রাজবাড়ী: রাজবাড়ী জেলা সদরের চন্দনী ইউনিয়নের ঘোড়পালান গ্রামের মো. আলাউদ্দিন শেখ (৬৪)। নিজের ১ একর জমিতে লিচু বাগান করে সফলতার মুখ দেখেছেন তিনি।
চলতি মৌসুমে তার ১ একর জমিতে ১০০ গাছে থোকায় থোকায় ধরেছে লিচু। উন্নত জাতের লিচুর বাগান করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়েছেন তিনি।
আলাউদ্দিন শেখ চন্দনী ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত আজগর আলী শেখের ছেলে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, চলতি মৌসুমে রাজবাড়ীর ৫ উপজেলায় ৫৪ হেক্টর জমিতে হয়েছে লিচুর আবাদ। এর মধ্যে জেলা সদরে ২০ হেক্টর, কালুখালীতে ৮ হেক্টর, বালিয়াকান্দিতে ৫ হেক্টর, গোয়ালন্দে ২ হেক্টর ও পাংশায় ১০ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ করেছেন চাষিরা। যার প্রতি হেক্টর জমিতে ৮-১০ মেট্রিক টন লিচুর আবাদ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সরেজমিনে, চন্দনী ইউনিয়নের লিচু চাষি আলাউদ্দিন শেখের লিচু বাগানে গিয়ে দেখা যায়, তার প্রতিটি গাছে থোকায় থোকায় ধরে আছে লাল রঙের পাকা লিচু। বাগানেই এসেছেন অনেক ক্রেতা।
আলাউদ্দিন শেখ বাংলানিউজকে বলেন, ১ একর জমির ওপর আমার লিচু বাগান। এই বাগানে মোজাফফর, বোম্বাই, চায়না-৩ জাতের ১০০ গাছ রয়েছে। প্রতিটি গাছে আল্লাহর রহমতে ভালো ফলন হয়েছে। আনুমানিক হিসেবে প্রতিটি গাছেই ২ হাজার লিচু ধরেছে। বাগান থেকে আমি ব্যাপারীদের কাছে ১ হাজার লিচু ২ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। আর খুচরা পর্যায়ের হিসেবে ১০০ লিচুর ওজন প্রায় ২ কেজির মতো। চলতি মে মাসের ০১ তারিখ থেকে গাছের লিচু বিক্রি শুরু হয়েছে। লিচু চাষ একটি লাভজনক ব্যবসা। আমার সফলতা দেখে এই গ্রামের অনেকেই লিচুর বাগান করেছেন।
বাগানে লিচু কিনতে আসা ক্রেতা আ. মতিন বিশ্বাস বলেন, আগে বাজার থেকে লিচু কিনতাম। সেগুলোতে অনেক সময়ে পোকা থাকতো। এখন আমাদের এখানে স্থানীয় অনেক লিচুর বাগান হয়েছে। বাগানে এসে সরাসরি লিচু ক্রয় করছি। রাজবাড়ীর বাগানের লিচুগুলো অনেক স্বাদ। দামও মোটামুটি হাতের নাগালে। আমরা এ জেলা থেকে ভালো মানের লিচু কিনতে পেরে খুশি।
লিচুর ব্যাপারী মো. আসিফ বলেন, আমরা প্রতি বছর এখন রাজবাড়ীর বিভিন্ন গ্রামের লিচুর বাগান ধরে ক্রয় করি। সঠিক সময়ে লিচু গাছ থেকে সংগ্রহ করে স্থানীয় বাজারসহ আশপাশের কয়েকটি জেলাতে বিক্রি করি। রাজবাড়ী জেলার লিচুর সুনাম দিন দিন ছড়িয়ে পড়ছে। অনেক চাষিই লিচু চাষ করে লাভবান হচ্ছেন।
জেলা সদর উপজেলা কৃষি অফিসের চন্দনী ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি অফিসার নারায়ন মন্ডল বাংলানিউজকে বলেন, রাজবাড়ীর মাটি লিচু চাষের জন্য উপযোগী। চন্দনী ইউনিয়নের কয়েকজন কৃষক লিচুর চাষাবাদ করেছেন। এদের মধ্যে মো. আলাউদ্দিন শেখ অন্যতম। তিনি লিচু চাষে ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছেন। তার দেখাদেখি অনেকেই লিচু চাষে আগ্রহী হয়েছেন।
রাজবাড়ী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বাংলানিউজকে বলেন, আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে লিচু চাষিদের নিয়মিত নানা ধরনের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিচ্ছি। আশা করছি আগামীতে এই অঞ্চলে লিচুর চাষাবাদ আরও বাড়বে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, মে ১১, ২০২৩
এসআরএস