মাটি ভাঙলে মাটি গড়ে, মন ভাঙলে জোড়া নেয় না মন, পুতুল ভাঙলে গড়ে না পুতুল, মন তুই মাটি হইলি, কেন হইলি না পুতুল। গানটি গাইতে গাইতে খালের পাড়ে এসে বসল মরণচাঁদ।
কাকরান গ্রামে একবারই যাওয়া হয়েছিল। বাবা-কাকা এর আগে দুইবার গেছেন। ওখানকার মেলা ভালো জমে। বিক্রি ভালো। বছরের অর্ধেক বিক্রির টাকা ওই মেলা থেকে উঠিয়ে আনা যায়। গত বৈশাখে মরণচাঁদও বাবা-কাকা’র সঙ্গে কাকরানের মেলায় যায়। নৌকা ভরে নিয়ে গেছিল ফুলের টব, মাটির ব্যাংক, ফুলদানি। মাটি দিয়ে তৈরি ফল, পশু-পাখি আর পুতুল এখন আর বিকোয় না। তাই ওদের বাড়িতে এখন আর মাটির এসব জিনিস তৈরি হয় না। মরণচাঁদ বাবা-কাকাদের সঙ্গে কখনও কখনও মাটির দলা নিয়ে বসে, ওর হাতে ফুলের টব আর ফুলদানিটা বেশ সুন্দর গড়ন পায়। ও নিজেও কয়দিন বাদে বাদে নতুন নকশার ফুলদানি, টব তৈরি করে। কাকরান গ্রামেও বৈশাখ মেলা উপলক্ষে নতুন একটা নকশা নিয়ে গেছিল ও। পাখির ডানার মতো ফুলদানি। ফুলদানিটা কেমন চলে তা দেখতেই প্রথমদিন দোকান ছেড়ে উঠছিল না মরণচাঁদ। সন্ধ্যার দিকে ওর দোকানের সামনে একটি মেয়ে এসে দাঁড়ায়। বয়স ওর মতোই আঠার-উনিশ হবে। চোখটা বেশ টানা টানা। দুই চোখের গাঢ় করে কাজল দেয়া। ডান কানে গুঁজে রেখেছে আকন্দ ফুল। মরণচাঁদের বুঝি মরণ হলো তখনই। অনেকটা সময় নিজের মধ্যে ছিল না ও। ফিরে এলো কাজল রেখার কথায়।
দাদা, পুতুল হবে?
মরণচাঁদ মাথা নেড়ে জানায় ওর কাছে মাটির পুতুল নেই। কাজলরেখা শরীরটা একটু দুলিয়ে বলে, তোমরা পুতুল বানাও না কেন?
এবার মরণচাঁদ হাতে দুই ডানাওয়ালা একটা ফুলদানি তুলে নিয়ে কাপড় দিয়ে মুছতে থাকে। কেউ পুতুল চায় না। ফুলের টব, ফুলদানি চায়। গাছ, ফুল সাজাতে চায়।
কাজলরেখা অবাক হয়ে তাকায় মরনচাঁদের দিকে, বলো কী সবাই পুতুলের কথা ভুলে গেছে?
মরণচাঁদ তখনও ফুলদানি মুছে চলছে, কোন পুতুল? কাজলরেখা আঁচলে মুখ ঢেকে হাসে, সব পুরুষের একটা পুতুল আছে, তোমার নাই?
