ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

লাভবান হচ্ছেন চাষিরা, বাড়ছে ড্রাগন ফলের চাষ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৭
লাভবান হচ্ছেন চাষিরা, বাড়ছে ড্রাগন ফলের চাষ লাভবান হচ্ছেন চাষিরা, বাড়ছে ড্রাগন ফলের চাষ

নরসিংদী: বিদেশি সুস্বাদু ড্রাগন ফলের চাষ বাড়ছে নরসিংদীতে। বিক্রি করে বেশ ভালোই লাভবান হওয়ায় জেলাজুড়ে ফলটি ছড়িয়ে দিচ্ছেন চাষিরা।

ক্যাকটাস গোত্রের ড্রাগন ফলের গাছ দেখতেও ক্যাকটাসের মতোই। প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও বিভিন্ন ধরনের ভেষজ গুণ রয়েছে স্বাস্থ্যকর ও মিষ্টি ফলটিতে, যা হার্টের রোগ, কোষ্ঠকাঠিন্য, ব্লাড প্রেসার ও ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক।

চাষিরা বলছেন, অল্প জায়গায় স্বল্প খরচেই ড্রাগনের চাষ করা যায়। ফসলি জমি ছাড়াও বাড়ির ছাদে টবেও ফলে। রাসায়নিক সার ও কীটনাশক লাগে না, সামান্য পরিচর্যা করলেই গাছে ফল ধরে।

প্রতি হেক্টর জমিতে ড্রাগন চাষে ব্যয় হয় দেড় থেকে দুই লাখ টাকা। বছরে একটি গাছ থেকে প্রায় ১৪০টি ফল পাওয়া যায়। এসব ফল আকারভেদে ৪৫০-৬৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়।

এসব কারণে থাইল্যান্ড-ভিয়েতনামের জনপ্রিয় ফলটি চাষে দিন দিন আগ্রহী হচ্ছেন জেলার লোকজন। বিশেষ করে সদর উপজেলার উত্তর শিলমান্দী ও রায়পুরা উপজেলায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

কৃষি কর্মকর্তারা জানান, সব ধরনের মাটিতেই ড্রাগন ফলের চাষ করা যায়। তবে জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ বেলে-দোঁআশ মাটি বেশি উপযোগী। নরসিংদীর মাটি-আবহাওয়া এ ধরনের হওয়ায় ২০১৩ সাল থেকে পরীক্ষামূলকভাবে চাষ শুরু হয়। মাত্র ২-৩ বছরেই বেশ পরিচিত হয়ে উঠেছে ফলটি।


সরেজমিনে দেখা গেছে, ফসলি জমির পাশাপাশি রায়পুরার প্রায় প্রতিটি বাড়ির আঙিনা ও ছাদে ড্রাগন ফলের চাষ হচ্ছে। উপজেলার চর মরজালের সৌখিন চাষি রহিম বাংলানিউজকে বলেন, ‘ঢাকার একটি ফলের দোকান থেকে ড্রাগন ফল কিনে খাওয়ার পর বেশ ভালো লাগে। পরে নার্সারি থেকে গাছ সংগ্রহ করে বাড়ির ছাদে লাগাই। এ বছরও বেশ কিছু ফল ধরেছে’।

বাড়ির ছাদে বেশ কয়েকটি ড্রাগন ফলের গাছ লাগিয়েছেন একই এলাকার আ. সালামও। তিনি বলেন, বাড়ির ছাদে টবে বা ড্রামের মধ্যে জৈব সারের মাটি ফেলে তাতে ড্রাগন চারা পুঁতে দিলেই হয়। তিন ফুট উঁচু হওয়ার পর শক্ত চিকন খুঁটির সঙ্গে সাইকেলের পুরনো টায়ার ঝুলিয়ে দিলেই তাতে ডালপালা বিস্তার করে লতানো গাছটি। কয়েক মাস পরে ফুল ফোটে এবং ফল আসে।

সদরের শীলমান্দি গ্রামের সালাম জানান, তিনি ৫ শতাংশ ফসলি জমিতে ১০০টির বেশি ড্রাগন গাছ লাগিয়েছিলেন। প্রত্যেকটি গাছই এখন ফুলে-ফলে ভরা। প্রতি কেজি ৪৫০ টাকা দরে ইতোমধ্যে এক মণেরও বেশি ফল বিক্রি করেছেন। আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত ফল পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন তিনি।

অন্য ফসলের পাশাপাশি ড্রাগন চাষ বেশি লাভজনক বলেও জানান এসব চাষি।

জেলা সদরের উপজেলা কৃষি সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, যুব উন্নয়ন অধিদফতরের আর্থিক সহায়তায় ড্রাগন চাষে আগ্রহী চাষিদেরকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর। তাদের মাঝে বিতরণ করা ড্রাগনের চারা থেকেই এখন ফল হচ্ছে। এখন বাণিজ্যিকভাবে সেগুলো বিক্রি করছেন তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১২১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৭
এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।