ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

বৃদ্ধ মানুষগুলোকে ভালো রাখতে পারে সংগীত-নৃত্য

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ৯, ২০১৮
বৃদ্ধ মানুষগুলোকে ভালো রাখতে পারে সংগীত-নৃত্য সেমিনারে অতিথিরা। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: ৬০ বছর পার হলেই মানুষ বৃদ্ধ হয়। এ সময়েই ঘটে তার আবেগ, মানসিক ও স্বাস্থের নানান সমস্যা। বৃদ্ধ মানুষগুলো ভাবতে শুরু করে, ‘আমি সম্ভবত সকলের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছি। আমার কথাগুলো শোনার মতো কেউ নেই।’

আর এ জায়গা থেকে মানুষগুলোকে একটু ভালো রাখার জন্যই বেছে নেওয়া হয়েছে সংগীত ও নৃত্য।

সমাজের বৃদ্ধ মানুষগুলোকে মানসিক ও সামাজিকভাবে আরও একটু ভালো রাখার উপায় হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে ডান্স ও মিউজিক থেরাপি।

শাস্ত্রীয় সংগীত ও নৃত্যের মধ্য দিয়ে বৃদ্ধাশ্রমের মানুষগুলোকে ভালো রাখার সে আয়োজন নিয়েই অনুষ্ঠিত হলো ‘সাইকো-সোস্যাল প্রবলেমস অব ইলডারলি অ্যান্ড ডান্স থেরাপি’ শীর্ষক কর্মশালা।

সোমবার (০৯ জুলাই) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদের লেকচার থিয়েটারে অনুষ্ঠিত এ সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ভারতের আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সোস্যাল ওয়ার্ক বিভাগের পিএইচডি স্কলার সুষমা মুখার্জী। আলোচনা করেন একই বিভাগের অধ্যাপক শুভব্রত দত্ত এবং ঢাবি’র নৃত্যকলা বিভাগের শিক্ষক র‌্যাচেল প্রিয়াংকা প্যারিস।

প্রাবন্ধিক বলেন, বৃদ্ধাশ্রমগুলোতে শুধু নিয়ম করে চার বার খাবার দেওয়া আর অসুস্থ হলে ডাক্তার দেখানোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখা হয় মানুষগুলোকে। কিন্তু এই সময়ের বাইরে সারাটা দিন তাদের কিভাবে কাটবে, সে ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেই। লাইব্রেরি নেই, ভ্রমণের ব্যবস্থা নেই, এমনকি বিনোদনের ব্যবস্থাও নেই সেভাবে। সব মিলিয়ে তাদের যেনো কোনো কাজ নেই দিন যাপনের। আর এ একাকীত্বই একজন বৃদ্ধ মানুষকে আরও বেশি বৃদ্ধ ও অসুস্থ করে তোলে। শুরু হয় আবেগ, মানসিক ও স্বাস্থের সমস্যা।

তিনি বলেন, এ মানুষগুলোর জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়ে যদি কোনো নৃত্য বা সংগীত তাদের উপহার দেওয়া যায়, তবে তাদের মানসিক স্বাস্থ্যটা একটু হলেও উন্নত হতে পারে। তাদের একাকীত্বটা কাটতে পারে। এছাড়া শাস্ত্রীয় নৃত্যের ছোট ছোট বিভিন্ন মুদ্রা অনুশীলনের মধ্য দিয়েও তাদের শরীর ও হৃদয়ের যত্ন নেওয়া সম্ভব।

অধ্যাপক শুভব্রত দত্ত বলেন, বৃদ্ধ মানুষগুলো বৃদ্ধাশ্রমে আসার পর ভাবতে শুরু করে যে, ‘আমি সম্ভবত সকলের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছি। আমার কথাগুলো শোনার মতো কেউ নেই। ’ তাদের আলাদা কোনো লাইফস্টাইল নেই, সবসময়ই একা, একটা অবসাদপূর্ণ জীবন। আর এ অবসাদ ও ভাবনাটা দূর করার ক্ষেত্র সংগীত ও নৃত্য রাখতে পারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।

র‌্যাচেল প্রিয়াংকা প্যারিস বলেন, শুধু বৃদ্ধাশ্রম নয়, বৃদ্ধ যারা বাড়িতে থাকেন, তাদের জন্যও এটি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে
সঙ্গে মানুষের মস্তিস্কের কার্যক্ষমতা কমতে থাকে। নৃত্য এ কার্যক্ষমতা ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ঢাবি’র চারুকলা অনুষদের ডীন অধ্যাপক শিশির কুমার ভট্টাচার্য। এসময় উপস্থিত ছিলেন গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর
খন্দকার নাসির উদ্দিন।

অনুষ্ঠান সমন্বয় করেন চারুকলা অনুষদের প্রাচ্যকলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মলয় বালা।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৮ ঘণ্টা, জুলাই ০৯, ২০১৮
এইচএমএস/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।