ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

বানের জলে ফেনীর উত্তরের কৃষি-মৎস্যে ব্যাপক বিপর্যয় 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০০ ঘণ্টা, আগস্ট ৫, ২০২৪
বানের জলে ফেনীর উত্তরের কৃষি-মৎস্যে ব্যাপক বিপর্যয় 

ফেনী: ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে ফেনীর ফুলগাজী ও পশুরাম উপজেলার পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা ছাড়িয়েছে লক্ষাধিক। কৃষি ও মৎস্যে ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক।

 স্মরণকালে বড় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে তিন উপজেলার মানুষ। বানের জলে ডুবেছে ধান, ফসল। ভেসে গেছে পুকুর জলাশয়ের মাছ।  

বাংলা প্রবাদে আছে ‘কারো পৌষ মাস কারো সর্বনাশ’ এ চিত্র যেন সে কথাই মনে করিয়ে দিচ্ছে। কারোর পুকুরের লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে বানের জলে। রাস্তায় জাল ফেলে সেই মাছ সংগ্রহ করছে অন্যরা।

ফেনী-বিলোনীয়া বন্দর সড়কে এভাবেই জাল ফেলে মাছ শিকার করছেন শতশত মানুষ। অপরদিকে পুকুরের লাখ টাকার মাছ হারিয়ে মাথায় হাত অনেকের।  

কবির আহম্মদ নামের স্থানীয় একজন জানান, তার পুকুরে সাড়ে তিন লাখ টাকার বেশি মাছ ছিল। একরাতের বন্যাতেই সব মাছ বন্যায় ভেসে গেছে।  

শুধু ব্যক্তি পর্যায়ের খামার নয়, অনেক মৎস্য প্রকল্পের মাছও বন্যার পানিতে ভেসে চলে যায়।  কারো প্রকল্পে ১০ লাখ টাকার, আবার কোন প্রকল্পে ২০ লাখ টাকার বেশি মাছ ছিল। সব হারিয়ে মৎস্য খামারিদের মাথায় হাত।  

গত দুই দিনের বন্যায় ফেনীর ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়ার ১৫শ’টির বেশি পুকুরের মাছ বানের জলে ভেসে গেছে।

মৎস্য বিভাগ ও সংশ্লিষ্টরা জানান, ক্ষতির পরিমাণ ছাড়িয়ে যাবে ৫ কোটি টাকার বেশি।  

এদিকে হঠাৎ সৃষ্ট এই বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে রোপা আমনের বীজতলা, আমন আবাদ, আউশ ধান ও শরৎকালীন সবজির।

কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, বানের জলে নিমজ্জিত রয়েছে ৭২ হেক্টর আউশ ধান, ১৮৯ হেক্টর আমন বীজতলা, আমন ধান নিমজ্জিত হয়েছে ১৩৭৭ হেক্টর জমি।

অপরদিকে শরৎকালীন সবজি নিমজ্জিত হয়েছে ৬৭ হেক্টর জমির। কৃষি বিভাগ বলছে, এই বন্যা ব্যাপক ক্ষতি করবে কৃষিখাতে।  

ফেনী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক একরামুল উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।  

অপরদিকে জেলা প্রশাসক মুসাম্মৎ শাহীনা আক্তার জানান, ত্রাণ সহায়তা নিয়ে জনগণের পাশে আছেন তারা। কৃষি মৎস্যসহ সার্বিক ক্ষতি এড়াতে বন্যা প্রতিরোধ করতে স্থায়ী সমাধান হিসেবে টেকসই নদী বাঁধের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের।  

ভারি বৃষ্টি আর ঢলে ক’দিন বাড়ছিল পানি। শনিবার মুহুরী নদীর বন্যানিয়ন্ত্রণ ১৭ পয়েন্টে ভাঙন দেখা দেয়।

চলতি বছরের জুলাইয়ের শুরুতে বন্যায় নদী বাঁধের ১২ স্থানে ভাঙে। পানি উন্নয়ন মেরামতে ব্যয় করেছেন দেড় কোটি টাকা। এক মাসের ব্যবধানে  ভাঙল আরও ১৭টি স্থানে।  

উজানের ঢল ও ভারী বর্ষণে সৃষ্ট এই বন্যায় ভেসে গেছে মাছের ঘের। তলিয়ে গেছে বাড়ি ঘর ও আমনের বীজতলা। ক্ষতির যে পরিমাণ তা ৫০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, আগস্ট ০৫, ২০২৪
এসএইচডি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।