বিশেষ এ সংখ্যায় থাকছে বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসাম ও উত্তরবঙ্গের জীবিত ১০০ জন গুরুত্বপূর্ণ কবির কবিতা। এর মধ্যে বাংলাদেশ থেকে ৫০ ও ভারত থেকে ৫০ জন কবিকে নির্বাচন করা হয়েছে।
সম্প্রতি ভিন্নচোখের বিশাল এ কর্মযজ্ঞের ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে এর সম্পাদক ও প্রকাশক আলী আফজাল খান ও শিল্প নির্দেশক বিকাশ আনন্দ সেতুর সঙ্গে এক সাহিত্য-বৈঠকিতে বসে বাংলানিউজ।
রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার ইস্ট-ওয়েস্ট মিডিয়া কমপ্লেক্সের বাংলানিউজ কার্যালয়ে গত বুধবার (২২ জানুয়ারি) বিকেলে জমে ওঠে এ বৈঠকি।
এতে অংশ নেন- বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর.কমের সম্পাদক কবি জুয়েল মাজহার, ভিন্নচোখের সম্পাদক কবি আলী আফজাল খান, শিল্প নির্দেশক বিকাশ আনন্দ সেতু, বাংলানিউজের হেড অব নিউজ কবি আহমেদ জুয়েল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট কবি উপল বড়ুয়া ও নিউজরুম এডিটর কবি হিজল জোবায়ের।
বৈঠকির বিভিন্ন মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করেন বাংলানিউজের ফটো করেসপন্ডেন্ট রাজীন চৌধুরী। চিত্রধারণে ছিলেন ভিডিও প্রডিউসার সাইফুল ইসলাম আদনান।
বৈঠকির শুরুতেই বাংলাদেশ ও ভারতের বাংলাভাষী কবিদের নিয়ে বিশাল কলেবরে কবিতার এরকম একটি সংকলনের চিন্তা কীভাবে মাথায় এলো সেই প্রশ্ন ছুঁড়ে দেওয়া হয় আলী আফজাল খানের উদ্দেশ্যে।
তিনি বলেন- আসলে এর আগেও আমরা আরেকটি কবিতা সংকলন করেছিলাম কেবলমাত্র বাংলাদেশের ৪০ কবির কবিতা নিয়ে। এটি বের হয় ২০১৪ সালে। এর পরবর্তী ধাপ হিসেবেই দুই বাংলার কবিদের এক মলাটে আনার চিন্তা করি। তারই বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে বাংলাবিশ্ব কবিতা সংখ্যার মধ্য দিয়ে। এ ধরনের কাজ যে এখানেই থেমে যাচ্ছে তা নয়, এরপরে আমরা এই ১০০ কবির কবিতা সংখ্যাটিকে অনুবাদের মাধ্যমে ইংরেজিতে প্রকাশ করে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবো। এটি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার অংশ। এই সংখ্যার কাজ করা হচ্ছে গত ২ বছর ধরে।
আমরা মোটেই দাবি করবো না যে, এটি প্রশ্নাতীত কোনো সংকলন। কিন্তু আমরা চেষ্টা করেছি গুরুত্বপূর্ণ কবিদের সন্নিবেশিত করতে। আমার মনে হয়, পাঠকরা আমাদের নির্বাচনের ব্যাপারে অন্তত ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রেই সহমত পোষণ করবেন। এরপরও হয়তো গুরুত্ব্বপূর্ণ দুয়েকজন কবি বাদ যেতে পারেন।
