ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

সিরাজগঞ্জে পানির নিচে শত হেক্টর জমির ধান

স্বপন চন্দ্র দাস, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০২২
সিরাজগঞ্জে পানির নিচে শত হেক্টর জমির ধান

সিরাজগঞ্জ: বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই যমুনার পানি বাড়তে থাকায় তলিয়ে গেছে সিরাজগঞ্জের চার উপজেলার নিম্নাঞ্চলের কাঁচা ও আধাপাকা বোরো ধানসহ বিভিন্ন ফসল।  

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে যমুনা ছাড়াও করতোয়া, ফুলজোড়, বড়ালসহ জেলার অভ্যন্তরীণ নদ-নদীর পানি বাড়ছে।

 

সোমবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পানির সমতল পরিমাপক আব্দুল লতিফ জানান, গত এক সপ্তাহে যমুনার পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে ২ দশমিক ৭৩ মিটার বেড়েছে। আর সর্বশেষ ১২ ঘণ্টায় বেড়েছে ৭ সেন্টিমিটার।  

পাউবো, কৃষি বিভাগ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দ্রুত গতিতে যমুনার পানি বাড়তে থাকায় জেলার সদর, কাজিপুর, শাহজাদপুর ও চৌহালী উপজেলার চরাঞ্চলে অন্তত ২০টি ইউনিয়নের নিচু জমির ফসল তলিয়ে গেছে। এছাড়া অভ্যন্তরীণ করতোয়া ও বড়াল নদীর তীরবর্তী জমির ধানও ডুবে গেছে।  

তলিয়ে যাওয়া ফসলের মধ্যে কাঁচা, আধাপাকা ও পাকা ধান ছাড়াও বাদাম, তিল ও কাউন রয়েছে। অসময়ে হঠাৎ পানি বৃদ্ধির ও জমির ফসল তলিয়ে যাওয়ায় চরাঞ্চলের কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন।  

সদর উপজেলার কাওয়াকোলা ইউনিয়নের কাটেঙ্গা গ্রামের কৃষক মনোয়ার ও শামীম জানান, তাদের চার বিঘা জমির ধান পুরোই নষ্ট হয়ে গেছে। বড় কয়ড়া গ্রামের শাহ আলীর ১২ বিঘা জমির ধান তলিয়ে গেছে। এছাড়া মোহর শেখের পাঁচ, সাইফুলের সাত, মালেকের নয়, রজব আলীর চার, সাইফুলের পাঁচ ও কোরবান আলীর চার বিঘা জমির ধান সম্পূর্ণ তলিয়ে গেছে।  

একই গ্রামের সুরুতজামানের ১০ বিঘা, সুকচানের নয় ও আরশাদের পাঁচ বিঘা জমির বাদাম সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে।  

এ ইউনিয়নের সাত নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুস সালাম বলেন, বড় কয়ড়া গ্রামের অন্তত ২০ জন কৃষকের দেড়শ’ বিঘার মতো জমির ধান ও বাদাম নষ্ট হয়ে গেছে।  

কাওয়াকোলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জিয়া মুন্সী বলেন, এ ইউনিয়নের অন্তত একশ’ হেক্টর জমির বোরো ধান ও ৫০ হেক্টর জমির বাদাম তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা চরম বিপাকে পড়েছেন।  

এদিকে শাহজাদপুর উপজেলার জালালপুর, কৈজুরি, সোনাতনী ও গালা ইউনিয়নের চরাঞ্চলের নিচু জমির ধান ডুবে নষ্ট হয়ে গেছে। এখানকার কৃষকরা বাধ্য হয়েই কাঁচা ও আধাপাকা ধান কেটে গরুকে খাওয়াচ্ছেন।

গালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল বাতেন বলেন, হঠাৎ যমুনার পানি বাড়ায় গোপালপুর, মোহনপুর, শিমুলকান্দি, রতনদিয়া, বেলুটিয়া, তারটিয়া ও ভেড়াখোলা গ্রামের বোরো ধানের জমিগুলো তলিয়ে গেছে।  

শাহজাদপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুস সালাম বলেন, অসময়ে যমুনায় পানি বাড়ায় শাহজাদপুর উপজেলার প্রায় ২০০ বিঘা জমির বোরো ধান ডুবে গেছে। এর মধ্যে ১১৫ বিঘা জমির ধান সম্পূর্ণ ও ৮৫ বিঘা জমির ধান আংশিক ডুবে গেছে।  

সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) আহসান শহিদ সরকার জানান, যমুনার পানি বাড়ায় চার উপজেলায় প্রায় ১৫৯ হেক্টর জমির বোরো ধান তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। বেশ কিছু জমির বাদামও তলিয়ে গেছে। এতে এ অঞ্চলের কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।  

পাউবোর উপ-সহকারী পরিচালক জাকির হোসেন জানান, গত প্রায় দেড় সপ্তাহ ধরে যমুনার পানি বাড়লেও রোববার পানি বৃদ্ধির হার কমছে। দু’একদিনের মধ্যেই কমে যেতে পারে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০২২
এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।