মরণচাঁদ লজ্জায় মুখ ফিরিয়ে নেবে। তারপর না-বোধক মাথা নাড়বে।
কাজলরেখা একটা দুষ্টু হাসি দিয়ে মরণচাঁদের দোকান থেকে সরে, মেলার ভিড়ে মিশে যেতে যেতে পেছনে ফেলে আসা মরণচাঁদের দোকানের দিকে তাকায়। কানে গুঁজে থাকা আকন্দ ফুলটা ও শূন্যে উড়িয়ে দেয়। মরণচাঁদের মনে হলো আকন্দ যেন ওর বুকে এসে বিঁধে গেল।
ওর আর দোকানে মন বসে না। উঠে পড়ে দোকান থেকে। নিজেই গিয়ে অন্য কুমারদের দোকানে উঁকি দেয়। দেখে ওরা কেউ মাটির পুতুল এনেছে কিনা। কিন্তু সবাই ওদের মতোই। আশপাশের অন্য দোকানগুলোতে পুতুলের অভাব নেই। নানা রঙ, নানা আকারের পুতুল। সবই প্লাস্টিকের। দেদারছে বিক্রি হচ্ছে। পুতুল পুতুল শিশুগুলো ওই প্লাস্টিক পুতুলেই খুশি। মরণচাঁদ এলোমেলো ঘুরতে ঘুরতে কদমা কিনে নেয় দশ টাকার। এখন দশ টাকায় চারটা কদমা পাওয়া যায়। দুই বৈশাখ আগেও এই টাকায় ঠোঙা ভরে কদমা নিয়ে বাড়ি ফেরা যেত। একটা কদমা মুখে পুরে দিয়ে একটা গয়নার দোকানের সামনে এসে দাঁড়ায় মরণচাঁদ। ঝকঝক করছে গয়নাগুলো। কোনওটাই সোনার নয়, ইমিটিশন। মরণচাঁদ নিজেকে নিজে বলে, সব ইমিটিশন হয়ে যাচ্ছে। মনটাও ইমিটিশন। মেলার বাইরের দিকের মান্দার গাছের কাছে গিয়ে দাঁড়াতেই দেখে কাজলরেখা বেরিয়ে আসছে মেলা থেকে। মরণচাঁদের সঙ্গে চোখাচোখি হয়,পুতুল পাওয়া গেল?
কাজলরেখা মাথা নেড়ে বলে, পুতুলকে সবাই প্লাস্টিক বানায় ফেলছে।
মরণচাঁদ ঠোঙা থেকে একটা কদমা বের করে কাজলরেখাকে দেয়। কাজলরেখা একবার কদমার দিকে একবার মরণচাঁদের দিকে তাকিয়ে যে হাসিটা দিয়ে কদমা মুখে নিল, তাতে মরণচাঁদের আরেকবার মরতে ইচ্ছে হলো, ‘এটাই তো ভালো হলো। পুতুল ভাঙবে না।
কাজলরেখা জিভ বের করে নাড়ায়, প্লাস্টিক মেশিনে হয়। হাতের ছোঁয়া নাই।
মরণচাঁদ হ্যাঁ-বোধক মাথা নাড়ে, কেউ আর প্রতিমা গড়তে চায় না নিজ হাতে। সব নগদ।
কাজলরেখা ততক্ষণে বাড়ির পথ ধরেছে। মরণচাঁদের চেয়ে খানিকটা এগিয়ে হাঁটছে। সামনে থেকেই বলবে, তোমার নাম জানা হলো না ভিনদেশী কুমার।
মরণচাঁদ মুখের কদমাটাকে বামদিকের গালে সরিয়ে এনে জোরে চিৎকার করে, ভিনদেশীরে সবাই ডাকে মরণ। মা ডাকে চাঁদ।
কাজলরেখা খিলখিল করে হাসে। দূর থেকেও তার কলকল শব্দ পাওয়া যায়। যেন নদী এগিয়ে যাচ্ছে ঢেউ ভেঙে। কাজলরেখা চিৎকার করে বলে, আমার ভিনদেশী মরণচাঁদ। আমারে ডাক দাও না আকাশ ভাইঙা কাজলরেখা বইলা। তারপর কাজলরেখা দৌড়ে বাড়ির দিকে চলে যায়।
