ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

লোকসানের শঙ্কায় তরমুজ বিক্রেতারা

মুশফিক সৌরভ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭১৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০২১
লোকসানের শঙ্কায় তরমুজ বিক্রেতারা লোকসানের শঙ্কায় তরমুজ বিক্রেতারা। ছবি: বাংলানিউজ

বরিশাল: মহামারি করোনা প্রাদুর্ভাবে দেশব্যাপী চলমান লকডাউনের কারণে বরিশালে হতাশ তরমুজ বিক্রেতারা। শুরুতে তরমুজের পাইকারি ও খুচরো দোকানগুলোতে ভালো বিক্রি থাকলেও এখন একেবারেই নেই।

ফলে প্রায় অলস সময় পার করছেন তরমুজ ব্যবসায়ীরা। আর পরিস্থিতি এভাবে চলতে থাকতে মৌসুম হিসেবে লোকসানের শঙ্কায়ই করছেন তারা।

বরিশাল নগরের পোর্টরোড বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, পাইকারি বিক্রেতারা তাদের দোকানের সামনে ও ভেতরে শত শত তরমুজ সাজিয়ে রাখা রেখেছেন। তবে তেমন একটা ক্রেতার দেখা নেই।

পাইকাররা বলছেন, পটুয়াখালী ও ভোলার বিভিন্ন এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এখানে যেমন তরমুজ আসে, তেমনি এখান থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় তরমুজ নেওয়াও হয়। তবে লকডাউনের কারণে বিগত সময়ের থেকে এবারে তরমুজের কাটতি অনেকটাই কম।

উজিরপুরের শিকারপুর বাজারের পাইকারি তরমুজ ব্যবসায়ী মো. রুহুল মুন্সি জানান, পিরোজপুর জেলার স্বরুপকাঠিসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে তিনি তরমুজ শুরু করেন। তবে কঠোর লকডাউন শুরু হওয়ার পর ক্রেতারা আসতে পারছেন না, তাই বাধ্য হয়ে এখন খুচরও বিক্রি করছেন।

আর দোকানে পরে থাকলে ভেতরে ভেতরে তরমুজ নষ্ট হয়ে লোকসানের শঙ্কার কথা জানান আলতাফ বিশ্বাস নামের অপর ব্যবসায়ী।

তিনি জানান, বেশিদিন পরে থাকলে তরমুজ নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তাই যে দরেই কেনা হোক না কেন, বিনিয়গের টাকা ওঠাতে বিক্রি করে ফেলাই ভালো। আবার নয়তো শ্রমিকদের টাকা দেওয়াটাও কঠিন হয়ে যাবে।

লোকসানের শঙ্কায় তরমুজ বিক্রেতারা।  ছবি: বাংলানিউজ

এদিকে খুচরো বিক্রেতারা জানান, লকডাউনের কারণে যানবাহনের খরচ বেড়ে গেছে, তাই এ সময়টাতে তরমুজ কিনে খরচ মিটিয়ে তা বিক্রি করতে হয় চড়া দামে। আর সেই দামের করাণেই হয়েতা ভোক্তা পর্যায়ে তেমন একটা আগ্রহ নেই তরমুজের প্রতি।

ভোক্তা পর্যায়ের ক্রেতারাও বলেছেন, যে দাম হাঁকা হচ্ছে তাতে পছন্দসই তরমুজ কিনে খাওয়াটা সত্যিই কঠিন।

আতিকুর রহমান নামে একজন প্রকৌশলী বলেন, মৌসুমের শুরুতে পেপার-পত্রিকার মাধ্যমে বাম্পার ফলনের বিষয়টি চোখে পড়ার পর বুঝেছিলাম এবারে তরমুজের দাম কম হবে। কিন্তু এখন তো দেখছি প্রতিদিনই এর দাম বাড়ছে। অসাধু ব্যবসায়ীরা এ পুষ্টিকর ফলটির কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বাজার দর বাড়াচ্ছে কিনা সেদিকে সরকারের দৃষ্টি দেওয়া উচিত। কারন এতে কৃষকও লাভবান যেমন হচ্ছে না, তেমনি ভোক্তারাও আগ্রহ হারাচ্ছে।

তবে ব্যবসায়ীরা বলেছেন, তরমুজের দাম বাড়ার পেছনে তাদের কোনো হাত নেই। লকডাউনের কারণে চাহিদা মতো ফলটির যোগান না থাকার কারণেই ফলটির দাম বেড়েছে। আর কৃষকরা বলছেন, তরমুজের ফলন ভালো হলেও, গত মাসের শেষদিকে এসে বেশকিছুদিন অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে নিচু ক্ষেতগুলো তলিয়ে যাওয়ায় তরমুজের ক্ষতিসাধন হয়েছে এ অঞ্চলে।

ক্রেতারা বলছেন, গত সপ্তাহের ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজির তরমুজ বর্তমানে ৬০-৭০ টাকা। যেখানে পিস হিসাবে ক্রয় করতেন ১২০ থেকে ১৬০ টাকা। সেখানে চলমান লকডাউনের শুরুতেই তরমুজের দাম উঠে যায় ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা।  

বাংলাদেশ সময়: ০৭১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০২১
এমএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।