ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

আবেগী ভালোবাসায় বইমেলায় আবার দেখা হবে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৩
আবেগী ভালোবাসায় বইমেলায় আবার দেখা হবে

ঢাকা: দোয়েল চত্বর থেকে টিএসসি মোড় পর্যন্ত মানুষের কলরব সন্ধ্যা পেরিয়ে আরও কিছুক্ষণ। বাংলা একাডেমি থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান- অমর একুশে বইমেলার সর্বত্রই ছিল বিদায়ের বিষাদ।

পাঠক-দর্শনার্থী-বিক্রয়কর্মীদের কণ্ঠে যেন অবিশ্বাস, 'এবার মেলা সত্যিই আর বাড়ছে না!' না, সত্যিই মেলার বয়স বাড়েনি। প্রাণের মেলা শেষ। তবে মাসজুড়ে বইকে ঘিরে পাঠকের অনাবিল উচ্ছ্বাস মুগ্ধতা ছড়িয়েছে।

মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে জাপানী যে দর্শনার্থী বইমেলায় এসেছিল, তিনি বাংলা না জানলেও স্ত্রীর প্রিয় বইটার বাংলা অনুবাদ কিনেছেন। কথা হলে জানিয়েছেন- 'আমার স্ত্রী বাংলা জানেন না, তবে তার প্রিয় বইটার বাংলা অনুবাদ দেখলে সে অনেক খুশি হবে, আনন্দিত হবে। আর বাচ্চাদের জন্যও কিনেছি বাংলা বর্ণের বই, যেন তারা বাংলা শিখতে পারে!' বইমেলা জুড়ে শেষদিন ছড়িয়েছে এমন আবেগও।

এইসব আবেগ ভালোবাসা মিলে সেই প্রাচীন প্রবাদই জয়ী হয়েছে- 'শেষ ভালো যার, সব ভালো তার'। শেষটা জমজমাট হয়েই মেলার দুয়ার বন্ধ হলো। ফলে সারা মাস নানা ব্যস্ততায় মেলায় ঢু মারতে না পারলেও শেষদিকে পুষিয়ে দিয়েছেন অনেকে। কেউ কেউ আরও বই কিনতে হবে বলেও এসেছিলেন। কেউ এসেছিলেন মেলায় ঘুরতে কিংবা প্রাণের মেলা শেষ বলে শেষ দিনে আরেকটি মায়াবী বিকেল কাটাতে।

জমজমাট বিক্রিতে প্রকাশকদের মুখেও দেখা গেছে চওড়া হাসি।  

অন্যপ্রকাশের স্বত্বাধিকারী মাজহারুল ইসলাম বলেন, এবার সকলেই অনেক স্বস্তিতে বই কিনতে পেরেছেন। বিক্রিও তুলনামূলক বেশি হয়েছে। তবে শেষ দু'দিন বিক্রিবাট্টায় প্রত্যাশা ছাড়িয়ে গেছে।

কথাপ্রকাশ, উৎস প্রকাশন, সাহিত্য বিকাশ, নালন্দা থেকে শুরু করে প্রতিটি স্টল ও প্যাভিলিয়নের বিক্রয়কর্মীদের দেখা গেছে ফুরফুরে মেজাজে।

শেষ বিকেলে ভিড় বাড়তে থাকে। সন্ধ্যা নামার আগে পুরো মেলা প্রাঙ্গণ ভরে যায় পাঠক-দর্শনার্থীর উপস্থিতিতে। তবে শেষ দিনে দর্শনার্থীর চেয়ে পাঠকের সংখ্যাই বেশি ছিল। বেশির ভাগ মানুষের হাতেই বইয়ের থলে দেখা গেছে। সন্ধ্যার পর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পরিণত হয় লেখক-পাঠক মিলনমেলায়। বিদায়বেলায় লেখকরাও ছিলেন প্রাণোচ্ছল। বিরতিহীনভাবে সারাদিন অটোগ্রাফ দিয়ে গেছেন অনেকে, কোনো ক্লান্তিচিহ্ন দেখা যায়নি।

স্বাধীনতাস্তম্ভের সামনে লেকের পানিতে শেষবারের মতো পা ভিজিয়ে গেছেন অনেকে। সামনের খোলা মাঠে গোল হয়ে বসে আড্ডাটাও যথারীতি ছিল। 'বঙ্গবন্ধু পাঠ' রূপ নেয় ক্লান্ত পাঠকের সাময়িক বিশ্রামাগার হিসেবে। এর বাইরে প্রাঙ্গণজুড়েই উপচে পড়ে ছিল আনন্দের ঢেউ। ছবি-সেলফিও বাদ যায়নি। লেখকের সঙ্গে পাঠকের, পাঠককে সঙ্গে নিয়ে লেখকের, বন্ধুদের নিয়ে তরুণ-তরুণী কিংবা প্রবীণদের এবং পরিবারের সবাই মিলে মেলার শেষ মুহূর্তটি স্মরণীয় করে রেখেছেন অনেকেই। সব মিলিয়ে আবেগী ভালোবাসায় আবার দেখা হবে, এমনটাই প্রত্যাশা সবার।

বাংলাদেশ সময়: ২০২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২৩
এইচএমএস/এসএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।