ঢাকা, রবিবার, ২৬ আশ্বিন ১৪৩২, ১২ অক্টোবর ২০২৫, ১৯ রবিউস সানি ১৪৪৭

কৃষি

বিনামূল্যে বীজ-সার পাবেন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭:০২, সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৭
বিনামূল্যে বীজ-সার পাবেন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক সংবাদ সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী

ঢাকা: বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি কৃষির অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে ৫ লাখ ৪১ হাজার ২০১ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষককে ৫৮ কোটি ৭৭ লাখ ১৯ হাজার ৩১৫ টাকার বীজ ও রাসায়নিক সার দিচ্ছে সরকার।

রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী এ তথ্য জানান।

বর্তমানে খরিপ-২ মৌসুমে মাসকলাই ও রবি মৌসুমে গম, ভুট্টা, সরিষা, চীনাবাদাম, ফেলন, খেসারি, বিটি বেগুন এবং পরবর্তী খরিপ-১ মৌসুমে গ্রীষ্মকালীন মুগ ও তিল উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে দেশের ৬৪ জেলায় এই প্রণোদনা কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানান কৃষিমন্ত্রী।



প্রণোদনার মাধ্যমে পরিবার প্রতি এক বিঘা জমির জন্য বিনামূল্যে বীজ ও রাসায়নিক সার (ডিএপি ও এমওপি) দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

এতে ৫ লাখ ৪১ হাজার ২০১ বিঘা জমিতে ৭২৭ কোটি ৫৯ লাখ ৫০ হাজার ৯০০ টাকার ফসল উৎপাদিত হবে। আর ব্যয়ের তুলনায় আয় হবে ১২ গুণ। এক টাকা ব্যয় করে কৃষকরা ১২ টাকা আয় করতে পারবেন বলে আশাবাদী কৃষিমন্ত্রী।

তিনি জানান, চলতি খরিপ-২ মৌসুমে বন্যার ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে কলার ভেলায় আপদকালীন সময়ের জন্য রোপা আমনের ভাসমান বীজতলা তৈরির জন্য ৭ লাখ ৫৮ হাজার ১৬০ টাকা, আপদকালীন সময়ে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে নাবী জাতের রোপা আমন ধানের বীজ বিতরণের জন্য ৩ লাখ ২ হাজার ৪০০ টাকা এবং আপদকালীন সময়ের জন্য নাবী জাতের রোপা আমন বীজতলা তৈরি, চারা উত্তোলন ও বিতরণের জন্য ৮০ লাখ ২৬ হাজার ২০০ টাকাসহ সর্বমোট ৯০ লাখ ৮৬ হাজার ৭৬০ টাকায় ইতোমধ্যে ৭ হাজার ৭৮০ জন কৃষকের প্রত্যেককে ১ বিঘা জমির জন্য ধানের চারা বিতরণ করা হয়েছে।

প্রণোদনা কার্যক্রমে গমের ক্ষেত্রে উপকারভোগী কৃষকের সংখ্যা ৮৭ হাজার ২৫০ জন, ভুট্টার ক্ষেত্রে ১ লাখ ৪০ হাজার ১৫০ জন, সরিষার ক্ষেত্রে ২ লাখ ৯ হাজার ৯০০ জন, চীনাবাদামের ক্ষেত্রে ৭ হাজার ২০০ জন, গ্রীষ্মকালীন তিল এর ক্ষেত্রে উপকারভোগী কৃষকের সংখ্যা ২২ হাজার ৫০০ জন, মুগের ক্ষেত্রে ৩৯ হাজার ৯০০ জন, খেসারির ক্ষেত্রে ৯ হাজার জন, মাসকলাইয়ের ক্ষেত্রে ২০ হাজার ৩০০ জন, ফেলনের ক্ষেত্রে ৩ হাজার জন এবং বিটি বেগুনের ক্ষেত্রে উপকারভোগী কৃষকের সংখ্যা ২ হাজার ১ জন।

