এ দীর্ঘসূত্রতা—
___________________________________
মানুষের দীর্ঘসূত্রতার ভার গ্রহ বয়ে ফেরে।
ফলত কালক্ষেপণ হয় আজ সকল কিছুতে।
দিশাহারা পৃথিবীর নৌকা, পাটাতন,
দুরূহতা দীর্ণ হয়ে, দেখি,
অপ্রাকৃত ভুল করে ফেলে বারবার।
কোটি বছরের চাকা ঘুরে চলে সম্মোহিত হয়ে।
নীল রঙ বহনের শ্রমে
বিকালের বহু আগে সন্ধ্যা নেমে আসে
যৌগিক সূর্যের নিচু মুখে।
বাষ্পের সকল সত্য সত্য-মিথ্যা-হীন—
অনিশ্চিত বাস্তবের মতো ঘন প্রাণ ঝাপটায়ে
উড়ে গেলে, আমি তার ডানার বিস্ময়ে,
সংগ্রাম মুখরতায় হতভম্ব হয়ে,
শুয়ে থাকি জানালার পাশে।
সন্ধ্যার উদ্ভিদ আজ আমার হৃদয়।
বিমূঢ় দীর্ঘসূত্রতার মতো শূন্যের দীর্ঘতা দেখা দেয়—
আমাকে বাধ্য করে ধীরে ধীরে অন্ধকার পথে চলে যেতে।
বসে থাকি এ পাথারে, অপরিমেয়তায়।
সক্স পরা, সক্স খোলা
___________________________________
নিয়ত সে সক্স পরে অপরিম্লান বিষণ্ণতায়।
তারপর ঐ পরবার ভিতরে—নীরবে, ক্ষীণ মুখে—
বসে থাকে আনন্দের অপরূপ সারাৎসার হয়ে।
বুলায় নরম হাত সক্স পরিহিত স্লিম পায়ে।
সুগভীর স্পর্শ কাতরতা জমে হাতে।
যখন সে সক্স খোলে তখন সে খোলে বহু কিছু।
দীর্ঘ সাদা নদী তীর অন্ধকারে জোনাকির স্তম্ভ
হয়ে জ্বলে। জীবনের সুদীর্ঘতা জাগে, ডুবে যায়।
সে কি সক্স আগে খোলে, নাকি পরে আগে?
সে-ই শুধু জানে খুলে ফেলা, পরবার আগে।
হয়ত সে খোলে নাই নীল অহঙ্কার কোনোদিন
এ জীবনে। তাই আজ একা বসে সব কিছু খোলে,
পরবার বহু আগে। হাজার হাজার মাইল
উচ্চতায় তার এইসব পরা আর খুলে ফেলা
আমাকে বিমুগ্ধ, ম্রিয়মাণ করে রাখে।
ধবল মদের মতো ধীরে ধীরে আমার ভিতরে ঢুকে যায়
জন্ম জন্মান্তর ধরে ঘটে যেতে থাকা সক্স পরা,
সক্স খোলাগুলি। মনে হয় যদি আর
কোনোদিনও না-ই দেখি তাকে, তবু তাকে পেয়ে যাব
অন্য কোনো জন্মে চলে গিয়ে, সক্স পরে, সক্স খুলে।
বিমান বালিকা এসে কানে মুখ রেখে বলে যায়
“প্রেমের সুযোগ্য তুমি, তবু কেন শুধু দূরে থাকো?
হয়ত এখন তার আকাশ উজ্জ্বল হয়ে আছে—
সঙ্গম উত্তর দেহ অন্য কারো নগ্ন বুকে ক্লান্ত—তবু তুমি
তাকে ভাবো অসীমের এ বিমানে বসে। কেন ভাবো?
দেখো না আমার পায়ে মোজা নেই, জামা নেই বুকে?
তাকাও না এই দিকে ঘুরে...। ”
উড়ে উড়ে ঘুমহীন, আমি তাকে দেখি ক্লান্ত চোখে,
তারপর ধীরে ধীরে বলি, “শোনো, আমি ভালোবাসি
ভালোবাসা প্রগাঢ় নির্ভুল এক ভুল, তা জেনেই। তারপরও
বেঁচে থাকতে হয়। তাই জেনো আমি ভাবি, বলি, লিখি। ”
রাত্রিভর এই প্লেনে কত রঙে সক্স আসে যায়—
সক্স পরা, সক্স খোলাগুলি ভাসে ডোবে। ক্ষুধা নাই,
তবু খাদ্য এলে এক অসামান্য ক্ষুধা জন্ম নেয়।
বিমান সন্ধ্যায় ঢোকে, রাতে, মধ্য রাতে, শেষ রাতে।
আকাশের বহু বহু সক্স খোলা, পরে নেয়া, হয়ে যায় পার।
যখন পায়ের থেকে, বিষণ্ণ সক্স নিজে নিজে খুলে যায়,
পায়ের পাতার নিচে মানুষেরা অনুভব করে মৃতদেহ।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩২ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০১৫