ঢাকা: ‘অধুনাবাদের আলোয় এসো শেকড় খুঁজি’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে দুই দিনব্যাপী শালুক আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মিলন-২০২৩ শুরু হচ্ছে আগামী ১০ মার্চ।
মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়।
আয়োজকরা জানান, শালুক প্রথমবারের মতো এই আয়োজন করতে চলেছে। দুই দিনব্যাপী এই সাহিত্য সম্মেলনে দেশ-বিদেশের পাঁচ শতাধিক কবি-লেখক-অনুবাদক-শিল্পী অংশ নেবেন। ১০ মার্চ, শুক্রবার সকাল সাড়ে নয়টায় সেগুন বাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সম্মিলনের উদ্বোধনীপর্ব অনুষ্ঠিত হবে। ওই দিন একাধিক কর্ম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে এবং অনুষ্ঠান চলবে রাত ৯টা অবধি। কর্ম অধিবেশনগুলোতে দেশি বিদেশি শিল্প-সংস্কৃতি বিষয়ক আলোচনা, কবিতাপাঠ ও সাংস্কৃতিক নানা কর্মকাণ্ড থাকবে।
দ্বিতীয় দিন ১১ মার্চ দিনব্যাপী বিভিন্ন অধিবেশন থাকবে ঢাকার কাঁটাবনস্থ পাঠক সমাবেশে। এ দিনও একাধিক কর্ম অধিবেশন শেষে সম্মিলনের সমাপ্তি ঘোষণা করা হবে।
শালুক সম্পাদক ও সাংবাদিক ওবায়েদ আকাশ বলেন, শালুক অধুনাবাদী চিন্তার পত্রিকা। শালুকের উদ্দেশ্য শুধু বিদেশি সংস্কৃতি ধার করে নয়, নিজস্ব ঐতিহ্য-সংস্কৃতিকে মডেল হিসেবে সারা বিশ্বের কাছে তুলে ধরা, নতুন নতুন মেধার অন্বেষণের মাধ্যমে বাঙালির আত্মপরিচয় অনুসন্ধান করা। লিটল ম্যাগাজিনের যে প্রথাবিরুদ্ধ বা প্রাতিষ্ঠানিকতার বিরুদ্ধে অবস্থান, শালুক তা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে এবং শালুকে প্রকাশিত রচনাগুলো সব সময় ব্যতিক্রম ও নতুন নতুন চিন্তাসমষ্টি।
তিনি বলেন, শালুক তার সাহিত্যিক অন্যতম কর্মকাণ্ড হিসেবে প্রতিমাসে ‘শালুক সাহিত্য আড্ডা’ চালু করেছে। সেখানে নতুন চিন্তা চেতনার তারুণ্যের সমাগম ঘটে। এই কাজ আরও বিস্তৃত পরিসরে করার জন্য প্রথমবারের মতো শালুক আয়োজন করেছে আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মিলনের। শালুক চায় তার কর্মকাণ্ড দেশ-বিদেশের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ুক এবং শালুকের সাহিত্যিক চেতনায় আলোকিত হোক সকল শুভবোধ।
শালুকের সহযোগী সম্পাদক মাহফুজ আল হোসেন বলেন, একটি লিটল ম্যাগাজিনের জন্য এ ধরনের আয়োজন নিঃসন্দেহে ব্যতিক্রমী ঘটনা। ইতোমধ্যেই ‘শালুক’ বাংলা ভাষার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ লিটল ম্যাগাজিন হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছে। দেশ-বিদেশে অগণিত পাঠক-শুভাকাঙ্ক্ষী রয়েছে তার। এই আন্তর্জাতিক সম্মিলনের মাধ্যমে শালুক মূলত তার স্বপ্নকে সমন্বিত করে বিশ্বব্যাপী তুলে ধরতে চায়।
তিনি বলেন, শালুকের স্বপ্ন সীমানাহীন সাহিত্যবিশ্ব হলেও বাঙালিত্বকে শিরোধার্য করে, প্রকৃতিচেতনা ও প্রথাবিরোধিতার ঐশ্বর্যে সামনে অগ্রসর হওয়া। সাহিত্যবিশ্বে প্রবেশ মানে পশ্চিমা বা বিদেশি সংস্কৃতিকে অনুকরণ অনুসরণ নয়, আমদেরও যে একটি বিশাল ও মৌলিক সাংস্কৃতিক জগত রয়েছে, তাকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরা। আমাদের ঐতিহ্য ও নিজস্বতার আলোয় যদি অপরবিশ্ব আলোকিত হতে পারে তবে সেখানেই আমাদের সার্থকতা। শালুকের এই স্বাবলম্বীতার দৃঢ় প্রত্যয় যেমন আমাদের সচেতন করবে, তেমনি তা হবে বিশ্ববাসীর কাছে এক নতুন উদ্দীপনার নাম। শালুকের এ কর্মকাণ্ড অব্যাহত থাকবে। প্রতি দুই বছর পর পর এ আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মিলন অনুষ্ঠিত হবে এবং আগামী বছর শালুকের ২৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান সাড়ম্বরে পালন করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন শালুক-এর সহযোগী সম্পাদক মনিরুজ্জামান মিন্টু।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৩
এমকে/এমজেএফ