনাম, চায়না থেকেও করছে। কারণ চায়নাতে লকডাউন আবার ভিয়েতনামেও চায়নার কারণে তারা সময়মত শিপমেন্ট দিতে পারেনি বলেই আজ বাংলাদেশের সামনে একটি সুযোগ এসেছে আমাদের এই মার্কেট শেয়ারটাকে বড় করা। এখন আমাদেরও যদি একই লাইনে হাঁটতে হয় তাহলে সে সুযোগ আমরা হাতছাড়া করবো।  

এদিকে এ অবস্থায় অফিস, বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি দপ্তর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোও বিপাকে পড়ছে। বিভিন্ন দোকান মালিকরা বিকল্প হিসেবে জেনারেটর ব্যবস্থা করছেন আবার অফিসগুলোতেও জেনারেটরকে বিকল্প হিসেবে রাখা হচ্ছে।  

লোডশেডিংয়ের বিষয়ে ডিপিডিসি আগের নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম মোর্শেদ জানান, আমাদের যেমন বরাদ্দ দিচ্ছে সে অনুযায়ী আমাদের লোডশেডিং করতে হচ্ছে। ৫ হাজার থেজে ১৩ হাজার মেঘাওয়াট আপডাউন করছে, সে অনুযায়ী আমরা লোডশেডিং করছি। সব ডিভিশনে এভাবে ভাগ করা হচ্ছে। এটা কবে ঠিক হবে এখনি বলা যাচ্ছে না। এটা গ্যাসের প্রাপ্তি নিশ্চিত হলেই ঠিক হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ০৮২২ ঘণ্টা, জুলাই ৭, ২০২২
এমআরপি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।