মরণচাঁদ পেছন থেকে চিৎকার করে ডাক দেয়, কাজলরেখা। ’ তারপর নিজেই নিজেকে বলে কাজলরেখা নামে তো এক নদীকে জানতাম। সেই ছোটবেলায় এমন কোন মেলাতেই যাওয়া হয়েছিল বৈশাখে। মেলা বসেছিল যে নদীর তীরে তার নামটিও ছিল কাজলরেখা।
মরণচাঁদের ভাবনায় যে কখনও আসেনি, তা নয়। ও অনেকবারই ভেবেছে মাটির পুতুল কেন ওদের বাড়িতে তৈরি হয় না। অবশ্য ওদের বাড়িতে তৈরি হয় না শুধু একথাটি বলা ঠিক হবে না। পুরো কুমোর পাড়া থেকেই হারিয়ে গেছে মাটির পুতুল। ওদের ঘরেও এখন মাটির পুতুলের জায়গা নিয়ে নিয়েছে প্লাস্টিকের পুতুল। কাকাতো ছোটবোন জয়ার সংগ্রহে অনেক প্লাস্টিকের পুতুল। নানা নামে ডাকে একেকটাকে। কিন্তু ওদেরকে পুতুল বললেই জয়া রেগে যায়। ওগুলো নাকি পুতুল না, বার্বি। স্কুল থেকে বা অন্য পাড়া থেকে হয়ত শিখে এসেছে পুতুলের পাল্টে যাওয়া নামটা। বাবা-কাকাদের কাছে পুতুল না বানাবার কারণ জানা হয়ে গেছে আগেই। একই কথা তাদের, ‘বিকায় না। ’ মরণচাঁদ কখনও বলার চেষ্টা করেছে, মাইনষে তো চায়। পাল্টা শুনতে হয়েছে, কয়জন মাইনষে চাইছে? মরণচাঁদ আরেকটু এগিয়ে বলেছে, একজন-দুইজন চাইল। থাকলে, দেখলে আরও মানুষ চাইত। কাকা-বাবা বিরক্ত হয়। বলে, মাইনষে এহন প্লাস্টিক চায়। গত মেলায় দেখলাম, ফুলের টবও প্লাস্টিক দিয়া করছে। কয়দিন বাদে মাটির টবও চলব না। কিন্তু কাজলরেখা মরণচাঁদের মনে যে পুতুলের দোলা দিয়ে গেল তাকে তো মাটি দিয়ে গড়তেই হবে। মরণচাঁদের মন বসে না মেলায়। কাকনগ্রাম থেকে অনেকদূরে হেঁটে চলে এসে ফুলজোড় নদীর কাছে বসে। মন জুড়িয়ে যাওয়া রূপ তার। মরণচাঁদ সেই রূপের ঝলকানিতেই গাইতে থাকে, বলো তুমি কোন বাতাসে, আছো কোন মন আকাশে, চোখে রূপের ধুলা দিয়া, হারাইলা কোন বাতাসে, কেন তুমি ঝড় উঠাইলা, মরণচাঁদের মন আকাশে, কন্যা জানান দাও, কন্যা আওয়াজ দাও, তোমার সন্ধানে আমি, দেব পাড়ি কোন আকাশে? কেমন একটা শীতল হাওয়া হঠাৎ এসে জড়িয়ে ধরে মরণচাঁদকে। ও প্রথমে কেঁপে উঠে। পরে সামলে নেয় নিজেকে। চারপাশের গাছেও যেন কেমন দোলা খেলে যায়। নদীর পাড়ের গঙ্গালতা বুঝি এইমাত্রই ফুল ফোটাল। মরণচাঁদের মনে হয় কাজলরেখা ওর গানের উত্তর দিচ্ছে, চৈতের হাওয়া আইছে গাওয়ে, দেখ বৈশাখের বসন লইয়া, মরণ তুমি আকাশ দেখ, মরণ তুমি বাতাস মাখো, মান্দার গাছের ফুল দেখ, প্যাক কাদার গন্ধ মাখো, মরণ দেহো পাইলানি আমারে?