এই সূত্র ধরে কবি জুয়েল মাজহার বলেন, আসলে পৃথিবীর কোনো সংকলনই বিতর্কের ঊর্ধ্বে নয়। একটি সংকলনে সবাইকে জায়গা দেওয়া সম্ভব হয় না। যেহেতু বিভিন্ন রুচির মধ্যে সমন্বয় করতে হয়। তারপরে নানা কারণেই অনেক লেখক সেভাবে সাড়া দেন না বা দিতে পারেন না। আরও অনেক বিঘ্ন থাকে। ফলে সংকলনের সাফল্য ১০০ ভাগ নিশ্চিত করা যায় না।
ভিন্নচোখের বাংলাবিশ্ব কবিতা সংখ্যার ১০০ কবিকে কোন কোন কালপর্ব থেকে নির্বাচন করা হয়েছে জানতে চাইলে আলী আফজাল খান বলেন, আমাদের কবি নির্বাচনের একটা ক্রাইটেরিয়া এই ছিল যে, আমরা শুধুমাত্র জীবিত কবিদের নিয়ে কাজ করবো। যেমন এই সংখ্যার কাজ শুরুর সময় নবনীতা দেব সেন আমাদের লেখা দিয়েছেন, তিনি তখনও বেঁচে ছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি তার মৃত্যু হয়েছে। ফলে এ সংখ্যায় আমরা আর তার লেখা রাখতে পারছি না। যদিও তাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে একটা কর্নার থাকবে। বাংলাদেশের প্রবীণ কবি যেমন ধরেন আসাদ চৌধুরী, মহাদেব সাহা, নির্মলেন্দু গুণ, মোহাম্মদ রফিক থেকে শুরু করে শুন্য দশক সময়কালের কবিরাও এতে আছেন। অন্যদিকে ভারতের সিনিয়রদের মধ্যে শঙ্খ ঘোষ, অলোক রঞ্জন দাশগুপ্ত, জয় গোস্বামীর মতো কবিরাও এ সংকলনে আছেন।
আমরা চেয়েছি মানুষ যেন এই সংখ্যা থেকে চলমান বাংলা কবিতার পাল্সটা ধরতে পারে। কবিদের নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমরা যে প্রত্যেক দশক বা প্রজন্ম থেকে হিসেব করে সমান সংখ্যক কবিকে নিয়েছি তা নয়। কোনো কোনো কালপর্ব থেকে হয়তো বেশি লেখক এসেছেন, আবার অনেক প্রজন্মের লেখকের সংখ্যা কম। যাদের নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেছি তাদের লেখাই হাজির করার চেষ্টা করেছি।
কেবল জীবিতদেরই কেন এই সংখ্যায় রাখা হচ্ছে, এর বাইরে তো গুরুত্বপূর্ণ অনেক কবি আছেন, এ প্রশ্ন রাখা হলে ভিন্নচোখ জানায়, ওই যে বললাম, বাংলা কবিতার লিভিং পাল্সটা যাতে পাঠকের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়, সেই উদ্দেশ্যেই করা।
সেটা করতে যেয়ে আমরা অনেক বিরলপ্রজ কিন্তু জীবিত কবি, হয়তো তারা নানা কারণে লোকচক্ষুর আড়ালে চলে গেছেন, যেমন আশির দশকের কবি অসীম কুমার দাশ, তার মতো আরও অনেককেই আমরা এ সংকলনে অন্তর্ভুক্ত করেছি। আবার অনেকেই দেখা গেছে কোনো যোগাযোগমাধ্যমে নেই, অনেক কষ্ট করে বিভিন্ন জনের মারফতে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে লেখা সংগ্রহ করা হয়েছে।
