ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

চীনের সহায়তায় হেক্টর প্রতি ১০-১২ টন হাইব্রিড ধান

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০১৭
চীনের সহায়তায় হেক্টর প্রতি ১০-১২ টন হাইব্রিড ধান হাইব্রিড ধান- ছবি:

ঢাকা: বাংলাদেশ ও চীনের যৌথ গবেষণায় টেকসই ও অধিক ফলনশীল হাইব্রিড ধানের জাত উদ্ভাবনের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিআরআরআই)। দেশে গবেষণার জন্য চীন থেকে দেড় মাস আগে ১০৩ মেট্রিক টন হাইব্রিড ধান আনা হয়েছে। কিভাবে বাংলাদেশের আবহাওয়ার সঙ্গে এগুলো উৎপাদন করা যায় সেই বিষয়েও গবেষণা চলছে।

বর্তমানে বাংলাদেশে প্রতি বছর ৩৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হয়। এর মধ্যে হাইব্রিড ধানের অবদান মাত্র ১০ শতাংশ।

এখন প্রতি হেক্টর জমিতে ৮ থেকে ৯ মেট্রিক টন হাইব্রিড ধান উৎপাদিত হচ্ছে। দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চীনের সহায়তায় প্রতি হেক্টর জমিতে ১০ থেকে ১২ মেট্রিক টন হাইব্রিড ধান উৎপাদনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে মোট উৎপাদিত ধানের মধ্যে হাইব্রিডের অবদান ১৮ থেকে ২০ শতাংশ হওয়ার আশা প্রকাশ করেছে বিআরআরআই।

হাওর, চলনবিল, পটুয়াখলী, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, গোপালগঞ্জ ও বরগুনায় ৪ দশমিক ৮ মিলিয়ন হেক্টর জমিতে হাইব্রিড ধানের চাষ হয়।

বিআরআরআই-এর পরিচালক ড. মো. আনছার আলী বাংলানিউজকে বলেন, চীনের সহায়তায় হাইব্রিড ধানের উৎপাদন বাড়ানো হবে। এখন হেক্টর প্রতি হাইব্রিড ধানের উৎপাদন ৮ থেকে ৯ মেট্রিক টন। চীনা বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় ১০ থেকে ১২ মেট্রিক টন হাইব্রিড ধান উৎপাদন করার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে মোটা ধান থেকে চিকন হাইব্রিড ১০ থেকে ১২ মেট্রিক টন উৎপাদন করা কঠিন। তারপরও আমরা গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছি। যথাযথভাবে বীজ উৎপাদন করতে নতুন নতুন কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হবে।

বিআরআরআই সূত্র জানায়, দেশীয় আবহাওয়া উপযোগী হাইব্রিড ধানের জাত ও চাষাবাদের কলাকৌশল উদ্ভাবন করে মাঠ পর্যায়ে বিতরণ করার পরিকল্পনা আছে।

‘বাংলাদেশ গবেষণা ইনস্টিটিউটের হাইব্রিড ধান গবেষণা দক্ষতা বৃদ্ধি’ শীর্ষক কারিগরী প্রকল্পের আওতায় অধিক ফলনশীল হাইব্রিড ধানের জাত উদ্ভাবন করা হবে। প্রযুক্তি প্রচলনে ৩৫ কোটি ৩২ লাখ ৬৭ হাজার টাকা খরচ হবে। এর মধ্যে ২৬ কোটি ১২ লাখ ১৮ হাজার টাকা অনুদান দেবে চীন সরকার।

যৌথ গবেষণায় হাইব্রিড ধানের জাত উদ্ভাবনে চীন সরকারের সঙ্গে এ সংক্রান্ত লেটার অব এগ্রিমেন্ট ইতোমধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী প্রকল্পে কর্মরত চাইনিজ পরামর্শকেরা আগামী দুই বছর কাজ করবেন। প্রকল্পের পরামর্শকেরা ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে কাজ শুরু করেছেন। বর্তমানে ছয়জন চীনা পরামর্শক কাজ করছেন। চীনা পরামর্শকেরা চলে যাওয়ার পরেও গবেষণা মাঠের ফলাফল পর্যবেক্ষণে আরও কিছু সময় প্রয়োজন বলে মনে করে বিআরআরআই।

বিআরআরআই মনে করে, দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দেশীয় আবহাওয়ার উপযোগী হাইব্রিড ধানের জাত উদ্ভাবনের পাশাপাশি এর চীনা কলাকৌশল কাজে লাগানো হবে।

অন্যান্য দেশের তুলনায় হাইব্রিড ধান উদ্ভাবন দেরিতে হলেও দ্রুত সফল হওয়া যাবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের আধুনিক চাষাবাদ ও নানা প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হবে।

কৃষকদের কর্মশালা, প্রশিক্ষণ, ভিডিও চিত্র, লিফলেট বিতরণ, পোস্টার ও বুকলেট বিতরণ করা হবে।

গবেষণা শেষে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যেই প্রতি হেক্টরে ১০ থেকে ১২ মেট্রিক টন হাইব্রিড ধান উৎপাদন করা সম্ভব হবে বলে আশা করছে বিআরআরআই।

বাংলাদশে সময়: ২৩৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০১৭
এমআইএস/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।