ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

বিষ দিয়ে ঘাস পোড়ানোয় কমছে জমির উর্বরতা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২০৬ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১৮
বিষ দিয়ে ঘাস পোড়ানোয় কমছে জমির উর্বরতা অাগাছানাশক দেওয়ায় মরে যাওয়া ঘাস। ছবি: বাংলানিউজ

কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ায় কৃষি জমিতে আগাছানাশকের ব্যবহার বাড়ছে। ফলে জমির উর্বরতা কমে যাচ্ছে।

সম্প্রতি শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধি ও শ্রমিকের অভাবের কারণে কৃষকরা আগাছানাশক ব্যবহারে ঝুঁকছে। জমি প্রস্তুত করার আগে আগাছা দমন করা জরুরি।

 

ইতোপূর্বে দেখা গেছে, আগাছা দমন করে সেগুলো ক্ষেতের পাশে স্তুপ করে রাখা হতো। পরে চাষের সময় সেগুলো মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হতো। ফলে ফসলের জমির উর্বরতা ও অনুজীবের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতো। বর্তমানে আগাছা দমনে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহারের ফলে সেগুলো পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। সময় ও খরচ কমার সঙ্গে সঙ্গে মাটির ভৌত গুণাগুণও কমছে। পরিবেশ পড়ছে হুমকির মুখে। মাটিতে অনুজীবের সংখ্যাও কমে যাচ্ছে।

এছাড়া আসন্ন কোরবানী উপলক্ষে পারিবারিকভাবে যেসব খামারি রয়েছে তারাও পড়েছেন বিপাকে। মাঠে গবাদি পশুর জন্য কাঁচা ঘাষ পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে গো-চারণ ভূমিও। অাগাছানাশক দেওয়ায় মরে যাওয়া ঘাস।  ছবি: বাংলানিউজকুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার সদরপুর এলাকার কৃষক রবিউল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আমার এক বিঘা জমিতে ফসল উঠে যাওয়ার পরে অতিরিক্ত আগাছা থাকায় বিষ দিয়ে ঘাস পুড়িয়ে দিয়েছি। সকালে বিষ দিলে বিকেলেই মরে যাচ্ছে আগাছা। ফলে আগাছাও দমন হয়েছে আবার খরচও কম হয়েছে। এক বিঘা জমির আগাছা দমন করতে হলে ১৫ থেকে ২০টা শ্রমিক লাগতো। সেখানে ১৮০ টাকার বিষ দিলেই আগাছা পুড়ে যাচ্ছে।

ঝুমুর আলী নামে অপর এক কৃষক বলেন, আমার জমিতে ধান কাটার পরে প্রচুর পরিমাণে আগাছা জন্মায়। আমি প্যারট নামের একটি বিষ প্রয়োগ করে মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই জমির সব আগাছা মেরে ফেলি। অাগাছানাশক দেওয়ায় মরে যাওয়া ঘাস।  ছবি: বাংলানিউজতিনি আরো বলেন, শ্রমিক দিয়ে ঘাস মাটিতে পুঁতে দিলে মাটির উর্বরতা বাড়তো তবে খরচ বেশি হতো।  

ওই এলাকার রফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, ফসল কাটার পরে যে জমিতে গরু-মহিষ ঘাষ খেতো এখন সেখানে বিষ প্রয়োগ করা হচ্ছে। ফলে গো-খাদ্য কমে যাচ্ছে। এছাড়া পাখিরা পোকামাকড়ও পাচ্ছে না। এতে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে।  

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রমেশ চন্দ্র ঘোষ বাংলানিউজকে জানান, কৃষক সময় ও টাকা বাঁচানোর জন্য আগাছা দমনে অতিরিক্ত মাত্রায় আগাছানাশক ব্যবহার করছে। ফলে মাটিতে অনুজীবের সংখ্যা কমে যায়। যা মাটির স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এতে মাটির উর্বরতা হ্রাস পায় এবং ফসলের কাঙ্খিত ফলন পাওয়া যায় না। এটি প্রাকৃতিক খাদ্য শৃংখল নষ্ট করে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট করে দেয়।

এছাড়া কৃষি জমির আগাছা পশুখাদ্য ও জ্বালানি হিসেবে এবং জমির জৈব পদার্থ আবর্তনে ব্যবহৃত হতে পারে।

তিনি আরও জানান, কৃষি জমিতে আগাছা নিয়ন্ত্রণে রাসায়নিক ব্যবহার না করায় উত্তম।  

বাংলাদেশ সময়: ০৮০৪ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১৮
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।