ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

সরোজ মোস্তফার চারটি কবিতা

কবিতা / শিল্প-সাহিত্য | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৫
সরোজ মোস্তফার চারটি কবিতা

এক.
ভূমিতে ভূস্বামী। হরিণের খুরে রোদ শিশুদের স্মৃতি।

সাদা গন্ধরাজে মেঘশিশুদের ঘ্রাণ। ভূমিতে দাঁড়ালে সড়কের আহবান। তরমুজ ক্ষেতের সৌন্দর্য ধরে বালির সড়ক। সড়কের পাশে সজনে গাছের যন্ত্রণা। সড়কের পাশে গ্রাম সর্দারের দেবালয়।

পাট ক্ষেতের কিনারে ধর্মমন্ত্রণালয়ের বিনা বেতনের স্কুল। এখানে শেখানো হয় ধর্মীয় গুরুর ব্যাকরণ। এখানে শেখানো হয় নদীটার দুইতীর। নারী ও পুরুষ।

ভূস্বামীরা হাসে। শিশুর পড়ার সুর শুনে হাসে।

দুই.
হাতির শুরেরা উড়িয়ে আনছে মীনশাবকের খুশি। যৌনতার জামগাছীয় ছায়ায় শ্রাবণ মাসেই শরীরাখ্যান। যক্ষ পুরুষেরা পাহাড় ডিঙ্গানো মেঘদলে লিখে দেয় নারী মুখের প্রাচুর্য। নদীতে লাফাচ্ছে শিশুদল। বড় হচ্ছে ছোট্ট আম, কাঁঠাল গাছের মুচি। লড়ি, ট্রাক, ট্রফিক রাজার সিগনালকে উপেক্ষা করে কই মাছরা রাস্তা পেরুচ্ছে। লাল মাটি ভিজে যাবে এখনকার প্রত্যয়।

তিন.
বাজারে মুখোশ। মুখের অন্তরালে মুখোশ। একশো বছর পর পর একটা জানালার মৃত্যু হয়।

হুন্ডাভক্ত সময়টা রাস্তায় নামায় গলা ফোলানো যুবক। যক্ষ পুরুষের সীমানা পেরিয়ে সে খুঁজেছে বার ডান্সারের জানুদেশ। সে বুঝেছে টাকা ও পিস্তল। হরতকি গাছের ভাষায় সে বুঝেছে লাশ কিছু নয়। একটা লাশও তিন ফুট কিংবা সাত ফুট ক্ষমতা খচিত মালা। তা না হলে বাসের ভেতরে মানুষ পুড়ত না। বার্ন ইউনিটের বেডগুলো তৈলাক্ত মলমে হাসে। বাল্বগুলো পোড়া মাংসের গন্ধ ছড়ায়। পোড়া মাংসের খোঁজে ঝিঁঝিঁ পোকারা উড়ছে।

সময়টা রক্তপাতপ্রিয় ক্ষত্রিয় আবেগ। আমি যুগল হাসির সহচর। গন্ধরাজ ফুলের নিচে জন্মেছি। নরম মাটির দোস্ত হয়ে বাঁচি। বেঁচে আছি পাট শাকের আনন্দে। রঙিন ছাতার নিচে জানি না কবে বলব আহা! পৃথিবী।

চার.
ও শহর! ও সেলাই মেশিন! দেনার ভেতরে আমি হাসতে শিখেছি। লুকিং গ্লাসে হাসি দিচ্ছি মেরুন ক্লালার।

পা উচানো ঘোড়াদের ঘুমে ঢুকে গেছি প্রভু বন্দনায়, হাসিরোগে।

লোন, বীমা, ওটার হিটারে বগলানো বিকালে মেয়রের নির্বাক রাস্তায় একটা স্কুটারে উঠে যায়

পণ্যদিদি। আমি বলি, কেমুন আছেন পণ্যদিদি, চরের মাটির সই। দিদি বলে, সময়টা পিতলের মূর্তি।

নীলগ্লাস আর গ্লাসের ভেতরে ফূর্তি। ভাইটি শোন, নিজের ভেতরে সিনেমা! সিনেমা! রৌদ্র ও হরিণ।

ও শহর! ও ঔপনেবিশিক ঘড়ি! কেমুন বিকোচ্ছো শোকের টগর। আচ্ছা, এখন রেট কেমন!

হাসপাতালের সাদা বিছানায়, ওপেন হার্ট সার্জারি। কবুতরগুলো কি ছাড়া পেয়েছে ভোরে।

নীলহাসি ভোরের মেমটি হাঁটতে হাঁটাতে বানান করছে স্টার জলসার প্লট। শতায়ু ক্লাবের

মেম্বারেরা জারুল তলায় হাসি প্যাকটিস করে। হাসি ক্যাম্পেনের বণিকেরা মিস্টার ভিনের

টি শার্ট বিকিনি করে। ওরিয়েন্টালিস্ট বন্ধু, হাসি জরিপের এই খাতাটা দেখলেই হাসে।



বাংলাদেশ সময়: ১২৫১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।