পাগল
___________________________________
একটা পাগল পুষি গোপনে, এমনই পাগল যে ও—
দেখতে অবিকল আমার মতো!
হাঁটে, খেলে, রাতকে দুপুর মানে, দুপুরকে রাত জানে
পথের ধারে সমগোত্রীয় কাউকে দেখলেই কেঁদে ওঠে!
রাষ্ট্র মানে, কাঁটাতারের বেড়াও মানে
হঠাৎ হঠাৎ আকশটাকেও আপন জানে
দেখতে অবিকল আমার মতো!
ব্যাথা পেয়েও হাসি মেখে গেয়ে ওঠে—
রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকে, অযথাই হেসে ওঠে
হঠাৎ লাফিয়ে উঠে পেয়েছি ব’লে—
মরা ফুলের পাপড়ি নিয়ে নাকে মুখে ঘ্রাণ মাখে
দেখতে একেবারেই আমার মতো!
গাছের সাথে, মাছের সাথে কী যেন কথা বলে
কেউ খেতে না দিলেও অমূল্য হাসি দিতে জানে
দেখতে অবিকল যেন আমায় জানে!
বিড়াল এবং মৃত মানুষ
___________________________________
বিড়ালটি ছটপট করছে, একটা মোটর সাইকেল এবং তার চালক
আনন্দ করেই তার বুকের উপর দিয়ে গেছে।
চালকের সেকি আনন্দ! আমি দেখেছি
সানগ্লাসের ভেতর থেকে তাদের হাস্যোজ্জ্বল চোখ!
পেছনে বসা দোস্তের মুখাবয়ব যেন বলছিল—
‘শালার বিড়াল, চিৎ হয়ে যন্ত্রণা ভোগ কর এবার, হা হা হা!’
সাথে মোটর সাইকেলটির দারুণ গতিবেগ।
নিমিষেই হাওয়া হলো দুজন, বিড়ালটি মারা যাচ্ছে।
আশেপাশের কারো চোখ বিড়ালটির দিকে নেই।
এবং বিড়ালটিরও বোধহয় কেউ নেই।
হঠাৎ আরেকটা বিড়াল এসে, মারা যাওয়া বিড়ালটির পাশে,
কাতর চোখে তাকিয়ে আছে।
তার চোখগুলো লাল, একবার সে আমার দিকেও তাকায় অগ্নিচোখে!
কিছুটা ভরকে যাই আমি, একটু পর কেমন অদ্ভুত আওয়াজে
ফোঁস ফোঁস করতে লাগল
আরো কয়েকটি বিড়াল এসে জড়ো হলো, তারাও আওয়াজ তুলল,
প্রতিবাদী লাল চোখে!
আমি কিছুটা অসুস্থ বোধ করি, আমাকে কেমন তাদেরই একজন মনে হচ্ছিল।
এবার কিছু মানুষ লাঠি নিয়ে বিড়ালগুলোকে তাড়াতে এলো, যাহ যাহ—
কি অদ্ভুত! আমি তাড়াতে আসা মানুষগুলোসহ আমাকে মোটেই জীবিত দেখছিলাম না!
আমার কাছে মনে হচ্ছিল তারা সবাই ঐ মরে পড়ে থাকা বিড়ালটির মতো।
মূলত, আমরা মানুষরাও মরে পড়ে থাকি না? আহা প্রাণ!
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৫ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০১৫