এবারে কবি উপল বড়ুয়া জানতে চান, এই সংখ্যায় কেবলমাত্র কবিদের কবিতাই স্থান পাচ্ছে নাকি বিশ্লেষণী গদ্য বা এরকম আরও কিছু থাকছে।
ভিন্নচোখের সম্পাদক বলেন, কবিতার সঙ্গে প্রত্যেক কবির পরিচিতি এবং যারা কবিতাভাবনা দিয়েছেন সেগুলো থাকছে। অনেকেই কবিতাভাবনা দেননি। তবে প্রত্যেক কবির কবিতা থাকছে ১ ফর্মা অর্থাৎ ১২ পৃষ্ঠা জুড়ে। ফলে আমাদের মনে হয়, প্রত্যেক কবির ব্যাপারে একটি স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে এ সংখ্যা থেকে। এটি প্রায় ২০০০ পৃষ্ঠার একটি সংকলন। ছাপা হবে ফোর কালারে, ১২০ গ্রাম আর্ট পেপারে।
এতো বিশাল আয়তনের কোনো সংকলনের মূল্য তো অনেকের সামর্থ্যের বাইরে থাকবে, এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উত্তর আসে, আমরা এর আগে বেশ কিছু সংখ্যারই সুলভ সংস্করণ করেছিলাম। আসন্ন সংখ্যাটির ক্ষেত্রে সহসাই সুলভ সংস্করণ করার ইচ্ছা আমাদের নেই। দূর ভবিষ্যতে হতেও পারে। তবে এক পর্যায়ে আমরা সবার সুবিধায় ই-বুক ছাড়ার পরিকল্পনা করছি। আসন্ন সংখ্যাটির মূল্য ২ হাজার টাকা। তবে প্রি-বুকিং করলে তা ১ হাজার টাকায় সরবরাহ করা হবে।
সংখ্যাটিকে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দেওয়ার ব্যাপারেও আমাদের নানা পরিকল্পনা আছে। আমরা অন্তত ১শ’ লাইব্রেরিতে এটি বিনামূল্যে বিতরণ করবো। এছাড়া বাংলা ভাষার ডায়াস্পোরা লেখক, যারা বিভিন্ন দেশে বসবাস করছেন, তাদের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এটি ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা আমাদের আছে।
এ সূত্র ধরে জুয়েল মাজহার ভিন্নচোখের সম্পাদকের কাছে জানতে চান বিশাল কলেবরের এ সংকলনটির প্রকাশনা বাবদ প্রতি কপিতে কী রকম খরচ পড়ছে।
আলী আফজাল খান জানান, প্রতি কপির পেছনে গড়ে ৩ হাজারেরও কিছু বেশি টাকা ব্যয় হচ্ছে। ২ হাজার টাকায় বিক্রি করা হলেও প্রতি কপিতে ১ হাজার টাকা ভর্তুকি। এই অর্থের বেশিরভাগটাই বন্ধুবান্ধব, শুভানুধ্যায়ী মিলিয়ে নিজেদের পকেট থেকেই দিতে হচ্ছে। এ কাজ আসলে নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর মতো। সাহিত্যের প্রতি দুর্বার প্রেমের ফলেই এমনটা সম্ভব হচ্ছে।
৫ দেশের ৭০ শিল্পী আঁকছেন ১শ’ বাঙালি কবির প্রতিকৃতি
বৈঠকিতে আলী আফজাল খান জানান শুধু ১শ’ কবির কবিতা ও কবিতা ভাবনাই নয়, বাংলাবিশ্ব কবিতা সংখ্যায় অন্তর্ভুক্ত কবিদের পোর্ট্রেট আঁকায় অংশ নিয়েছেন ৫টি দেশের ৭০ জন চিত্রশিল্পী। দেশগুলো হলো- বাংলাদেশ, ভারত, বুলগেরিয়া, ইউক্রেন ও চেকোস্লোভাকিয়া।
