ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

হিম শীতে সুবাস ছড়াচ্ছে ‘আমের মুকুল’

সোলায়মান হাজারী ডালিম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১, ২০২২
হিম শীতে সুবাস ছড়াচ্ছে ‘আমের মুকুল’ মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে আমের মুকুল। ছবি: বাংলানিউজ

ফেনী: কথায় বলে ‘মাঘের শীতে বাঘে পালায়’। চিরায়ত সেই শীত নেমেছে প্রকৃতিতে।

মাঘের এই হিম শীতে গাছে গাছে ফুটেছে আমের মুকুল। মুকুলের মোহনীয় ঘ্রাণে জড়োসড়ো শরীরটা যেন আড়মোড়া দিয়ে জেগে উঠে। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন, ‘ফাল্গুনে বিকশিত কাঞ্চন ফুল, ডালে ডালে পুঞ্জিত আম্রমুকুল’। কবির ফাল্গুন না এলেও ভরা শীতেই সুবাস ছড়াচ্ছে আম্রমুকুল।  

ফেনী শহর, শহরতলী ও গ্রামের গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে আমের মুকুল। শহর থেকে শুরু করে গ্রামের বসতবাড়ির আঙ্গিনার আম গাছগুলোতে এমন সুন্দর দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। থোকা থোকা মুকুলের ভারে ঝুলে পড়েছে আম গাছের ডালাপালা। আমের মুকুলের ঘ্রাণ বইছে পুরো সবখানে। চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে এই মুকুলের ঘ্রাণ। কোনো কোনো গাছে আমের মুকুল থেকে বেরিয়েছে ছোট ছোট আম গুটি। গাছে মুকুলের সঙ্গে গুটি আমের দেখাও মিলছে। কুয়াশা কম থাকায় মুকুল ভালোভাবে প্রস্ফুটিতও হয়েছে।  বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে এর সুগন্ধ। গ্রামগঞ্জ সর্বত্র আমগাছ তার মুকুল নিয়ে হলদে রং ধারণ করে সেজেছে এক অপরূপ সাজে। গাছে গাছে অজস্র মুকুল দেখে খুশি এলাকার মানুষ।  

অনেকেই ধারণা করছে, আমের মুকুল আসার আগে-পরে যেমন আবহাওয়ার প্রয়োজন, এ বছর তা বিরাজ করছে। ডিসেম্বরের শেষ থেকে মার্চ মাসে প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত আসার আদর্শ সময়। এ সময়ে মুকুলের প্রধান শত্রু কুয়াশা। এখন পর্যন্ত কুয়াশা কম এবং আকাশে উজ্জ্বল রোদ থাকায় আমের মুকুল সম্পূর্ণ প্রস্ফুটিত হচ্ছে।

কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মহিউদ্দিন মজুমদার জানান, আমের প্রকৃত ফলন পেতে হলে অবশ্যই আমগাছে কমপক্ষে দুইবার ইমিডাক্লোরোপিড গ্রুপের কীটনাশক ও ম্যানকোজেব গ্রুপের ছত্রাকনাশক অনুমোদিত মাত্রায় স্প্রে করতে হবে। প্রথমবার আমের মুকুল আসার পর কিন্তু ফুল ফোটার আগে। দ্বিতীয়বার আমের সাইজ মটরদানার মত হলে। এ ব্যাপারে কৃষকদের পরামর্শ প্রদান কৃষি বিভাগ অব্যাহত রেখেছে।  

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রাকৃতিক কারণেই এবার আগেভাগেই আম গাছে মুকুল এসেছে।  

এ বিষয়ে ফেনী সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞানের সহযোগী অধ্যাপক মোশারফ মিলন বাংলানিউজকে বলেন, মাঘের শেষে সারা দেশে আমগাছে মুকুল আসতে শুরু করেছে। অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই আমের মুকুলের মিষ্টি গন্ধে সুবাসিত হয়ে উঠবে দেশ। মুকুলের যত্ন না নিলে আমের ভালো ফলন সম্ভব নয়। অনেকেই শখ করে আমগাছ লাগিয়েছেন, ভালো ফলনের আশায়। কিন্তু সময় মতো সামান্য যত্নের অভাবে এবং পোকা ও রোগের আক্রমণের কারণে আমাদের সেই আশা পূরণ হয় না। আমের মুকুল ও গুটি ঝড়ে যায়। অথচ সময় মতো একটু যত্ন নিলেই আমরা পেতে পারি সুস্বাদু আমের স্বাদ।

আমগাছে বর্ষার আগে জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ় মাসে একবার এবং বর্ষার পর আশ্বিন-কার্তিক মাসে আর একবার সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগ করতে হবে। গাছের নিচে যতটুকু স্থানে গাছের ছায়া পড়ে, ততটুকু স্থানের মাটি কুপিয়ে এই সার প্রয়োগ করতে হবে। সার প্রয়োগের পরপরই হালকা সেচ দিতে হবে। এখনই সময় মুকুলের যত্ন নেওয়ার।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০১, ২০২২
এসএইচডি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।