ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

ফলের প্রাচুর্যে ঢেকে গেছে অরবরইয়ের ডাল!

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১১ ঘণ্টা, মে ২০, ২০২১
ফলের প্রাচুর্যে ঢেকে গেছে অরবরইয়ের ডাল! ফলের প্রাচুর্যে ঢেকে গেছে অরবরইয়ের ডাল। ছবি: বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন

মৌলভীবাজার: বৃক্ষ তার সার্থকতা খুঁজে পায় ফলে। ফুল দিয়ে শুরু হয় তার জয়যাত্রা।

তারপরে ফলে এসে অর্থাৎ ফল ধরার মাধ্যমে সমাপ্তি। প্রকৃতির এই চিরায়ত নিয়ম প্রতিষ্ঠাকাল থেকে হয়ে আসছে। ফি বছর বৃক্ষের সব অঙ্গপ্রতঙ্গে যেন নবযৌবন আসে ফল ধরার প্রাথমিক পর্যায়টিকে সু-সম্পন্ন করতে।

কোনো কোনো বৃক্ষ তার আপন ‘সার্থকতার শীর্ষ’ স্পর্শ করে। তখন সে গাছে ধরে প্রচুর প্রচুর ফল! যেন ডাল-পাতা কিছুই আর দেখা যায় না। এ যেন এই অরবরই গাছটির মতোই। গাছের ডাল না দেখা বিপন্নপ্রায় ‘অরবরই’।

সম্প্রতি শ্রীমঙ্গল উপজেলায় এক জনপদে এমন বৃক্ষ পথচারীদের দৃষ্টিতে সৌন্দর্য বিলিয়ে দিয়েছে। যে যার মতো করে চলাচলের সময় এই গাছটির দিকে মুগ্ধ চোখে তাকাচ্ছেন। ফলপ্রেমীদের কেউ কেউ এর একটি ফল মুখে তোলার ইচ্ছাটিও গোপন করে রেখেছেন। এই ফলের সিলেটি আঞ্চলিক নাম লেউওর। এছাড়াও অরবরি, হরিফল, নলতা প্রভৃতি নামে ডাকা হয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম Phyllanthus acidus এবং এটি Phyllanthaceae পরিবারের উদ্ভিদ। গাছটির বিপরীত পাশেই একটি পুকুর। প্রতিদিন সকালে এখানে গোসল করতে আসেন নানা লোকজন। তাদের মধ্যে ফলপ্রেমীদের কেউ কেউ এই ফলে ভরা গাছটির দিকে একাধিকবার দৃষ্টি নিক্ষেপ করেন। আপনা থেকেই নিচে কয়েকটি ফল পড়ার সঙ্গে সঙ্গে তুলে নিয়ে এর প্রাকৃতিক স্বাদ স্পর্শ করেন।

ছবি ধারণের সময় গোসল করতে আসা এমন একজনকে এ ফলটি স্বাদ গ্রহণ করতে দেখা যায়। তিনি বলেন, আমি প্রতিদিন গোসল করতে এসে ভাগ্যক্রমে নিচে পড়লে কুঁড়িয়ে খাই।  এই ফলের আচার খুব ভালো হয়।

গাছপূর্ণ এ বাড়ির গৃহকর্তা আনিস দেওয়ান বাংলানিউজকে বলেন, এটি টক জাতীয় ফল। টক মানেই তো ভিটামিন-সি থাকে। লেবুর বিকল্প ফল হিসেবে আমি প্রায় ১-১২ বছর আগে লাগিয়েছিলাম। দুই-তিন বছর ধরে প্রচুর ফল আসছে। ডাল থেকে ফল ধরে। ফলভরা এ গাছটি দেখতে খুবই ভালো লাগে আমার।  

বিপণন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এত টক ফল তো বেশি খাওয়া যায় না। তাই বিক্রি করে দেই। ছোট সাইজ এবং বড় সাইজের পাইকারী দাম ৩০ থেকে ৫০ টাকা প্রতিকেজি। দেশি ফলবিক্রেতা এসে নিয়ে যায়। প্রতি বছর গাছে এ যাবত গড়ে ৪০ থেকে ৮০ কেজির মতো ধরেছে।

যেহেতু এ ফলে প্রচুর ভিটামিন-সি রয়েছে তাই এটি ত্বকের বিভিন্ন রোগ দূর করে অকাল বার্ধক্য নিয়ন্ত্রণ করে। মৌসুমী জ্বর হলে মুখের রুচি বৃদ্ধি করার ভেষজ উপকারিতা প্রসঙ্গে বলেন তিনি।

এক সময় মাঝারি আকারের উদ্ভিদটি গ্রামবাংলায় প্রচুর পরিমাণে ছিল। বর্তমানে বিপন্নপ্রায়। সাধারণত এর দীর্ঘ হয় তিন মিটার থেকে আট মিটার পর্যন্ত বলে জানান আনিস।

বাংলাদেশ সময়: ০৮১০ ঘণ্টা, মে ২০, ২০২১
বিবিবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।