একই জায়গায় কবিতা ও চিত্রকলা, লেখক ও চিত্রশিল্পীদের সম্মিলন ঘটানোর লক্ষ্যেই শ্রমসাধ্য এ প্রয়াস চালানো হয়েছে বলে জানায় ভিন্নচোখ। কবিতা ও চিত্রকলা পরস্পরের সঙ্গে নানাভাবে সম্বন্ধযুক্ত। শিল্পের সব মাধ্যমের মানুষজনকে এক করার একটা প্রস্তাবনা হিসেবে দেখা যায় ভিন্নচোখের কাজকে। বিগত দিনগুলোতে সব মাধ্যমের শিল্পীদের সঙ্গে সব মাধ্যমের যোগাযোগ ছিল, এখন নানা কারণে, বিভিন্ন জটিলতায় তা কমে গেছে। কিন্তু সেই যোগাযোগগুলো আবারও বাড়ুক তেমন প্রত্যাশা ভিন্নচোখের।
এই সূত্র ধরেই জুয়েল মাজহার বলেন, আশির দশকে বিভিন্ন শিল্পমাধ্যমে কাজ করা আমাদের বিশাল এক বন্ধুবৃত্ত ছিল। প্রায় এক-দেড়শ’ জনের বৃত্ত। সেখানে কবি, চিত্রশিল্পী, মঞ্চশিল্পী, ফিল্মমেকার থেকে শুরু করে সব মাধ্যমের মানুষ ছিল। কেউ হয়তো চারুকলায়, কেউ উদ্যানে, কেউ পিজিতে, কেউবা আজিজে আড্ডা দিচ্ছে। আমরা এ আড্ডা থেকে ও আড্ডায় যাচ্ছি। শিশির ভট্টাচার্য্য, আমান উল্লাহ, ওয়াকিল, সাজ্জাদ শরীফ, নুরুল আলম আতিক, মোস্তফা সরয়ার ফারুকী থেকে শুরু করে আরও অনেকেই এসব আড্ডায় ছিলেন। এখন হয়তো কালের বাস্তবতায় সেই ধরনের আড্ডা কমে গেছে, তবে তারপরও আমার মনে হয়, আমরা হয়তো জানি না, এই মুহূর্তেও কোথাও এমন আড্ডা দিচ্ছে এ প্রজন্মের কবি-সাহিত্যিক-শিল্পীরা।
এই আড্ডাগুলো হওয়া দরকার। কবিতা আমার প্রিয়, সেই সঙ্গে ভীষণ প্রিয় চিত্রকলা। আমাদের আড্ডায় দেখা যেতো কোনো বন্ধু পিকাবিয়া নিয়ে হয়তো দীর্ঘক্ষণ কথা বলছে, কেউ হয়তো তাহিতি পর্বের পল গগ্যাঁর ছবি নিয়ে কথা বলছে, কেউবা রেনে মাগ্রিথ নিয়ে কথা বলছি, মদিগ্লিয়ানি নিয়ে বলছি। এভাবে দিনের পর দিন আমরা আড্ডা দিয়েছি। এতে নিজেকে সবসময় উজ্জীবিত রাখা যায়, বৈচিত্র্যের স্বাদ নেওয়া যায়।
কবিদের পোর্ট্রেট আঁকার জন্য ৫ দেশের এই ৭০ শিল্পীর সঙ্গে কীভাবে যোগাযোগ করা হলো জানতে চাইলে ভিন্নচোখের শিল্প নির্দেশক বিকাশ আনন্দ সেতু জানান, বেশিরভাগের সঙ্গেই মূলত ফেসবুকসহ বিভিন্ন ভার্চুয়াল মাধ্যমে যোগাযোগ। কারও কারও সঙ্গে আগে থেকেই বন্ধুত্ব ছিল। আমরা তাদের কাছে আমাদের আইডিয়া খুলে বলেছি, বেশিরভাগ শিল্পীই সানন্দে সাড়া দিয়েছেন। কোনো পারিশ্রমিক বা সম্মানী ছাড়াই ভালোবাসার বিনিময়ে তারা এরকম একটি কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। আমি চারুকলায় পড়েছি। আমার অনেক সিনিয়র, জুনিয়র এমনকি শিক্ষক পর্যন্ত এ ধরনের একটি কাজের সঙ্গে নিজেদের যুক্ত রাখার আগ্রহ পোষণ করেছেন। আমরা অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি। কবি ও চিত্রশিল্পীদের এক মলাটে আনার ব্যাপারটা সবাই খুব পছন্দ করেছে।
