গত শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় শহরের পর্যটন মোটেল সড়কের কক্স কার্নিভাল সেন্টারে শুরু হওয়া এ উৎসব সোমবার (২৫ নভেম্বর) রাতে শেষ হয়।
উৎসবের শেষ দিন বাংলাদেশি শিল্পী শাম্মী আকতারের ‘মাইন’; চীনের শিল্পীদের ‘টয়লেট পাম্প’; ভারতের শিল্পীদের ‘টাচ দ্য সাউন্ড’সহ বিভিন্ন দেশের আটটি পরিবেশনা হলভর্তি দর্শকদের মুগ্ধতায় ডোবায়।
দ্য ওয়ার্ল্ড ড্যান্স অ্যালায়েন্স-এশিয়া প্যাসিফিকের (ডব্লিউডিএ-এপি) বাংলাদেশ শাখার ‘নৃত্যযোগ’ আয়োজিত এ উৎসবে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, চীনসহ বিশ্বের ১৫টি দেশের ২০০ নৃত্যশিল্পী অংশ নেন।
সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বাবু উৎসবের উদ্বোধন করার পর প্রতিদিন বিকেল সাড়ে পাঁচটা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত এ আয়োজন চলে। এতে পরিবেশনার মধ্যে ছিল লোকনৃত্য, সমসাময়িক নৃত্য, শাস্ত্রীয় নৃত্য ও নৃত্যনাট্য। এছাড়া প্রতিদিন ভোর থেকে কক্সবাজারের পেঁচারদ্বীপ এলাকার সমুদ্র সৈকতে অনুষ্ঠিত হয় বিষয়ভিত্তিক বক্তব্য উপস্থাপন, কর্মশালা ও সেমিনার।
উৎসবে তাইওয়ানের শিল্পীদের ‘বাটু উইথ অর্নামেন্ট’, ‘নট অ্যালোন’, ‘ইমপ্রেশনস অব আওয়ার হোম টাউন’, ‘গ্রেটার দ্যান টু লেস দ্যান’; যুক্তরাষ্ট্রের ‘ত্রিকোণ কানেকটিভিটি’, ভারতের ‘এজেস’, ‘ইনট্রানসিট’, ‘আনশেয়ারড ডিজায়ারড’, ‘টাচ দ্য সাউন্ড’, দক্ষিণ কোরিয়ার ‘স্প্রিং কামিং উইথ আ ওয়ার্ম ব্রিজ’ ও চীনের শিল্পীদের ‘টয়লেট পাম্প’ পরিবেশনা সবাইকে মুগ্ধ করে
ছিল লিথুনিয়া ও ভারতের শিল্পী ক্রিস্টিনা ডলিনিনা ও শিবানি ভার্মার ‘হ্যাভ উই মেট বিফোর?’; যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের অনন্যা চ্যাটার্জি ও তাসকিন আনহারের ‘তফাত’; ভারতের সেফায়ার ক্রিয়েশন ও বাংলাদেশের নৃত্যশৈলীর প্রযোজনা ‘কি তা রে বা’; ভারত ও বাংলাদেশের অনিল কুমার সিং ও মোফাজ্জল আলিফের ‘আই অ্যান্ড মাইসেল্ফ’ এবং কানাডার সাশার জারিফের সঙ্গে কোরিওল্যাব থেকে নির্মিত হংকং, ভারত ও বাংলাদেশের একটি বিশেষ প্রযোজনাও।
উৎসবে দেশীয় শিল্পীদের মধ্যে অমিত চৌধুরী ও সুইটি দাসের ‘রূপান্তর’; জুয়েইরিয়াহ মৌলির ‘অর্ধনারীশ্বর’; শাম্মী আখতারের ‘মাইন’; আনন্দিতা খানের ‘রিফিউজি’; মৌমিতা জয়ার ‘রিলিজিয়ন: অ্যা কজ অব কনফ্লিক্ট ইন কালচার’; আবু নাঈম খানের ‘লালন’; আরিফুল ইসলাম অর্ণবের ‘মানুষ’; তাহনুন আহমেদীর ‘আজান’; মেহরাজ হক তুষারের ‘ট্রাস্ট’; অলকা দাস প্রান্তির ‘কত্থক টু ওড়িশি’ ও বৃষ্টি ব্যাপারির ‘ফ্রেম অব মাইন্ড’ও সবার বাহবা কুড়ায়।
উৎসবে কক্সবাজারে প্রথমবারের মতো মঞ্চস্থ হয় নৃত্যনাট্য ‘বাদী-বান্দার রূপকথা’। সুকল্যাণ ভট্টাচার্যের নৃত্য পরিচালনায় এ নৃত্যনাট্যে শামীম আরা নীপা ও শিবলী মহম্মদসহ আশি জনেরও বেশি শিল্পী অংশ নেন। এছাড়া লায়লা হাসান, মুনমুন আহমেদ, তামান্না রহমান, রাজদ্বীপ ব্যানার্জি, সাজু আহমেদ প্রমুখ শিল্পী ও তাদের দলের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনাও ছিল উৎসবে।
আয়োজনে বাংলাদেশের নির্বাচিত দলগুলোর মধ্যে সাধনা, নৃত্যাঞ্চল, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, কল্পতরু, ধৃতি নর্তনালয়, ভাবনা, নৃত্যশৈলী, বন্ধু সোশাল ওয়েল ফেয়ার সোসাইটিসহ বিভিন্ন সংগঠনের শিল্পীরা নৃত্য পরিবেশন করেন।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আশরাফুল আবসার বাংলানিউজকে বলেন, প্রথমবারের মতো কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক নৃত্য উৎসবের আয়োজন করা হয়। পর্যটন শহর হিসেবে এ আয়োজন কক্সবাজারের জন্য অবশ্যই ইতিবাচক। পর্যটনশিল্পের বিকাশে এ ধরনের আয়োজন ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। এছাড়া এ ধরনের আয়োজনে বরাবরের মতো জেলা প্রশাসনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০২১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০১৯
এসবি/এইচএ/