মরণচাঁদ কখন জ্ঞান হারিয়েছিল ওর মনে নেই। যখন চোখ মেলল, তখন দেখে তারা ভরা আকাশ সামিয়ানা হয়ে ওকে ঢেকে রেখেছে। মরণচাঁদ উঠে বসে। ফুলজোড়ের দিকে তাকায়। কী আনন্দে বয়ে যাচ্ছে ও। সেখানে তারাবোনা সামিয়ানার ছায়া পড়েছে। মরণচাঁদ উঠে গিয়ে সেই ছায়ায় হাত রাখে। কেমন হিমশীতল জল ফুলজোড়ের। মরণচাঁদের তৃষ্ণা পায়। সেই তৃষ্ণা ওর কণ্ঠের, জিবের, ঠোঁটের নয়, করতলের। মরণচাঁদ ওর করতলে কাজলরেখার হাতের তৃষ্ণাবোধ করে। কাজলরেখা কখন যে এসে ওর পাশে দাঁড়িয়েছিল মরণচাঁদ জানতে পারেনি। ফুলজোড়ের পাশ থেকে উঠতে গিয়ে টের পেল। পেছনেই দাঁড়ানো কাজলরেখা, তুমি?’ কাজলরেখার চোখে নদী বয়ে যাচ্ছে, ‘তুমি ডাকলে যে। ’ মরণচাঁদ ফুলজোড়ের দিকে ফিরে তাকিয়ে বলে, আমি ডাকলেই আসতে হইব? কাজলরেখার একটি হাত ততক্ষণে মরণচাঁদের করতলের দখল নিয়ে নিয়েছে, আমার মাটির পুতুল লাগব যে। কাজলরেখার হাতে এত কম্পন কেন? ওর শরীর কি জ্বরে পুড়ে যাচ্ছে। হাত তো তপ্ত লোহার মতো টগবগ করছে, তোমার জ্বর আইছে? কাজলরেখা উল্টোদিকে ঘুরে দাঁড়ায়। কিন্তু হাতটা জমা রাখা মরণচাঁদের কাছে, আমার মরণ আইছে চাঁদ। আমারে বাঁচাও। কাজলরেখার এই রূপ দেখে এবার সত্যিই ভয় এসে জাপটে ধরল মরণচাঁদকে। কোনওভাবে ভয়ের জাপটানি থেকে নিজেকে মুক্ত করে বলল, তোমারে পুতুল দিমু কাজলরেখা। মুহূর্তেই ঘুরে মরণচাঁদকে ঝাপটি মেরে ধরে কাজলরেখা, আমার যে মরণরে চাই চাঁদ।
মরণচাঁদের সঙ্গে কাজলরেখার লড়াই বেঁধে যায়। মরণচাঁদ কাজলরেখার বাঁধন ছেড়ে বেরিয়ে আসতে চায়। কাজলরেখা যেন দূর্গা হয়ে উঠে দশহাতে ওকে জড়িয়ে ধরেছে। দূরের অশ্বত্থ গাছের লতাগুলোও যেন কাজলরেখার হয়ে মরণচাঁদকে পেঁচিয়ে ফেলছে। কিন্তু মরণচাঁদের ওপরও যেন অসুর এসে ভর করে। কাজলরেখার জটা কাটিয়ে বেরিয়ে আসে মরণচাঁদ, ফিরে তাকিয়ে কাজলরেখার অগ্নিমূর্তি দেখতে পায় মরনচাঁদ। ওর মনে হয় চারদিকে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে বিসর্জন বিসর্জন। মরণচাঁদ কাজলরেখার দিকে কালবৈশাখের শক্তি নিয়ে ছুটে যায়। ফুলজোড়ে বিসর্জিত হলো কাজলরেখা। মরণচাঁদ আর ফুলজোড়ের দিকে তাকায় না। ধরিত্রী দেবীর কী এক বর পেয়েছে সে, ছুটে সে পালাতে থাকে। মরণচাঁদের মনে হয় এই পালানোর বুঝি শেষ নেই। মরণচাঁদের আরও মনে হতে থাকে পেছন থেকে কাজলরেখা ওকে ডেকে চলেছে, তুমি না যাইও না যাইও চাঁদ, আমার মন উঠানের বাইরে, ফিরা আইসো, আইসো মরণচাঁদ কাজলরেখার জল জমিনে।