এ পর্যায়ে বাংলানিউজের হেড অব নিউজ কবি আহমেদ জুয়েল প্রশ্ন রাখেন, গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু গত ১০-১৫ বছরে হয়তো লেখা প্রকাশ করেননি, এমন নিভৃতচারী কবিদের লেখাও এ সংকলনে আছে কিনা।
এর উত্তরে আলী আফজাল খান জানান, যেমন একটু আগেই আমরা কবি অসীম কুমার দাশের কথা বললাম। তিনি দীর্ঘদিন লেখালেখির জগত থেকে দূরে। কোথাও লেখা প্রকাশ করেন না। কিন্তু, তিনি গুরুত্বপূর্ণ, তার লেখা তার প্রজন্মের প্রতিনিধিত্ব করে। ফলে অনেক কষ্ট করে হলেও অনুমতিসাপেক্ষে আমরা তার লেখা সংগ্রহ করেছি। বা ভারতের কবি নির্মল হালদার, তিনিও সাহিত্যের তথাকথিত ডামাডোল থেকে দূরে বাস করা মানুষ, আমরা তার লেখাও সংগ্রহ করেছি। এরকম অনেকেই আছেন এ সংকলনে।
বাংলাবিশ্ব কবিতা সংখ্যার প্রচ্ছদের জন্য নির্বাচন করা হয়েছে শিল্পী এসএম সুলতানের একটি কাজ। শুধু এ সংখ্যাই নয় ভিন্নচোখের আগের কিছু সংখ্যাতেও এসএম সুলতানের চিত্র অবলম্বনে প্রচ্ছদ করতে দেখা যায়। এ শিল্পীকে নির্বাচনের পেছনে বিশেষ কোনো তাৎপর্য্য আছে কিনা জানতে চাইলে আলী আফজাল বলেন, এসএম সুলতান আমাদের বাংলার মানুষের যে সংগ্রাম ও স্বরূপ সেটাকে সবচেয়ে ভালোভাবে ফুটিয়ে তোলেন। আমরা আজকে যে বি-উপনিবেশায়নের কথা বলি এসএম সুলতানের কাজে সেটা দেখতে পাওয়া যায়। সুলতান আমাদের দুঃখকে চিত্রিত না করে বরং আমাদের যে পজিটিভ সংগ্রাম, সেটাকে তুলে ধরেছেন। ফলে তাকে নির্বাচনের পেছনে আমাদের দার্শনিক, রাজনৈতিক অবস্থান কাজ করেছে।
এসএম সুলতান প্রসঙ্গে জুয়েল মাজহার আরও যোগ করেন, বিশেষ করে তার কাজে পূর্ববঙ্গের মানুষের যে সংগ্রামশীলতা, ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই, যুথবদ্ধতা এসবই পাওয়া যায়। আমরা কৃষককে নতজানু জানি, কিন্তু তার যে পেশলতা, অন্তর্গত শক্তি সেটাকে ফুটিয়ে তোলেন এসএম সুলতান।
এসএম সুলতানই একমাত্র এশিয়ান পেইন্টার ৫০’র দশকে ইউরোপের বিভিন্ন জায়গায় যার জয়েন্ট এক্সিবিশন হয়েছিল পিকাসো, মাতিস, দালির মতো জগতবিখ্যাত সব শিল্পীদের সঙ্গে।
বাংলাবিশ্ব কবিতা সংখ্যাটি মেলার প্রথম দিন থেকেই পাওয়া যাবে কিনা জানতে চান কবি আহমেদ জুয়েল।
আলী আফজাল খান বলেন, এবারের মেলা একদিন পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। আশা করছি মেলা শুরুর দুই তিনদিন পর থেকে এটা পাওয়া যাবে।
