ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

প্রতিদিনের ধারাবাহিক

১৯৮৪ | জর্জ অরওয়েল (খণ্ড ২ কিস্তি ৪১) || অনুবাদ: মাহমুদ মেনন

অনুবাদ উপন্যাস / শিল্প-সাহিত্য | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১২ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১৫
১৯৮৪ | জর্জ অরওয়েল (খণ্ড ২ কিস্তি ৪১) || অনুবাদ: মাহমুদ মেনন

George_Orwell_inner১৯৮৪ (নাইনটিন এইটি ফোর)—বিখ্যাত ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক, সাহিত্য সমালোচক ও সাংবাদিক জর্জ অরওয়েলের অমর গ্রন্থ। ১৯৪৯ সালে তার মৃত্যুর এক বছর আগে উপন্যাসটি প্রকাশিত হয়।

২০০৪ সালে ‘দি গার্ডিয়ান’র জরিপে উপন্যাসটি বিশ্বের চিরায়ত গ্রন্থের তালিকায় উঠে আসে সবার উপরে। ইংরেজি ভাষার এই উপন্যাসটি কালজয়ী হিসেবে খ্যাতি পেয়েছে। যাতে ফুটে উঠেছে সমসাময়িক বিশ্ব রাজনীতি, যুদ্ধ, শান্তির প্রেক্ষাপট। বাংলানিউজের জন্য বইটি বাংলায় অনুবাদ করছেন মাহমুদ মেনন। উল্লেখ্য, জর্জ অরওয়েলের মূল নাম এরিক আর্থার ব্লেয়ার। ১৯০৩ সালের ১৫ জুন ব্রিটিশ ভারতের বিহার রাজ্যের মথিহারিতে জন্মগ্রহণ করেন। মৃত্যুবরণ করেন লন্ডনে ১৯৫০ এর ২১ জানুয়ারি। তার উল্লেখযোগ্য উপন্যাস ‘দি রোড টু উইগ্যান পাইয়ার’, ‘হোমেজ টু ক্যাটালোনিয়া’, ‘এনিম্যাল ফার্ম’।

___________________________________

শুরু থেকে পড়তে ক্লিক করুন

দ্বিতীয় খণ্ডের ৪০তম কিস্তি
___________________________________

‘বেশ। তাহলে এটাই সাব্যস্ত। ’—টেবিলের ওপর রুপালি রঙের একটি সিগারেট-বাক্স, অনেকটা অন্যমনষ্ক ভঙ্গিমায় ও'ব্রায়েন সেটি ওদের দিকে ঠেলে দিলেন, নিজেও একটি শলাকা তুলে নিলেন। এরপর উঠে দাঁড়ালেন এবং মৃদু পায়চারি করতে লাগলেন, যেন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবনাটা ভালো জমে তার। সিগারেটগুলো খুব ভালো। মোটা আর সুন্দর প্যাকেটজাত। এর কাগজে এক ধরনের অপরিচিত রেশমিভাব আছে। ও’ব্রায়েন আরও একবার হাতঘড়ির দিকে তাকালেন।



‘মার্টিন, তুমি এবার খাবার ঘরে ফিরে গেলেই ভালো’—বললেন তিনি। ‘১৫ মিনিটের মধ্যে আমি ওটি ফের চালিয়ে দেব। যাওয়ার আগে এই কমরেডদের একবার ভালো করে দেখে নাও। এরপর ওদের সঙ্গে তোমারই দেখা হবে, আমার নাও হতে পারে। ’

সদর দরাজার সামনে পৌঁছে বেটে খাটো মানুষটির কালো চোখ জোড়া ওদের মুখমণ্ডলে নিবিষ্ট। ওর আচরণে বন্ধুত্বের ছাপটুকুও ছিল না। সে ওদের দুজনের চেহারা মুখস্ত করে নিচ্ছিল, কিন্তু নিতান্তই অনাগ্রহে, অভিব্যক্তিহীনভাবে। উইনস্টনের মনে হলো এই সিনথেটিক চেহারাখানি সম্ভবত কোনও অভিব্যক্তি ফুটিয়ে তুলতেই পারে না। কোনও কথা না বলে, সালাম-আদাব-সম্ভাষণ ছাড়াই মার্টিন দরজাটি চাপিয়ে দিয়ে ফিরে গেল। ও’ব্রায়েন তখনও মৃদু পায়চারি করে চলেছেন। তার একটি হাত কালো আলখেল্লার পকেটে, অন্যটিতে আঙ্গুলের ফাঁকে ধরে আছেন সিগারেট।



‘তোমরা বুঝতে পেরেছো’—বললেন তিনি, ‘তোমাদের আসলে অন্ধকারে থেকে যুদ্ধ করতে হবে। তোমরা অন্ধকারের ভেতরেই থাকবে। তোমরা কেবল নির্দেশ পাবে আর সেগুলো মেনে চলবে, জানতেও পারবে না কেন। পরে আমি তোমাদের একটা বই পাঠাব যা পড়লে তোমরা জানতে পারবে আমরা ঠিক কোন সমাজে বাস করছি, আর এই সমাজকে আমরা কোন কৌশলে ধ্বংস করে দেব তাও জানা যাবে। যখন তোমরা বইটি পড়বে, তোমরা ব্রাদারহুডের পূর্ণাঙ্গ সদস্য হয়ে উঠবে। কিন্তু আমরা যে সাধারণ লক্ষ্যে লড়ছি, আর আমাদের এখুনি যে কাজগুলো করতে হবে এর মাঝে তোমরা কখনওই কিছু জানতে পারবে না। আমি তোমাদের বলতে চাই, ব্রাদারহুড আছে, কিন্তু আমি তোমাদের বলতেই পারব না এর সদস্য এক শত নাকি এক কোটি। এই সংখ্যাটি মোটে এক ডজনও হতে পারে, কিন্তু তোমাদের ব্যক্তিগত জ্ঞান থেকে তোমরা কখনওই তা বলতে পারবে না। গোটা তিন চারেক যোগাযোগের স্থান তোমাদের জানিয়ে দেওয়া হবে, কিন্তু সেগুলোও সময় সময় নবায়ন করা হবে।

আর এটি যেহেতু তোমাদের প্রথম যোগাযোগ এটি সংরক্ষিত থাকবে। যখনই তোমরা কোনও নির্দেশ পাবে, সেগুলো আমার হয়েই আসবে। আমরা যদি বোধ করি ওগুলো তোমাদের জানানো প্রয়োজন, তখন মার্টিনের মাধ্যমে জানিয়ে দেব। আর অবশেষে তোমরা যখন ধরা পড়ে যাবে, তোমরা স্বীকার করে নেবে। এর ব্যত্যয় হতে পারবে না। তবে তোমাদের নিজেদের কাজগুলোর বাইরে স্বীকার করতে হবে খুব অল্প কিছুই। তোমরা গুটিকয় অগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির বেশি কাউকে প্রতারণা করতে পারবে না। সম্ভবত তোমরা আমাকেও প্রতারিত করবে না। কিন্তু ততক্ষণে আমি নিজেও মৃত হয়ে যেতে পারি, অথবা আমি হয়ে উঠতে পারি ভিন্ন কেউ একজন, এক ভিন্ন চেহারার মানুষ। ’

দ্বিতীয় খণ্ডের ৪২তম কিস্তির লিংক



বাংলাদেশ সময়: ১৮১২ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।