ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

পুনরাভিনয়ের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস | হাই-ডাং ফান | ভাষান্তর : রায়হান রাইন

অনুবাদ কবিতা / শিল্প-সাহিত্য | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২, ২০১৫
পুনরাভিনয়ের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস | হাই-ডাং ফান | ভাষান্তর : রায়হান রাইন

পয়লা দিন আলোকচিত্রী মেয়েটি ক্যাম্পের ভেতর ঢোকে
এবং তৎক্ষণাৎ ছবি তোলা শুরু করে। সে আমাদের ছবি তোলে

সকালের নাস্তায় যখন আমরা রেশনের খাবার খাচ্ছি, দোল-বিছানায় শুয়ে
পড়ছি তারকালোক।

মেয়েটি আমাদের ছবি তোলে তার ঘুমের ভেতর।

যখন আমরা প্রথম পার হচ্ছি খাঁড়ির পথ, সে বলে,
“হেই, বাঘ! সুন্দর যুদ্ধের বুটজোড়া, ঐ টা কি আস্লি চিজ?”

তখন সে আমার বিশেষ বাহিনীর জংলী শার্টের দিকে দেখাচ্ছিল।
“তাইতো ভয় পাচ্ছি”—আমি উদাসীনভাবে বলি আমার তৃপ্তিটাকে

ঢাকার চেষ্টা করে। দুসরা দিন: আর কোনও গড়বড় নয়।
আলোকচিত্রী যুদ্ধে যোগ দিতে সম্মত হয়েছে।

“আচ্ছা কী পরিস্থিতি?” একজন একা গেরিলা চোরা-ফাঁদ-পাতা
গ্রামে গিয়ে লুকানোর গর্ত থেকে লাফ দিয়ে বেরিয়ে পড়ে

এবং ওঁত পাতিয়ে রাখে একটা প্লাটুনকে যার কাজ খুঁজে বের করা এবং ধ্বংস
করা। “ভালো কথা আমি আমার কালো পাজামা আর স্যান্ডেল এনেছি!”

কি যোদ্ধা! সেও অভিনয় করে পাকড়াও করা বন্দী, স্থানীয় ইনফরমার,
এবং সুন্দর স্বপক্ষত্যাগীর ভূমিকায়।

বন্দুকবাজ মেয়ের ভূমিকাটাই তার সবচেয়ে প্রিয় কারণ
ব্যাপারটা ছবি তোলার মত। “কি চমৎকার, কি চমৎকার!”

তার কণ্ঠস্বর ভৌতিকভাবে বেরিয়ে এলো কিছু পাথরের আড়াল থেকে
যখন সে একের পর এক লক্ষ্যভেদ করে যাচ্ছিল আমাদের লোকদের।

কখনও কখনও আলোকচিত্রী নিজেরই ছবি তোলে।
আমি জানি অবশ্যই তার নিজস্ব লটবহর আছে—

পরে একবার তাকে আমি বাঁশবনের ভেতর ককাতে দেখলাম।
আমি তাকে বললাম, সব ঠিকাছে, এসব যুদ্ধ তিন দিনের বেশি হয় না।

“যখন সবকিছু ঠিকঠাক হয়ে যাবে তুমি তখন কী করবে?” সে জিগ্যেস করে।
“ঠিক জানি না”—আমি বলি। “পরের কর্মসূচির কথা ভাবো। ”

তেসরা দিন, আরেকবারের রুটিন পাহারার পর আমরা বসি
আমার প্রিয় কাঠের গুঁড়ির উপর, ওক গাছগুলোর ছায়ায়,

আর মনে মনে আরও কিছু চিত্রনাট্য উদ্ভাবন করি। ভূ-মানচিত্র আমাদের
কোলের উপর ভাঁজ খুলতে থাকে জাদুর গালিচার মত।

মারাত্মক বিস্ফোরণগুলো সে দেখেছে ক্যামেরার চোখের সামনে।
সবগুলো চোরা-ফাঁদ এবং অবতরণ স্থল আমি চিহ্নিত করে ফেলি

যেমন সে বলেছে নিয়ন্ত্রিত আলো সম্পর্কে এবং সেসব গর্ত প্রসঙ্গে
যা তুমি শাটার বোতামে চাপ দেবার সময় খুলে যায়।

চব্বিশ শ’তে গিয়ে আমাদের হাত প্রায় স্পর্শ করে ফেলল।
উল্কা বৃষ্টি হলো। আমি ডাকলাম মর্টারের আগুন।

[হাই-ডাং ফান: ভিয়েতনামী বংশোদ্ভূত অ্যামেরিকান কবি এবং গ্রিনেল কলেজে ইংরেজির শিক্ষক। ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সৃষ্টিশীল সাহিত্যে লেখাপড়া করেন। উইসকনসিন-মেডিসন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি লাভ করেন, ২০১২ সালে। বসবাস আয়ওয়াতে। প্রথম কবিতার বই প্রস্তুত করছেন। অনুদিত কবিতাটি দ্য নিউ ইয়র্কারে প্রকাশিত হয়, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সংখ্যায়। ]

| হাই-ডাং ফানের কণ্ঠে কবিতাটি শোনা যাবে এই লিংকে |



বাংলাদেশ সময়: ১৪০৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।