মরণচাঁদ ফিরে আসতে আসতে আরেক অজানা নদীতে নেমে যায় সেই রাতে। বৈশাখের হাঁটুজল সেই নদীতে নেমে দুই হাতে কাদা তুলতে থাকে। চাঁদ আর জোছনায় কাদা রূপোর রঙ নিয়েছে। মরণচাঁদ হাতের দুই আজলা ভরে আঠাল মাটি নিয়ে উঠে আসে সড়কে। চোখবুঁজে ওই কাদামাটিকে কিসের যেন আকার দিতে চায় ও। কিন্তু চোখ খুললেই দেখতে পায় কাদামাটি কোনও আকারই নিতে চাচ্ছে না। বারবার ভেঙে যায় দলা করা মাটির আকার। আবার হাত দেয় মাটিতে চোখবুঁজে দুই হাত কাদামাটিতে ডুবিয়ে দেয়। মরণচাঁদের সামনে এসে যেন দাঁড়াল কাজলরেখা, ডরাইছো মরণচাঁদ? চোখবুঁজে থেকেই মরণচাঁদ উত্তর দেয়, তুমি? কাজলরেখা মরণচাঁদের গালে হাত বুলিয়ে দেয়, তোমার পুতুল হয় না। আমি না আইসা পারি। মরণচাঁদ বিড়বিড় করে বলে, মুঠার মধ্যে মাটি লইলেই তোমারে আর পাই না। মাটি ছাড়লে আবার পাই।
কাজলরেখা মরণচাঁদের ঠোঁট ছুঁইয়ে দেয়, ভুল বলতাছো তুমি মরণচাঁদ। দেহো, মাটির মধ্যেই আমি আছি। মরণচাঁদ চাওয়ার মতো কইরা চাও। দেখার মতো কইরা দেহো। দেখবা তোমার পুতুল ঠিকই হইব। কাজলরেখা সরে যায়। জলের মধ্যে হারিয়ে যায়। অন্ধকারে তার কোনও জলছাপ পাওয়া যায় না। মরণচাঁদ চোখ মেলে তাকিয়ে উপরের সামিয়ানা দেখতে থাকে। মরণচাঁদ আবার চোখ বন্ধ করে। নিজেই অস্ফুট করে বলতে থাকে, আইঠা মাটি তোমারে জলদেবীর দিব্যি দিলাম, তুমি আমার কাজলেরখা হইয়া যাও। মরণচাঁদ সেই রাতে কোথায় হারিয়ে গেছিল ও টের পায়নি। কখন যে সে রোদে পুড়তে শুরু করেছিল, তাও বুঝে উঠতে পারেনি। হঠাৎ কোথাও থেকে একটা আওয়াজ ভেসে আসে, মরণচাঁদ উঠো, দেহো আমি তোমার বুকে। মরণচাঁদ চোখ মেলে দেখে ওর লোমশ বুকে শুয়ে আছে মাটির পুতুল। নিজেকে কেমন সমর্পণ করে দিয়ে রেখেছে সে মরণচাঁদের বুকে। ধীরে ধীরে পুতুলের শরীরের তাপ বাড়তে থাকে। অসহনীয় হয়ে ওঠে সেই তাপ। মরণচাঁদ যেন দেখতে পায় মাটিরপুতুল নয় এটি, এ যে তার সেই কাজলরেখা। ধীরে ধীরে কাজলরেখা যেন চোখ মেলে চাইছে। তাপ বাড়ছেই। মরণচাঁদ মাটির পুতুলকে, এই কাজলরেখাকে আর সইতে পারবে না। ও মাটির পুতুল নিয়ে উঠে দাঁড়ায়। দৌড়ে চলে আসে নাম না জানা ওই নদীটার কাছে। হাতের পুতুলটা ছুঁড়ে দেয় নদীর হাঁটুজলে। মরণচাঁদ আরেকটু কাছে গিয়ে দাঁড়ায় নদীর। তারপর নিজ মনে বলতে থাকে, শীতল হও। এসে নাইওর নিয়ে যাব নে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৬ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১৫