ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

শীতের আগাম সবজি চাষে ব্যস্ত চাষিরা, শঙ্কা ভারী বৃষ্টিপাতের

মো. নিজাম উদ্দিন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২১ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩, ২০২৩
শীতের আগাম সবজি চাষে ব্যস্ত চাষিরা, শঙ্কা ভারী বৃষ্টিপাতের

লক্ষ্মীপুর: শীতকালীন সবজি চাষাবাদের জন্য বিখ্যাত লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ এলাকা। শীত মৌসুমে জেলায় উৎপাদিত শাক-সবজির বিশাল একটি অংশ চাষাবাদ হয় এ অঞ্চলে।

বাণিজ্যিকভাবে উন্নত জাতের শীতকালীন সবজির আবাদ করেন এখানকার কৃষকেরা।

বেশি লাভের আশায় মৌসুমের আগেই আগাম সবজির চাষাবাদ করেন অনেক কৃষক।  

তবে এতে রয়েছে কিছু চ্যালেঞ্জ, বর্ষা মৌসুমে ভারী বৃষ্টিপাতে অনেকের আগাম সবজির ক্ষেত নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া বৃষ্টিপাতে ক্ষেতে দেওয়া সার এবং কীটনাশক ঠিকমতো কাজে আসে না বলে জানান তারা।  

তারপরও অনেকে লোকসানের ঝুঁকি নিয়ে আগাম সবজি চাষ শুরু করেছেন।

ভবানীগঞ্জের চর মনসা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কৃষকরা আগাম শীতকালীন সবজির ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। এরই মধ্যে অনেক ক্ষেতে বিভিন্ন প্রজাতির সবজির চারা রোপণ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আগামী এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে ফলন তুলতে পারবেন বলে জানিয়েছেন কৃষকেরা।  

চর মনসা গ্রামের কৃষক মো. ইউনুস মোল্লা বাংলানিউজকে বলেন, শীতের আগেই শীতকালীন সবজি বাজারে তুলতে পারলে ভালো দাম পাওয়া যায়। এ সময়টাতে সবজির চাহিদা বেশি থাকে। তাই আগাম সবজির চাষাবাদ শুরু করেছি। ৩০ শতাংশ জমিতে ফুলকপির চারা লাগিয়েছি। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ফুল আসবে। আশা করি, এক মাসের মধ্যেই বাজারে বিক্রি করতে পারব। এছাড়া ৪০ শতাংশ জমিতে টমেটোর চারা লাগিয়েছি। দুই মাস পর গাছ থেকে টমেটো তুলতে পারব। ১৮ শতাংশ জমিতে লাগানো কাঁচা মরিচ গাছে ফুল এসেছে, এক মাসের মাথায় ফলন তোলা শুরু হবে।  

তিনি বলেন, ভারী বর্ষণ হলে ক্ষেতে পানি জমে চারার ক্ষতি হয়। কয়েকদিন আগে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে কিছু ফুলকপির চারা নষ্ট হয়েছে। আবার লাগিয়েছি। বৃষ্টির অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশনের জন্য ক্ষেতের মধ্যে সেচ পাম্প বসিয়ে রেখেছি। টানা বৃষ্টি হলে গাছে রোগবালাই বেড়ে যায় এবং সার কাজ করে না। তাই বৃষ্টিপাত বেশি হলে সবজির চাষাবাদ খরচও বেড়ে যায়৷  

একই এলাকার কৃষক ফখরুল ইসলাম বলেন, ৩০ শতাংশ জমিতে লালশাকের বীজ বুনেছি। এক সপ্তাহের মধ্যে বাজারে তুলতে পারব। ১৮ শতাংশ জমিতে ফুলকপি এবং ১৫ শতাংশ জমিতে মরিচ চাষা করেছি।  

কৃষক হারুন বলেন, ৪০ শতাংশ জমিতে আউশ ধান ছিল। সেগুলো কাটার পর লাউয়ের চারা রোপণ করেছি। আমরা মৌসুমের আগে আগে শীতের সবজি আবাদ করি। খরচ একটু বেশি পড়ে। কিন্তু বাজারে দামও ভালো পওয়া যায়৷ মৌসুমজুড়ে এ অঞ্চলে উন্নত জাতের শীতকালীন সবজির আবাদ করা হবে।  

ভবানীগঞ্জ ব্লকের দায়িত্বে থাকা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল খালেক বাংলানিউজকে বলেন, ভবানীগঞ্জের কৃষি জমিতে সারা বছরই শাক-সবজির আবাদ হয়। কৃষকরা এখন আগাম শীতকালীন সবজি টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, লাউ, বেগুন এবং লালশাকসহ বিভিন্ন ধরনের সবজির আবাদ শুরু করেছেন। সঠিক সময়ে এবং সঠিক পদ্ধতিতে সুষম সার, জৈব সার এবং কীটনাশকের সঠিক ব্যবহারের জন্য তাদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।  

তিনি বলেন, ভারী বৃষ্টিপাতে ফসলের কিছুটা ক্ষতি হয়। তবে অনেক কৃষক ক্ষেতের পানি নিষ্কাশনে সেচ পাম্প বসিয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১০১৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৩, ২০২৩
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।