ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

হাওরের ধান কাটায় শ্রমিক সংকট নেই: কৃষিমন্ত্রী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০২১
হাওরের ধান কাটায় শ্রমিক সংকট নেই: কৃষিমন্ত্রী

ঢাকা: হাওরের ধান কাটার জন্য পর্যাপ্ত শ্রমিক ও যন্ত্রপাতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। গত বছর হাওরের ধান কাটার জন্য যেভাবে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, এ বছরও সেভাবে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

মন্ত্রী বলেন, দেশের উত্তরাঞ্চলসহ বিভিন্ন জেলা থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শ্রমিকদের নিয়ে আসা হয়েছে। এ মুহূর্তে হাওরে ধান কাটার জন্য শ্রমিকের কোনো সংকট নেই।

একই সঙ্গে কম্বাইন হারভেস্টার, রিপারসহ পর্যাপ্ত ধান কাটার যন্ত্র হাওরে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে হাওরের প্রায় ৪০ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে বলে জানান কৃষিমন্ত্রী।

বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে অনলাইনে বার্ষিক উন্নয়ন প্রকল্পের (এডিপি) বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় এসব কথা বলেন মন্ত্রী। এ সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাইকে ধান কাটায় এগিয়ে আসার ও এ বিষয়ে যার যার অবস্থান থেকে সহযোগিতার আহ্বান জানান তিনি।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে এ বছর ধান চালের উৎপাদন বাড়াতে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। আমাদের চেষ্টার কোনো কমতি ছিল না। বেশি জমি চাষের আওতায় আনা, উন্নত জাতের ও হাইব্রিড জাতের ধান চাষে অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল। বীজ, সারসহ নানা প্রণোদনা কৃষকদের দেওয়া হয়েছে। হাইব্রিড ধানের বীজ সহায়তা বাবদ ৭৬ কোটি টাকার প্রণোদনা কৃষকদের দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মীরা করোনাকালে জীবনের ঝুঁকি নিয়েও কঠোর পরিশ্রম করেছেন, কৃষকের পাশে থেকেছেন। নতুন উন্নত জাতের ধান চাষের জন্য চাষিদের উদ্বুদ্ধ করেছেন, প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়েছেন।

তিনি বলেন, এসব উদ্যোগের ফলে গত বছরের তুলনায় এ বছর ১ লাখ ২০ হাজার হেক্টরেরও বেশি জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। একই সাথে, গত বছরের তুলনায় প্রায় ৩ লাখ হেক্টরেরও বেশি জমিতে হাইব্রিডের আবাদ বেড়েছে। আশা করা যায়, গত বছরের তুলনায় এ বছর বোরোতে ৯ থেকে ১০ লাখ টন বেশি উৎপাদন হবে।

সভায় জানানো হয়, চলমান ২০২০-২১ অর্থবছরের আরএডিপিতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতায় ৮২টি প্রকল্পের অনুকূলে মোট ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ আছে। মার্চ ২০২১ পর্যন্ত বাস্তবায়ন অগ্রগতি হয়েছে ৪৯ দশমিক ১০ শতাংশ, যেখানে জাতীয় গড় অগ্রগতি ৪১ দশমিক ৯২ শতাংশ।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসেব অনুযায়ী, এ বছর হাওরভুক্ত ৭টি জেলা- কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সিলেট, হবিগঞ্জ ও ব্রাক্ষণবাড়িয়ায় বোরো আবাদ হয়েছে ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৫৩৪ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে শুধু হাওরে আবাদ হয়েছে ৪ লাখ ৫১ হাজার ৭৭০ হেক্টর জমিতে। ২১ এপ্রিল পর্যন্ত হাওরভুক্ত ৭টি জেলায় ২ লাখ ৩১ হাজার ৩৬৫ হেক্টর জমির ধান কর্তন হয়েছে, যা শতকরা হিসাবে প্রায় ২৫ ভাগ। অন্যদিকে শুধু হাওরের ১ লাখ ৮০ হাজার ৭২৯ হেক্টর জমির ধান কর্তন হয়েছে, যা শতকরা হিসাবে প্রায় ৪০ ভাগ।

এ বছর সারাদেশে বোরোতে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪৮ লাখ ৫ হাজার ২০০ হেক্টর, আবাদ হয়েছে ৪৮ লাখ ৮৩ হাজার ৭৬০ হেক্টর জমিতে। এ বছর বোরোতে ২ কোটি ৫ লাখ টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।

সভাটি সঞ্চালনা করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম। এ সময় মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সংস্থাপ্রধানসহ প্রকল্প পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০২১
জিসিজি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।