ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

সাতক্ষীরার আমে বাজার সয়লাব, দাম নিয়ে হতাশ চাষিরা

শেখ তানজির আহমেদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৯ ঘণ্টা, মে ৮, ২০২৩
সাতক্ষীরার আমে বাজার সয়লাব, দাম নিয়ে হতাশ চাষিরা আম।

সাতক্ষীরা: গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ, বোম্বাইসহ স্থানীয় নানা জাতের আমে জমে উঠেছে সাতক্ষীরার বাজার। আম পঞ্জিকা অনুযায়ী ৫ মে থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাজারজাত শুরু হওয়ার পর স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি সারা দেশে চলে যাচ্ছে মানে ও গুণে সেরা সাতক্ষীরার সুস্বাদু আম।



সোমবার (৮ মে) সাতক্ষীরার সুলতানপুর বড় বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গোবিন্দভোগ আম ১৬০০ থেকে ১৮০০ টাকা মণ, গোলাপভোগ ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা মণ ও বোম্বাই আম ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে দাম নিয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন আম চাষি ও ব্যবসায়ীরা।

তাদের অভিযোগ, গত মৌসুমের তুলনায় চলতি মৌসুমে আমের দাম প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। এতে ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। এজন্য তারা জেলায় ঘোষিত আম পঞ্জিকাকেও কিছুটা দায়ী করেছেন।

তারা বলেন, আবহাওয়া ও ভৌগোলিক কারণে সাতক্ষীরার আম অন্যান্য জেলার তুলনায় কমপক্ষে দুই সপ্তাহ আগে পাকে। এজন্য সাতক্ষীরার আম বিদেশে রপ্তানি হওয়াসহ সারা দেশে বিপুল চাহিদা সৃষ্টি করে। কিন্তু গত বছরের তুলনায় এবছর আম বাজারজাতকরণের তারিখ দুই সপ্তাহ পেছানো হয়। এতেই মূল ক্ষতিটা হয়েছে। কারণ রাজশাহীর নওগাঁর চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম বাজারে চলে এসেছে। এজন্য এ জেলার আম নিয়ে বাইরে এখন আর মাতামাতি নেই।



আড়তদাররা জানান, প্রথম দিন থেকেই বাজারে আমের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। আড়তগুলোতে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। সরবরাহ বেশি হওয়ায় আমের দরপতন হয়েছে।

আম চাষি আনিসুর বলেন, চলতি মৌসুমে প্রতিটি বাগানেই আমের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে বাজারে দাম কম। এমন দাম চলতে থাকলে লোকসান গুণতে হবে।

মিলন নামের এক আম চাষি বলেন,  আমি গোবিন্দভোগ আম নিয়ে বাজারে এসেছি। সাইজ অনুযায়ী ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

শহিদুল ইসলাম নামের এক আমচাষি বলেন, সুলতানপুর বড় বাজারে জায়গা খুবই স্বল্প। গোবিন্দভোগ ও বোম্বাই নিয়ে এসেছিলাম। যানজটের কারণে সকাল সকাল বাজার ধরতে পারিনি। এজন্য দাম পাইনি।

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চলতি মৌসুমে জেলার চার হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে আম চাষ করেছেন ১৩ হাজার ১০০ জন চাষি। এর মধ্যে সদর উপজেলায় এক হাজার ২৩৫ হেক্টর, কলারোয়ায় ৬৫৫ হেক্টর, তালায় ৭১৫ হেক্টর, দেবহাটায় ৩৭০ হেক্টর, কালিগঞ্জে ৮৩৫ হেক্টর, আশাশুনিতে ১৪৫ হেক্টর ও শ্যামনগরের ১৬০ হেক্টর জমিতে আম চাষ করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৫ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন আম।



এ মৌসুমে সাতক্ষীরা থেকে ২২৫ কোটি টাকার আম বিক্রির প্রত্যাশা করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

এদিকে স্থানীয় প্রেক্ষাপট বিবেচনায় সাতক্ষীরার আম পঞ্জিকায় ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে জেলা প্রশাসন। সে অনুযায়ী ৫ মে থেকে গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ, বোম্পাইসহ স্থানীয় জাতের আম বাজারজাত শুরু হয়েছে। এছাড়া ১০ মে হিমসাগর, ১৮ মে ল্যাংড়া ও ২৮ মে থেকে আম্রপালি আম বাজারজাত শুরু হবে।

সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে আম পঞ্জিকায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। চলতি মৌসুমে ২২৫ কোটি টাকার আম বিক্রির প্রত্যাশা করা হচ্ছে। একইসঙ্গে সাতক্ষীরা থেকে আম রপ্তানির বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৪ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০২৩
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।