স্বপ্ন ও সঙ্গীত
সঙ্গীতের এক প্রাচীনলিপি পেয়েছি, স্বপ্নে—
ভোরের শিশিরের শব্দ আর শুকনো পাতার পতনের মর্মরধ্বনি শুনতে পাই তাতে,
আমার মন গোপন বাদ্যযন্ত্রের সুরের লহরে ভাসে
ঝর্ণার গুঞ্জন শুনব বলে গিরিখাতের কিনারে দাঁড়িয়ে ছিলাম;
দিগন্তজুড়ে ছিল উজ্জ্বল তারাদের মিটিমিটি হাসি,
জ্যোৎস্নার প্লাবনে ভাসছিল রুপালি ঝর্ণা, মায়াবি নদী
একঝাঁক বলাকা ইশারায় ডেকেছিল
কী ভীষণ ব্যাকুল ছিলাম!
নাইটেঙ্গেলের পাখায় ভর করে ব্যালে নাচতে নাচতে খাঁদের বুক থেকে ঝুরঝুরে বালির মতো উড়ে যাই...
স্বপ্নে বন্দি আমি
আমার হৃদয় নোঙর করে ভোরের সোনালি আভায়।
একটু উষ্ণতার জন্য
বসন্তের গোপন সুর থেকে ভেসে আসে কামনার শীৎকারধ্বনি, ট্রেনের শীতল করিডোরে দাঁড়িয়ে ছিলাম একটু উষ্ণতার জন্য।
পরিযায়ী পাখির চোখে
ইয়েলো ব্রেস্টেড বান্টিং গাইয়ে পাখির পিঠে মরীচিকার ডানা উঠেছে;
অর্কেস্ট্রায় অর্গান বাজিয়ে বাজিয়ে ক্লান্তির বিধুরতা
বৃষ্টি আর স্তব্ধতার মাঝেও বুঝি দীর্ঘ আলোর ঝলক লেগে থাকে সাগরবেলায়!
ঝিমধরা স্মৃতিকে উসকে উসকে পাণ্ডুলিপি লিখে চলেছি—
গালিচায় মিহি হাওয়ায় জেটি দুলে দুলে ওঠে, আর
মুহুর্মুহু ধ্বনিপুঞ্জ এসে জীবন সায়াহ্নে গূঢ়লিপি আঁকে;
পরিযায়ী পাখির চোখে দেখি—
মত্ত-মাতাল গাঙচিল দূর থেকে দূরে উড়ে চলে যায় মৃত্যুকে ছোঁয়ার আশায়;
তবু মেঘের গোলাপি বুকে মুখ গুঁজে, লালসার মদিরায় বুদ্বুদ চোখ বুজে দেয়;
কবেকার সেই পুরাতন মাস্তুল পচে গলে গেছে, কুঁচকে গেছে তরুণ পাল! তাই তো
সূর্যকে ভালোবাসার দায়ে পৃথিবী আজ পুড়ে পুড়ে অঙ্গার!
ঘরের দোরগোড়ায় অন্ধকারের কুয়াশা আমাকে ডেকে নেয়;
আর বোকা বানিয়ে আপনা থেকেই নিচে ঝরে পড়ে সব থোকা থোকা ফুল শেষ বিদায়ের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায়।
বাংলাদেশ সময়: ১১১৫ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০১৬
টিকে/