সবশেষে কবি জুয়েল মাজহার পাঠকের কৌতূহল নিবৃত্তির উদ্দেশ্যে বাংলাবিশ্ব কবিতা সংখ্যায় সন্নিবেশিত জননন্দিত কয়েকজন কবির নাম জানতে চান।
আলী আফজাল খান জানান, এ সংখ্যায় শঙ্খ ঘোষ, জয় গোস্বামী, নির্মলেন্দু গুণ, হেলাল হাফিজ, সুবোধ সরকার, জহর সেন মজুমদার, রণজিৎ দাশ থেকে শুরু করে সাম্প্রতিকতম সময়ের স্বনামখ্যাত কবিরা আছেন।
বাংলাবিশ্ব কবিতা সংখ্যার কবিদের তালিকা
বাংলাদেশ- মহাদেব সাহা, নির্মলেন্দু গুণ, আসাদ চৌধুরী, মুহাম্মদ নুরুল হুদা, অসীম সাহা, মোহাম্মদ রফিক, হাবীবুল্লাহ সিরাজী, রুবি রহমান, হেলাল হাফিজ, কামাল চৌধুরীভাস্কর চৌধুরী, তসলিমা নাসরিন, নাসির আহমেদ, মঈন চৌধুরী, মতিন বৈরাগী, গোলাম কিবরিয়া পিনু, আবু হাসান শাহরিয়ার, শামীম আজাদ, সুব্রত অগাস্টিন গোমেজ, মাসুদ খান, সরকার মাসুদ, অসীম কুমার দাশ, সাজ্জাদ শরীফ, মিনার মনসুর, ফরিদ কবির, সৈয়দ তারিক, কাজল শাহনেওয়াজ, জুয়েল মাজহার, রিফাত চৌধুরী, সরদার ফারুক, ব্রাত্য রাইসু, মজনু শাহ, মাহবুব কবির, কুমার চক্রবর্তী, মুজিব মেহদী, ময়ূখ চৌধুরী, মারজুক রাসেল, সাখাওয়াত টিপু, মোস্তাক আহমাদ দীন, তুষার গায়েন, মাসরুর আরেফিন, শোয়াইব জিবরান, ওবায়েদ আকাশ, আলী আফজাল খান, ওমর শামস, ফেরদৌস নাহার, মাজুল হাসান, পিয়াস মজিদ, ইমতিয়াজ মাহমুদ।
ভারত- অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত, শঙখ ঘোষ, কালী কৃষ্ণ গুহ, জয় গোস্বামী, দেবদাস আচার্য, রণজিৎ দাশ, নির্মল হালদার, জহর সেন মজুমদার, সুবোধ সরকার, মৃদুল দাশগুপ্ত, গৌতম বসু, রাহুল পুরকায়স্থ, গৌতম চৌধুরী, বিজয় দে, সুতপা সেনগুপ্ত, সৈয়দ কওসর জামাল, মলয় রায় চৌধুরী, অলোক বিশ্বাস, কাজল সেন, সুবীর সরকার, যশোধরা রায় চৌধুরী, সমরজিৎ সিংহ, প্রবুদ্ধসুন্দর কর, তৈমুর খান, অনুপম মুখোপাধ্যায়, উত্তম দত্ত, সব্যসাচী হাজরা, স্বপন রায়, মৃণাল বসু, চৌধুরী রামপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, মিতুল দত্ত, পীযুষ রাউত, তৃণা চক্রবর্তী, অংশুমান কর, চৈতালী চট্টোপাধ্যায়, গৌরব চক্রবর্তী, হিন্দল ভট্টাচার্য, অনীক রুদ্র, সংযুক্তা বন্দ্যোপাধ্যায়, পার্থজিৎ চন্দ, প্রবাল কুমার বসু, অমিতাভ মৈত্র, সুজিত দাস, পল্লব ভট্টাচার্য, সুদীপ বসু, বিনায়াক বন্দোপাধ্যায়, শ্রীজাত বন্দ্যোপাধ্যায়, মন্দাক্রান্তা সেন, সুমন গুণ, অতনু বন্দোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন>>> প্রকাশিত হচ্ছে ভিন্নচোখ’র ‘বাংলাবিশ্ব কবিতা সংখ্যা’
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০২০
এইচজে