ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

মুগ ডাল চাষে বাজিমাত, ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত কৃষক

শফিকুল ইসলাম খোকন, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২১৭ ঘণ্টা, মে ৮, ২০১৮
মুগ ডাল চাষে বাজিমাত, ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত কৃষক নারী-শিশু নিয়ে সম্মিলিতভাবে ডাল তুলছেন কৃষক। ছবি: বাংলানিউজ

পাথরঘাটা (বরগুনা): বরগুনার পাথরঘাটা উপকূলের প্রান্তিক জনপদে এ বছর মুগ ডালের ফলনে বাজিমাত করেছেন কৃষক। মাঠ ভরা সবুজের সমারোহ। চোখ যত দূর যায়, ততো দূরই সবুজ আর সবুজ। যেন ছোট ছোট মুগ ডাল গাছের প্রতিটি ডগাতেই কৃষকের হাসি ফুটছে। তবে ফলন বাম্পার হলেও ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষক।

একটা সময় এ অঞ্চল এক ফসলি হিসেবে ছিল। কিন্তু সিডর পরবর্তী সময় থেকে এ অঞ্চলের মানুষ এখন একাধিক ফসলের দিকে ঝুঁকছে।

এছাড়া এখানের অর্থকরী রবি শস্য সোনামুখী মুগ ডাল এক সময় দেশ-বিদেশ জুড়ে সমাদৃত ছিল। কিন্তু কৃষি বিভাগের হাইব্রিড মুগ ডালের উৎকর্ষতার কারণে সে সোনামুখী মুগ ডাল এখন বিলুপ্তির পথে। অধিক ফলন পাওয়ার আশায় কৃষকরাও এখন সোনামুখী মুগ ডালের পরিবর্তে হাইব্রিড মুগ ডালই চাষ করছেন।
সম্মিলিতভাবে ডাল তুলছেন কৃষক।  ছবি: বাংলানিউজসরেজমিনে দেখা গেছে, পাথরঘাটা উপজেলার চরদুয়ানী, কাঠালতলী, কাকচিড়া, পাথরঘাটা সদর, কালমেঘা, রায়হানপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় কৃষকরা মুগ ডাল চাষ করেছেন। গ্রামের পর গ্রাম, মাঠের পর মাঠ জুড়ে দেখা যায় মুগ ডালেরই সমারোহ। ভালো ফলন হওয়ায় কৃষকদের মুখেও হাসি। তারা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নারী-শিশুসহ সম্মিলিতভাবে ডাল তুলছেন।

ছোট পাথরঘাটা গ্রামের হাবিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমি এক একর ৪০ শতাংশ জমিতে মুগ চাষ করেছি। ভালো ফলন হয়েছে। তবে প্রথমে ভালো দাম পেলেও এখন নানা সিন্ডিকেটের কারণে দাম কম পাচ্ছি।
মুগ ডালের বাম্পার ফলন।  ছবি: বাংলানিউজ
কাকচিড়া গ্রামের জাকির, সোনা মিয়া, বাবুলসহ একাধিক কৃষকরা বাংলানিউজকে বলেন, স্থানীয় আড়তদাররা পাইকারদের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা আনার সুযোগে আমাদের স্বার্থ না দেখে সিন্ডিকেট করে ডালের দাম নিয়ন্ত্রণ করছেন।

তারা আরও বলেন, বৈশাখের প্রথম দিকে প্রতি মণ মুগ ডাল দুই হাজার ৬০০ থেকে দুই হাজার ৮০০ টাকার মধ্যে ছিল। কিন্তু স্থানীয় ও পাথরঘাটার বাইরের আড়তদারদের সিন্ডিকেটের কারণে বর্তমানে প্রতি মণ মুগ ডালের দাম দুই হাজার থেকে দুই হাজার ৫০ টাকায় নেমে এসেছে। ফলে আমরা ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।
মুগ ডালের ফলনে মাঠে সবুজের সমারোহ।  ছবি: বাংলানিউজপাথরঘাটা উপজেলা সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আ. হাকিম বাংলানিউজকে বলেন, চলতি বছরে পাথরঘাটা উপজেলায় ১১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড মুগ ডাল চাষ হয়েছে। যার মধ্যে নয় হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে সোনা মুগ, এক হাজার ৩৮০ হেক্টর জমিতে কান্তি মুগ, ৯২০ হেক্টর জমিতে বারি-৬ চাষ করা হয়। এছাড়া গত বছরের তুলনায় ৬০ ভাগ পতিত জমিতেও মুগ ডাল ফলানো হয়েছে এবার।

তিনি আরো বলেন, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের হিসেব অনুযায়ী- এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে মুগ ডালের চাষ করা হয়েছে এবং গত বছরের তুলনায় এ বছর দ্বিগুণ ফলনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এছাড়াও হেক্টর প্রতি ৮৩০ কেজি ডাল ফলনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮০৯ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০১৮
টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।