সবুজ ইউনুস বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও লেখক। বিংশ শতাব্দীর শেষ দশকের শুরুর দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালে তিনি সাংবাদিকতা শুরু করেন।
দীর্ঘকাল সবুজ ইউনুস তেল গ্যাস বিদ্যুৎ খাত নিয়ে প্রবন্ধ, নিবন্ধ, ফিচার ও শত শত বিশেষ ও সাধারণ রিপোর্ট প্রকাশ করেছেন। দৈনিক বালার বাণী, দৈনিক মুক্তকণ্ঠ, দৈনিক যুগান্তর ও দৈনিক সমকাল পত্রিকায় এগুলো ছাপা হয়। বাংলাদেশের জ্বালানি খাতের উন্নতি সাধনে তার এসব লেখা বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে। বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার ২০১২ সালে তাকে সেরা রিপোর্টার হিসেবে পুরস্কৃত করে।
সবুজ ইউনুস বর্তমানে জনপ্রিয় বাংলা জাতীয় দৈনিক সমকালের সহযোগী সম্পাদক ও অনলাইন ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সাংবাদিকতার পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন বিষয়ে লেখালেখিও করছেন।
বাংলাদেশের তেল গ্যাস বিদ্যুৎ খাত নিয়ে আগ্রহ আছে, এমন পাঠকদের কৌতূহল মেটানোর জন্য সাংবাদিক সবুজ ইউনুস তার অভিজ্ঞতালদ্ধ জ্ঞান থেকে ‘বাংলাদেশের তেল গ্যাস বিদ্যুৎ’ বইটি লিখেছেন। যেহেতু তিনি প্রায় ৩০ বছর বাংলাদেশের তেল গ্যাস বিদ্যুৎ নিয়ে সাংবাদিকতা করেছেন সেহেতু বলাই যায়, এই বিষয়গুলোতে তার স্বচ্ছ জ্ঞান রয়েছে।
আধুনিক জীবন তেল গ্যাস বিদ্যুৎ ছাড়া কল্পনাই করা যায় না। এক কথায় জ্বালানি খাত ব্যতীত চলমান জীবনধারা অচল। গুরুত্বপূর্ণ এই খাত নিয়ে শিক্ষানবিশ সাংবাদিক, ছাত্র ও সাধারণ পাঠককে সংক্ষেপে ধারণা দেওয়ার জন্য সবুজ ইউনুস তার নিজস্ব তাগিদবোধ থেকেই বইটি রচনা করেছেন। সন্দেহ নেই যে, বইটি পাঠ করে সব শ্রেণির পাঠকই বাংলাদেশের জ্বালানি খাত অর্থাৎ তেল গ্যাস বিদ্যুৎ কয়লা নিয়ে সার্বিক একটি চিত্র জানতে পারবেন।
বইটিতে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদের অতীত ও বর্তমান পরিস্থিতি নিখুঁতভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। সাংবাদিক সবুজ ইউনুস জ্বালানি খাত নিয়ে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে বিশ্বাসযোগ্য তথ্য নিয়েছেন। সেগুলো যথাসম্ভব সাদামাটা ভাষায় এখানে উপস্থাপন করার চেষ্টা করা হয়েছে। আশা করা যায়, পাঠকদের বুঝতে কোনো সমস্যা হবে না।
তেল গ্যাস বিদ্যুৎ কয়লা খাত নিয়ে এটি একটি পরিচিতিমূলক বই। বইটি অধ্যয়ন করে পাঠক এক নজরে জানতে পারবেন বাংলাদেশের এ খাতগুলোর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি ও ইতিহাস।
নব্বই দশকে সারাদেশে অধিকাংশ সময় বিদ্যুৎ থাকতো না। উৎপাদনও হতো দুই-তিন হাজার মেগাওয়াট। লোডশেডিং চলতো রাতদিন সমানে। এই খাত সর্ম্পকে স্পষ্ট ও পুরোপুরি ধারণা না থাকার কারণে অনেকের পক্ষে তখন নির্ভুল প্রতিবেদন লেখা কঠিন হতো। এক পর্যায়ে বিষয়টি উপলদ্ধি করেন সরকারের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা। এ অবস্থায় বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে শুরু হলো এই বিটের তরুণ সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা। এরপর তারা এই খাত সম্পর্কে ভালোভাবে বুঝতে শুরু করেন। পাঠকও এসব বিষয়ের বিভিন্ন পারিভাষিক শব্দের সঙ্গে পরিচিত হলেন। কালের পরিক্রমায় সাংবাদিকতার জনপ্রিয় একটি বিট এখন জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত। প্রতিদিনই কোনো না কোনো গণমাধ্যমে এ বিষয়ক প্রতিবেদন থাকেই। এরপর ক্রমেই জ্বালানি খাত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। আর কদর বাড়তে থাকে রিপোর্টারদের।
সবুজ ইউনুস বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ নিয়ে লেখা শুরু করেন ১৯৯৪ সালের দিকে। তখন এ বিষয়ে তেমন কোনো কার্যকর বইও ছিল না। সরকারি কর্মকর্তা, সভা সেমিনার ও কর্মশালা—এগুলোর মাধ্যমেই তিনি এ খাত সম্পর্কে জানাশোনা শুরু করেন। পরে দেশে-বিদেশে এ বিষয়ে বেশ কয়েকটা প্রশিক্ষণ নেন। তখনই উপলদ্ধি করেন যে, এই খাত নিয়ে সাধারণ মহলে বোধগম্য হয় এরকম একটি বই খুবই প্রয়োজন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫২ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০২২
এমজেএফ