ঢাকা: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনকে লেখা এক চিঠিতে ঐতিহ্যগতভাবে খুব কম কার্বন নির্গমনকারী দেশ হওয়া সত্ত্বেও উচ্চাভিলাষী জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন এবং প্রশমন উদ্যোগের জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূত জন কেরি।
১৩ অক্টোবর পাঠানো এক চিঠিতে জন কেরি নতুন মুদ্রাস্ফীতি হ্রাস আইন (আইআরএ) সহ জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাইডেন প্রশাসনের বেশ কয়েকটি পদক্ষেপও তুলে ধরেন।
জলবায়ু সংক্রান্ত কার্যক্রম এবং লক্ষ্যগুলোর জন্য বাংলাদেশের প্রশংসার পাশাপাশি জন কেরি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি জলবায়ু উদ্যোগে যোগদানেরও আহ্বান জানান। এর ফলে বাংলাদেশ অন্যান্য বৃহৎ নির্গমনকারীদের জন্য একটি ইতিবাচক উদাহরণ স্থাপন ও বিশ্ব জলবায়ু প্রক্রিয়ায় অর্থপূর্ণভাবে অংশ নিতে উৎসাহিত করতে পারে।
চিঠিতে জন কেরি গত বছর গ্লাসগোতে কপ-২৬ এর আগে জমা দেওয়া উচ্চাভিলাষী ন্যাশনালি ডিটারমাইন্ড কন্ট্রিবিউশনের-এনডিসির জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান এবং নভেম্বরে শার্ম এল শেখে কপ-২৭ এর আগে আরও মতামত দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন।
তিনি এনডিসির লক্ষ্য বাস্তবায়নের উপায় খুঁজে বের করার ক্ষেত্রে মার্কিন সরকারের সমর্থনেরও আশ্বাস দেন।
চিঠিতে বিশেষ দূত জন কেরি গত বছর ১০টি নতুন কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিল করার ঘোষণার জন্য বাংলাদেশকে স্বাগত জানিয়েছেন।
তিনি ক্লিন এজ এশিয়া ইনিশিয়েটিভসহ বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তা, ক্লিন এনার্জি এবং এনার্জি এক্সেস লক্ষ্যের জন্য মার্কিন সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দেন।
তিনি উল্লেখ করেন, মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের ব্যুরো অব এনার্জি রিসোর্সেস বাংলাদেশের পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি এবং প্যাসিফিক নর্থওয়েস্ট ল্যাবরেটরির মধ্যে একটি নতুন অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছে। এই লক্ষ্যে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির ব্যবহার করার জন্য গ্রিডের স্থিতিশীলতা এবং নির্ভরযোগ্যতা নিশ্চিত করার পরিকল্পনা করছে। পেট্রোবাংলার সাথে কার্বন ক্যাপচার, ইউটিলাইজেশন, স্টোরেজ এবং ব্লু হাইড্রোজেন ডেভেলপমেন্টে নতুন উদ্যোগ উদ্বোধনে তারিখ নির্ধারণে কাজ করছে।
জন কেরি দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে কৃষি উদ্ভাবন মিশন ফর ক্লাইমেটে যোগদান করার জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেন। এটা মার্কিন নেতৃত্বাধীন একটি উদ্যোগ যা শক্তিশালী উদ্ভাবন বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যা ৮ বিলিয়ন ডলার মূল্যের জলবায়ু অর্থায়ন অর্জনে সহায়তা করতে পারে।
চিঠিতে তিনি ২০২২ সালের এপ্রিলে আমাদের মহাসাগর সম্মেলনে গৃহীত প্রতিশ্রুতির জন্য বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানান।
এর আগে, ১২ অক্টোবর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বিশেষ দূত জন কেরির কাছে একটি চিঠি লিখে গ্লোবাল মিথেন প্রতিশ্রুতিতে যোগ দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত জানিয়েছিলেন, যা ২০২০ সালের স্তর থেকে বিশ্বব্যাপী মিথেন নিঃসরণরোধে মার্কিন এবং ইইউর নেতৃত্বাধীন যৌথ উদ্যোগে ২০৩০ সালের মধ্যে গড়ে কমপক্ষে ৩০ শতাংশে কমিয়ে আনা হবে। এখন পর্যন্ত ১০০ টিরও বেশি দেশ এতে যোগ দিয়েছে।
চিঠিতে মন্ত্রী ড. মোমেন মিথেন নিঃসরণ কমানোর জন্য কৃষি ও প্রাণিসম্পদ খাতে উৎপাদনশীলতার ওপর যেকোনো বিরূপ প্রভাব কমাতে বাংলাদেশকে সহায়তার আশ্বাসের কথা কেরিকে স্মরণ করিয়ে দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০২২
টিআর/এএটি