বুধবার (২০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাংলা একাডেমির আব্দুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে মাহবুবুল হক শাকিল পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অনুভূতি প্রকাশ করেন।
প্রথমবারের এ পুরস্কার পেলেন কবি রাসেল রায়হান।
মাহবুবুল হক শাকিলের ৪৯তম জন্মোৎসব উপলক্ষে এ
অনুষ্ঠানের আয়োজন করে মাহবুবুল হক শাকিল সংসদ। এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আজকের দিনটি উৎসবের দিন, শোকের দিন নয়। শাকিলকে পেলাম অনেক পরে ১৯৮৬ সালে। সিআরআই প্রতিষ্ঠার পরে তার সঙ্গে কাজ শুরু হয়। তিনি ছিলেন আমার সহকারী।
মন্ত্রী বলেন, শাকিল জটিল বিষয় সহজে আত্মস্থ করার মধ্য দিয়ে প্রতিবেদন হিসেবে উপস্থাপন করত। কাজে এই রকম সিস্টেমেটিক লোক কম দেখেছি। তিনি মিটিং এর মাঝখানে উঠে কম্পিউটারে কাজ করত। তারপর সুন্দর সারবস্তু বের করে নিয়ে আসতো। শাকিল আমার পরিচয় বলয়কে ব্যাপকভাবে বিস্তৃত করে। আমি রাজনীতিবিদ শাকিলকে চিনেছি। তার রাজনৈতিক জ্ঞান ছিল অনেক উঁচু স্তরের।
শাকিলকে শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, অল্প সময়ের মধ্যে কঠিন বিষয় আত্মস্থ করে তার উপর প্রতিবেদন করে দিত শাকিল। তার এই গুণটার জন্য আমি তাকে শ্রদ্ধা করি। তাকে শ্রদ্ধা করার সুযোগ পেয়ে আমি নিজেকে গর্বিত মনে করি।
অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, শাকিল জীবনকে অনেক ভালোবাসত নিজের মতো করে। তিনি যেভাবে নিজের জীবনকে উপভোগ করতে চেয়েছিল এর জন্য নিজেকে কমবয়সী মানুষ হতে হত তাহলেও সেদিকে ভ্রুক্ষেপ করত না। তিনি আট দশজন মানুষের চেয়ে আলাদা ছিল। শাকিল সব বয়সের মানুষের সঙ্গে মিশতেন। সবাই তার বন্ধু ছিল।
শাকিলের সাহিত্য প্রতিভা নিয়ে তিনি বলেন, কবিতার পাশাপাশি গল্প লেখা শুরু করেছেন। কিন্তু তার গল্পের বই প্রকাশ পাওয়ার আগেই চলে গেছেন। কিন্তু তার বই পড়ে মনে হয়েছে বাংলা কথা সাহিত্যে তার অনেক কিছু দেয়ার ছিল। যে সাহিত্য কর্ম ও সম্পর্ক রেখে গেছেন তা কোন দিন বিলীন হবে না।
শাকিলের বাবা ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জহিরুল হক খোকা বলেন, আজকের দিনটি আনন্দের আবার একই সঙ্গে বিষাদের। শাকিল আপনাদের মাঝে ছিলেন, কাজ করেছেন। রাজনীতি থেকে সাহিত্য অঙ্গন পরে সাংস্কৃতিক জগতে বিচরণ করেছেন। সে সবখানে কতটুক ঝড় তুলতে পেরেছিল কিনা জানি না তবে মৃদু ঢেউ তুলতে পেরেছিল।
শাকিলের স্ত্রী আইনজীবী নিলুফার আনজুম পপি বলেন, শাকিল চাইতেন সবাই তাকে ভালোবাসুক। রবীন্দ্র সঙ্গীত শুনতে শুনতে ঘুম থেকে উঠতে পছন্দ করত। শাকিল নেই এটা আমার মনে হয় না। আমরা তাকে আনন্দের মধ্য দিয়ে আবার স্মরণ করতে চাই।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন, শাকিলের বন্ধু আফজালুর রহমান বাবু, আবৃত্তিকার লায়লা আফরোজ, ফজিলাতুন্নেছা এমপি, সাংবাদিক প্রভাষ আমিন, বিশিষ্ট সাংবাদিক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ, কবি আসলাম সানী, সংসদ সদস্য কবি কাজী রোজী, ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আবিদ আল হাসান, সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স, মাহবুবুল হক শাকিল সংসদের আহ্বায়ক কবি হাবিবুল্লাহ সিরাজী প্রমুখ।
বক্তব্যের বিরতিতে শাকিলের রচিত কবিতা আবৃত্তি, সঙ্গীত ও জীবনী ভিত্তিক ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়।
আয়োজকরা জানান, প্রথমবারের মতো কবিতার জন্য তরুণদের কাছ থেকে লেখা জমা নেয়া হয়। সেখান থেকে একজনকে বাছাই করে নির্বাচকরা। আগামীতে পুরস্কারের সংখ্যা ও ক্যাটাগরি বাড়ানো হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৭
এসকেবি/এসএইচ