ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

মানিকগঞ্জের চরাঞ্চলে বাদামের বাম্পার ফলন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩২ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০১৭
মানিকগঞ্জের চরাঞ্চলে বাদামের বাম্পার ফলন মানিকগঞ্জের চরাঞ্চলে বাদামের বাম্পার ফলন

মানিকগঞ্জ: ফলন উপযোগী মাটি, আবহাওয়া ও যথাযথ পরিচর্যায় মানিকগঞ্জ জেলার চরাঞ্চলের উপজেলাগুলোতে এবার চিনা বাদামের বাম্পার ফলন হয়েছে। এতে বেশ লাভবান হয়েছেন চরাঞ্চলের বাদাম চাষিরা। স্বল্প খরচ ও স্বল্প পরিশ্রমে চিনা বাদাম চাষে অধিক লাভ হওয়ায় দিনদিন বাদাম চাষে আগ্রহ বাড়ছে চরাঞ্চলের চাষিদের।

সাতটি উপজেলা নিয়ে গঠিত মানিকগঞ্জ জেলা। এরমধ্যে পদ্মা-যমুনা তীরে জেলার হরিরামপুর, শিবালয় ও দৌলতপুর উপজেলা।

নদীবেষ্টিত এসব উপজেলার বেশিরভাগ জমিতে রয়েছে ব্যাপক বেলে-দোঁয়াশ। যা বাদাম চাষের জন্য বেশ উপযোগী। তাই অন্যান্য ফসলের সঙ্গে ওই উপজেলাগুলোতে বাদামের চাষও হয় ব্যাপকভাবে।

জেলার হরিরামপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের উজানকান্দি এলাকার মৃত বছির উদ্দিন প্রামাণিকের ছেলে সাহেব আলী (৫৫) বাদাম চাষ করেন। পদ্মাপাড়ের জমিতে অন্যান্য ফসলের চেয়ে বাদাম চাষ বেশ লাভজনক বলেই জানান তিনি। কম পরিশ্রমে অধিক ফলন হওয়ায় লাভও বেশি। তাই প্রতিবছরই বাদাম চাষ করেন এ কৃষক।  

একই এলাকার মৃত মোকছেদ আলীর ছেলে চাষি আব্দুর রহমান জানান, প্রতি বিঘা জমিতে বাদাম চাষে সবমিলে খরচ প্রায় ৫/৬ হাজার টাকা। ভালো ফলন হলে প্রতি বিঘা জমি থেকে প্রায় ৬ মণ বাদাম পাওয়া যায়। প্রতি মণ বাদামের বর্তমান বাজারদর প্রায় তেইশ’ থেকে আড়াই হাজার টাকা। সেই হিসেবে প্রতি বিঘা জমি থেকে প্রায় ১৪/১৫ হাজার টাকার বাদাম বিক্রি করা যায়। বাদামের গাছগুলোও জ্বালানি হিসেবে বেশ চাহিদা রয়েছে। চরাঞ্চলের জমিগুলোতে অন্যান্য ফসলের চেয়ে তাই বাদাম চাষই বেশ লাভজনক বলেও মনে করেন তিনি।

দৌলতপুর উপজেলার জিয়নপুর ইউনিয়নের আমতলী এলাকার চাষি আরশেদ আলী (৪৩) জানান, গত বছর বন্যায় বাদাম চাষের জমি তলিয়ে যাওয়ায় বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন তিনিসহ আরও প্রায় অর্ধ শতাধিক চাষি। তবে এবার সে রকম কিছু না থাকায় বেশ ভালো ফলন হয়েছে। এতে ১২ বিঘা জমি থেকে প্রায় লক্ষাধিক টাকার মতো মুনাফা হবে বলে জানান তিনি।
বাদামের পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষকএকই ইউনিয়নের বইন্যা গ্রামের চাষি মুনছের মিয়া (৫২) জানান, নদী এলাকায় ফসলের আবাদ করা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোন সময় নদীর ভাঙন শুরু হলে ফসলের জমি চলে যায় নদীগর্ভে। তাই অল্প খরচে বাদাম চাষের প্রতি কৃষকদের আগ্রহ আরও বেশি। তবে চলতি বছর বাদাম চাষে তারা সবাই বেশ লাভবান বলেও মন্তব্য করেন।

জেলা কৃষি অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য মতে, জেলার হরিরামপুর, শিবালয় ও দৌলতপুর উপজেলার চরাঞ্চলের এলাকাগুলোতে বাদাম চাষ হয় সবচেয়ে বেশি। চলতি বছরে জেলার ওই তিনটি উপজেলায় সর্বমোট ২১৪৪ হেক্টর জমিতে বাদামের আবাদ হয়েছে। গতবছর ওই তিনটি উপজেলায় বাদাম আবাদের পরিমাণ ছিলো ১৯৮২ হেক্টর জমিতে।  

জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কর্মকর্তা জ্ঞানেশ চন্দ্র রায় বাংলানিউজকে জানান, চরাঞ্চলের বেলে-দোঁআশ মাটিগুলো বাদাম চাষের জন্য বেশ উপযোগী। যে কারণে জেলার চরাঞ্চলের এলাকাগুলোতে বাদামের চাষ হয় বেশি। চলতি বছরে জেলায় বাদাম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা তিন হাজার ২০৫ মেট্রিক টন। অনুকূল আবহাওয়ায় এবার বাদামের বাম্পার ফলন হওয়ায় বাদাম চাষিরা বেশ লাভবান।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, জুন ০৯, ২০১৭
জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।