কান উৎসবকে ঘিরে প্রতিবারই সারা বিশ্বের দুঁদে চলচ্চিত্র পরিচালক, শিল্পী ও কলাকুশলীর ভিড় জমে। ফলে কান হয়ে ওঠে মুখর।
কেট ব্ল্যানচেট
হলিউডে সবচেয়ে সেরা ৫০ আধুনিক মানুষের তালিকায় তিনি অন্যতম। পিপল ম্যাগাজিনের চোখে বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর ৫০ মানুষের মধ্যেও আছে তাঁর নাম। এম্পায়ার ম্যাগাজিনের দৃষ্টিতে চলচ্চিত্র ইতিহাসে ১০০ যৌন আবেদনময়ী তারকার তালিকায়ও আছেন কেট ব্ল্যানচেট। ৪৬ বছর বয়সী এই অস্ট্রেলিয়ান অভিনেত্রী এককথায় রূপে-গুণে অনন্যা। এক ‘ব্লু জেসমিন’ ছবিতে কাজ করেই ৪২টি পুরস্কার ঘরে তুলেছেন তিনি। হলিউডে আর কারো এই কীর্তি নেই। কেট এবার কানে এসেছিলেন ‘ক্যারল’ নিয়ে। ১৭ মে তাঁর অটোগ্রাফ নিলাম। এরপর সুযোগ এলো ছবিটির পরিচালক টড হায়েন্সের অটোগ্রাফ নেয়ার। হাতছাড়া করলাম না! ১৭ বছর পর টডের ছবি আবার কানে এসেছিল। এই টডের পরিচালনায় আট বছর আগে ‘আই অ্যাম নট দেয়ার’ ছবিতে গায়ক বব ডিলান চরিত্রে অভিনয় করে সাড়া ফেলেছিলেন কেট। নারী হয়েও পুরুষ চরিত্রে কী অনায়াসেই না মানিয়ে নিলেন নিজেকে! সত্যিকারের তারকা চরিত্রে আরও একবার আমরা তাঁকে দেখেছি। এগারো বছর আগে মার্টিন স্করসেজি পরিচালিত ‘দ্য এভিয়েটার’-এ হলিউড অভিনেত্রী ক্যাথেরিন হেপবার্নের ভূমিকায় পর্দায় এসেছিলেন তিনি। এর জন্য অস্কারও এসেছে তাঁর ঘরে। কোনো অস্কারজয়ীর চরিত্রে কাজ করে অস্কার জয়ের ঘটনা কেটই প্রথম জন্ম দিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার একমাত্র অভিনেত্রী হিসেবে দুবার অস্কার জেতার রেকর্ডও কেটের দখলে। সেরা অভিনেত্রী ও সেরা পার্শ্ব-অভিনেত্রী বিভাগে অস্কারজয়ী ছয়জন অভিনেত্রীর অভিজাত ক্লাবের সদস্য তিনি। এছাড়া একই বছর ভিন্ন ছবিতে কাজের জন্য এই দুটি বিভাগে মনোনীত ১১ অভিনেত্রীর মধ্যেও আছে তাঁর নাম। সত্যিকারের মানুষের (রানি এলিজাবেথ, ক্যাথেরিন হেপবার্ন ও বব ডিলান) চরিত্রে অভিনয় করে মোট চারবার অস্কার মনোনয়ন পেয়েছেন কেট। বোঝাই যাচ্ছে, তাঁর অটোগ্রাফটাই এখানে সবচেয়ে দামি!
ম্যাথু ম্যাকোনাহে
ম্যাথু ম্যাকোনাহের জন্য সাংবাদিকদের অপেক্ষা ছিল চোখে পড়ার মতো। ২০১২ সাল থেকে তাঁর ক্যারিয়ার ক্রমে উঁচুতেই উঠেছে। ‘ম্যাজিক মাইক’-এ পানশালার নাচিয়ে, ‘পেপারবয়’ ছবিতে অনুসন্ধানী সাংবাদিক, ‘মাড’-এ ফেরারি চরিত্রগুলোর সুবাদে রোমান্টিক ভাবমূর্তি থেকে সাফল্যের সঙ্গে বেরিয়ে আসতে পেরেছেন ৪৫ বছর বয়সী এই মার্কিন অভিনেতা। তিনি এখন উচ্চাকাঙ্ক্ষী, জটিল ও দুর্বোধ্য চরিত্র বেছে নিয়ে নিজের প্রতিভার পূর্ণ সদ্ব্যবহার করছেন। তাঁর জীবনের অন্যতম দিক হলো ‘ডালাস বায়ার্স ক্লাব’-এর জন্য অস্কারে সেরা অভিনেতার পুরস্কার জয়। এবার ‘দ্য সি অব ট্রিস’ ছবি নিয়ে কানে এসেছিলেন তিনি। ১৬ মে তাই অটোগ্রাফ নিতে যুদ্ধ করতে হবে অনুমান ছিল, হয়েছেও তা-ই। তবে জয়লাভ করেছি ঠিকই!
