ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

মাটিতে মিশে গেল লালমনিরহাটের কৃষকের স্বপ্ন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০১৭
মাটিতে মিশে গেল লালমনিরহাটের কৃষকের স্বপ্ন শ‍ুক্রবারের দমকা হওয়ায় মাটিতে লুটিয়ে পড়া আমন খেত

লালমনিরহাট: কঠোর পরিশ্রম করে দুই দফা বন্যার হাত থেকে আমন ধানের ক্ষেত রক্ষা করতে পারলেও শুক্রবারের (২০ অক্টোবর) দমকা হাওয়া ও বৃষ্টিতে মাটিতে মিশে গেছে লালমনিরহাটের কৃষকের স্বপ্ন।

শুক্রবার দিনগত রাতে বর্ষণ ও দমকা হাওয়ায় ধান ক্ষেত মাটিতে লুটিয়ে পড়ে অভাবনীয় ক্ষতি হয়েছে কৃষিতে।

কৃষকরা জানান, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর আগাছা ও কুচরীপানা পরিষ্কার করে প্রয়োজনীয় সার ও পরিচর্যার মাধ্যমে আমন ক্ষেত রক্ষা করতে সমর্থ হন জেলার হাজার হাজার কৃষক।

বন্যার পানির সঙ্গে আসা পলিতে বেশ মোটা তাজাই হয়ে উঠেছিল আমনের ক্ষেত। শুক্রবার দিনগত রাতে বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ায় মুহূর্তেই লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে তাদের স্বপ্ন। মাঠের পর মাঠ উঠতি আমনের ক্ষেত মাটিতে শুয়ে পড়েছে। পানিতে পড়ে যাওয়ায় এসব ধান সমূলে চিটা হয়ে যাবে বলে কৃষকদের আশঙ্কা।

শ‍ুক্রবারের দমকা হওয়ায় মাটিতে লুটিয়ে পড়া আমন খেতজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, এ বছর জেলার ৫টি উপজেলায় ৮২ হাজার ২৫৯ হেক্টর জমিতে আমন রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও অর্জন হয়েছে ৮৪ হাজার ৭১০ হেক্টর।

মহিষখোচা এলাকার প্রান্তিক কৃষক আব্দুল মজিত বাংলানিউজকে জানান, স্থানীয় এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে প্রায় এক বিঘা জমি বর্গা নিয়ে আমন রোপণ করেন তিনি। গেল দুই দফা বন্যায় ডুবে গেলেও আপ্রাণ চেষ্টা ও পরিচর্যায় ধানের অবস্থা ফিরিয়ে আনেন। কিন্তু গত রাতের বৃষ্টি ও বাতাসে তার সব ধান গাছ মাটিতে শুয়ে পড়েছে। আর মাত্র ২০/২২ দিন হলেই ধান গোলায় নিতে পারতেন বলে জানান এ কৃষক। উঠতি ধান নষ্ট হওয়ায় পরিবার পরিজনের খাবার শুধু নয়, ঋণের কিস্তি নিয়েও চিন্তায় পড়েছেন তিনি।

ভাদাই এলাকার কৃষক নওসের আলী, আলকাস আলী, তমেজ উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, খুব বেশি হলে ১২/১৫ দিনের মধ্যে ধান ঘরে তুলতে পারতেন তারা। এ সময় হঠাৎ এ বাতাস তাদের ধান গাছ মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে। গত বছরও একই ভাবে তাদের জমির ধান চিটায় পরিণত হয়েছিল। এবারও একই পরিণতি। ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার সুযোগও মিলছে না তাদের।

কমলাবাড়ি এলাকার সবজি চাষি করিম মিয়া জানান, এ বৃষ্টি আর দমকা হওয়ায় তার এক বিঘা জমির পটল, করলা, লাউ ও শীমের যথেষ্ট ক্ষতি হয়েছে। প্রায় সবগুলো ক্ষেতের মাচাং ভেঙে সবজির ডাল পালা ছিড়ে গেছে বাতাসে।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ পরিচালক বিধু ভুষন রায় বাংলানিউজকে জানান, এটা প্রাকৃতিক দুর্যোগ। বাতাসে আমন ক্ষেত মাটিতে পড়ে যাওয়ায় ধানের ক্ষতি হচ্ছে। তবে সমূলে ক্ষতি হবে না। ধানে চিটার পরিমাণ কিছুটা বেড়ে যাবে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫০ ঘণ্টা, ২১ অক্টোবর, ২০১৭
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।