সিঁথিপথ
___________________________________
জিকিরে ভরে না তার মন
নিবেদন শেষে—গূঢ় রাতে
জেগে ওঠে বেতবন—ভাবি
কেউ কি জেগেছে, তথাগত?
মুজেযা না হোক, ভোররাতে
টের পাই—ফোঁটা ফোঁটা ঝরে
মৃদু মোশায়েরা—করতাল
নেচে ওঠে জলের জঙ্গলে।
টের পাই—তার স্নিগ্ধ খোঁপা
খুলে গেছে অন্ধ সিঁথিপথে।
মধু
___________________________________
মনের ভিতর মন রেখে
খুঁজে পাই ঘুঘুর প্রণয়
নির্জন দুপুর—যেন তার
স্বর্গচ্যুত ডানার উচ্ছ্বাস
পালকের ছায়া মুছে দিয়ে
জেগে ওঠে দূরবীক্ষণের
চতুরতা, ঘূর্ণির চিৎকার
শিকারীর ফাঁদ নয়, ভাবি
মনের মর্মরে বাঁশি বাজে
চুপি চুপি শুনি—মধু, মধু!
নিধুবন
___________________________________
আকস্মিক এলো ঘূর্ণিনাচ
দেহভঙ্গিমার রূপ নিয়ে
ভিজে যায় পাখিনীর বাসা
উড়ে যায় নাগিনীকেশর।
নারীর কোমরসন্ধি—জানি
লতাময়—চূড়ান্ত, গভীর
নিধুবনে—কেউ কি এখন
পাখিনীর মতো ধ্যান-ভাঙা?
নৃত্যের নিবিড়ে—জানি আজ
জন্ম নেবে পাতা ও বাকল।
থাইল্যান্ড
___________________________________
সমুদ্রের তটে—একে একে
জড়ো হয় মানুষের ছবি
সেইসব দৃশ্যে—ধীরে ধীরে
ভেসে ওঠে হাঙরের মুখ।
অনন্ত পথের দিকে চেয়ে
ম্রিয়মাণ—নীল থেকে নীলে
ভেসে ওঠে—বিস্মৃতির দেশ
দানবিক দাসত্বের ছবি।
ছবি নয়—সমুদ্রের ঘ্রাণে
ভেসে ওঠে অশ্রুর গজল।
বল্লমের ছায়া
___________________________________
পূর্বপুরুষের মাটি ছুঁয়ে
জেগে ওঠে মৃত্যুর প্রস্তুর
কেননা বাতাস ধূলিময়
পাতাগুলি—উন্মুখ, উদ্বাস্তু।
পিতামহ, তোমার ধনুক
লক্ষ্যহীন—ছুঁয়েছেনে দেখি
তীরশীর্ষে—তবু, তরতাজা
শতছিন্ন ডানা, উষ্ণ রক্ত।
ধরিত্রী জঠরে—জানি আজ
মিশে আছে বল্লমের ছায়া।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৯ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০১৫