নাওমি ওয়াটস
ম্যাথু ম্যাকোনাহের সহশিল্পী নাওমি ওয়াটসের অটোগ্রাফ চাওয়ার জন্যও সাংবাদিকদের মধ্যে হুলুস্থুল পড়ে গিয়েছিল। ২০০২ সালে ‘দ্য রিং’ ছবির মাধ্যমে প্রথম বক্স অফিস সাফল্য পান তিনি। ওই বছরেই পিপল ম্যাগাজিনের চোখে বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর ৫০ মানুষের তালিকায় স্থান পান। ‘কিং কং’ (২০০৫) ছবিতে বিশাল গরিলা প্রেমে পড়েছিল তাঁর! ৪৬ বছর বয়সী এই ব্রিটিশ নন্দিনী হাসিমুখে অটোগ্রাফ দিলেন। ম্যাথুর মতো ধন্যবাদ জানালাম তাঁকেও। তিনিও স্বাগত বলে বিদায় নিলেন।
জেন ফন্ডা
তাঁর বয়স ৭৭ বছর। কিন্তু পোশাকে, চালচলনে তরুণীদের চেয়ে কম যান না জেন ফন্ডা। তিনি সাংবাদিকদের সামনে আসেন ২০ মে। ‘ইয়ুথ’ ছবিতে অভিনয়ের সুবাদে এবার কানে অংশ নেন মার্কিন এই অভিনেত্রী। দুবারের অস্কারজয়ী এই গুণী শিল্পীকে পেয়ে বাড়িয়ে দিলাম নোটপ্যাড আর কলম। একবার আমার দিকে তাকিয়ে নোটপ্যাডটা এগিয়ে নিলেন, অটোগ্রাফ দিলেন। ধন্যবাদ দিতে ভুললাম না তাঁকে!
র্যাচেল ভাইস
জেন ফন্ডার কাছ থেকে অটোগ্রাফ নিয়ে দেরি করলাম না একটুও। কয়েক মুহূর্তের মধ্যে জেমস বন্ডের অর্ধাঙ্গিনী মানে ড্যানিয়েল ক্রেগের সহধর্মিণী র্যাচেল ভাইসের অটোগ্রাফ নিতে পেরেছি। ‘দ্য মমি’ (১৯৯৯) ছবির সুবাদে তাঁর খ্যাতি দুনিয়াজোড়া। অবশ্য আরেকবার সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন র্যাচেল। এবারের কানে প্রতিযোগিতা বিভাগে স্থান পায় তাঁর দুটি ছবি। ১৫ মে ছিল ‘দ্য লবস্টার’ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন। কিন্তু ওই দিন কাউকেই অটোগ্রাফ না দিয়ে চলে যান তিনি। ঘন কালো ঢেউখেলানো চুলগুলো কাঁধ ছুঁয়েছে। হালকা বাদামি রঙা চোখ। সামনে থেকে এসব দেখেই সন্তুষ্ট থাকতে হলো ওই দিন। তবে ২০ মে সেই অপূর্ণতা ঘুচল। হাসিমুখে অটোগ্রাফ দিলেন ৪৫ বছর বয়সী এই ব্রিটিশ অভিনেত্রী।
বেন হুইশো
১৫ মে বন্ডের বউ কোনো অটোগ্রাফ না দিয়ে চলে গেলেও নিরাশ করেননি বন্ডের সহকর্মী কিউ। ‘স্কাইফল’ দেখলে তাঁকে চিনতে কষ্ট হওয়ার কথা নয়। জেমস বন্ডকে নানা তথ্য দিয়ে সহায়তা করাই কিউয়ের কাজ। বন্ড সিরিজের আগামী ছবি ‘স্পেক্টর’-এ আবার এ চরিত্রে অভিনয় করছেন বেন হুইশো। তিনিও ব্রিটিশ। ‘দ্য লবস্টার’ ছবির তারকা র্যাচেল ভাইস, কলিন ফেরেল, লেয়া সেদু, জন সি. রাইলি, অ্যাশলি জেনসেন, জেসিকা বার্ডেন ও অ্যাঞ্জেলিকি পাপুলিয়া এবং পরিচালক ইয়ুর্গেস লামিনটস সংবাদ সম্মেলন শেষে একে একে চলে গেলেন। কিন্তু এককোণে বসে বেন অটোগ্রাফ দিয়ে যাচ্ছিলেন, অনেকে সুযোগ পেয়ে দু-চারটা প্রশ্ন করে মোবাইলে তাঁর কথা রেকর্ড করে নিলেন।
পুরোটা পড়ুন বিশেষ আয়োজনে। অপেক্ষায় থাকুন!
** জাকারিয়া মন্ডলের পরিভ্রমণ | হারানো সভ্যতার বুকে হাঁটাহাঁটি
** ইমতিয়ার শামীমের উপন্যাস | লুকিয়ে রাখা জন্মদাগ
** মঈনুস সুলতানের ভ্রমণ | টাকোনিক ক্রেস্ট ট্রেইলের তুষারে হাইক
** হুমায়ূন আহমেদের অগ্রন্থিত গল্প | এলাচি বেগমের স্বদেশ যাত্রা
** হারুকি মুরাকামির উপন্যাস | শোনো বাতাসের সুর
** আন্দালিব রাশদীর উপন্যাস | কঙ্কাবতীর থার্ড ফ্লোর
** রাফিক হারিরির অনুবাদে | আলিফ লায়লা ওয়া লায়লা
** হাসান আজিজুল হকের আত্মজীবনী | বসন্তের বাতাসের মতো
** রকিব হাসানের থ্রিলার উপন্যাস | ভোরের জ্যোৎস্না
** মঞ্জু সরকারের উপন্যাস | মরা নদীর ঘাট
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৭ ঘণ্টা, জুলাই ৮, ২০১৫