বইমেলা আমাদের ঐতিহ্য, একুশে ফেব্রুয়ারিকে কেন্দ্র করে এখানে বইমেলা হয় যা পৃথিবীতে অন্যতম ঘটনা। নব্য জাতীয়তাবাদ ও জাতিসত্তা গঠনে এই উৎসবের আলাদা গুরুত্ব আছে।
কল্যাণরাষ্ট্র গঠনে ও সুনাগরিক তৈরিতে বইয়ের ভূমিকা থাকলেও এখানে রাষ্ট্র বই নিয়ে চিন্তা করে না। এক্ষেত্রে গণমাধ্যমেরও আরও সজাগ হওয়া উচিত। শুধু বইমেলা উপলক্ষে নয়, সারাবছরই বইয়ের গুরুত্ব তুলে ধরা উচিত। প্রতি বইমেলায় চার থেকে ছয় হাজার বই প্রকাশিত হয়ে আসছে। কিন্তু এসব বইয়ের মান নিয়ে প্রশ্ন তোলা যেতে পারে। মান সম্পন্ন বইয়ের সংখ্যা যেমন বাড়ানো উচিত, তেমনি প্রকৃত পাঠকের সংখ্যাও বাড়ানো উচিত।
দেশের মোট শিক্ষিত জনসংখ্যার ১০ ভাগও যদি বই পড়ে তাহলে সামাজিক অসঙ্গতি কমে যাবে। আমাদের গ্রন্থনীতি নাই, এর খসড়া আছে। এই আর্ট ও ইন্ড্রাস্টির উন্নতির জন্য নীতিমালা দরকার, এর আওতায় সবাই যেন প্রকাশক হতে না পারে। আসল প্রকাশক বইয়ের কয়েকটি মান বজায় রাখেন। যেমন, পাণ্ডুলিপি সম্পাদনা, উপস্থাপন ও বিপণন। মানসম্পন্ন বই যত বেশি প্রচার হবে পাঠকও তত আগ্রহী হবেন।
আমাদের মেলার ঐতিহ্যকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ আছে। সেই উদ্যোগ নাই। নানা আন্তর্জাতিক সংযোগ ঘটিয়ে মেলাকে আকর্ষণীয় করা যেতে পারে। মেলার স্টলকে শৈল্পিকভাবে বানানো উচিত।
শুদ্ধস্বর এগারো বছর ধরে বইপ্রকাশ করে যাচ্ছে। এবারও বড়পরিসরে স্টল থাকছে। এবার অনেকবছর পর পঞ্চাশটির কম বই করছি। মান ধরে রাখব বইগুলোর। চার্বাকের খোঁজে নামে ভারতীয় দর্শনের ওপর বায়ান্ন ফর্মার একটি বই প্রকাশিত হচ্ছে, মহাভারতের ওপর থাকছে একটি বই। তাজউদ্দিন আহমেদ-এর ওপর একটি উপন্যাস প্রকাশিত হবে।
এছাড়াও গল্প, কবিতা থাকছে। বরাবরের মত জোর দিয়েছি তরুণদের বইয়ের প্রতি।
আহমেদুর রশীদ: প্রকাশক, শুদ্ধস্বর
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৫