প্রণোদনা কার্যক্রমভুক্ত কৃষি উপকরণ সহায়তার পরিমাণ:
গমের ক্ষেত্রে প্রতি কৃষক ১ বিঘা জমির জন্য ২০ কেজি গম বীজ, ২০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার পাবেন। এতে ব্যয় হবে ১ হাজার ৬৪৫ টাকা। ভুট্টার ক্ষেত্রে প্রতি কৃষক ১ বিঘা জমির জন্য ২ কেজি ভূট্টা বীজ, ২০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার পাবেন। ব্যয় হবে ১ হাজার ৩০২ টাকা। সরিষার ক্ষেত্রে প্রতি কৃষক ১ বিঘা জমির জন্য ১ কেজি সরিষা বীজ, ২০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার পাবেন। ব্যয় হবে ৭৭৬ টাকা। চীনাবাদামের ক্ষেত্রে প্রতি কৃষক ১ বিঘা জমির জন্য ১০ কেজি চীনাবাদাম বীজ, ১০ কেজি ডিএপি ও ৫ কেজি এমওপি সার পাবেন। ব্যয় হবে ১ হজার ৫১৩।
 
গ্রীষ্মকালীন তিলের ক্ষেত্রে প্রতি কৃষক ১ বিঘা জমির জন্য ১ কেজি তিল বীজ, ২০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার পাবেন। ব্যয় হবে ৭৮০ টাকা।
 
গ্রীষ্মকালীন মুগের ক্ষেত্রে প্রতি কৃষক ১ বিঘা জমির জন্য ৫ কেজি মুগ বীজ, ১০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার পাবেন। ব্যয় হবে ৯৯৮ টাকা। খেসারির ক্ষেত্রে প্রতি কৃষক ১ বিঘা জমির জন্য ৮ কেজি খেসারি বীজ, ১০ কেজি ডিএপি ও ৫ কেজি এমওপি সার পাবেন। ব্যয় হবে ১ হাজার ২৪ টাকা।
 
মাসকলাইয়ের ক্ষেত্রে প্রতি কৃষক ১ বিঘা জমির জন্য ৫ কেজি মাসকলাই বীজ, ১০ কেজি ডিএপি ও ৫ কেজি এমওপি সার পাবেন। ব্যয় হবে ৮৪০ টাকা।
 
ফেলনের ক্ষেত্রে প্রতি কৃষক ১ বিঘা জমির জন্য ৭ কেজি ফেলন বীজ, ১০ কেজি ডিএপি ও ৫ কেজি এমওপি সার পাবেন। ব্যয় হবে ৯৩৯ টাকা। বিটি বেগুনের ক্ষেত্রে প্রতি কৃষক ১ বিঘা জমির জন্য ২০ গ্রাম বিটি বেগুন বীজ, ১৫ কেজি ডিএপি ও ১৫ কেজি এমওপি সার পাবেন। ব্যয় হবে ৭৪৫ টাকা।
 
মোট ৫৮ কোটি ৭৭ লাখ ১৯ হাজার ৩১৯ টাকা ব্যয়ে ৭২ হাজার ৩০৬ হেক্টর জমিতে গম, ভুট্টা, সরিষা, ফেলন, খেসারি, গ্রীষ্মকালীন মুগ, গ্রীষ্মকালীন তিল, মাসকলাই, চীনাবাদাম ও বিটি বেগুন ফসল চাষ করে ৭২৭ কোটি ৫৯ লাখ ৫০ হাজার ৯০০ টাকার ফসল উৎপাদন সম্ভব হবে বলে জানান কৃষমন্ত্রী।
 
প্রণোদনা কার্যক্রমে মঞ্জুরিকৃত অর্থ কৃষি মন্ত্রণালয়ের বাজেট বরাদ্দ থেকে সংকুলান করা হবে। এ জন্য কোনো অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দের প্রয়োজন হবে না বলেও জানান মতিয়া চৌধুরী।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৭/আপডেট: ১৪৫০ ঘণ্টা
এমআইএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।