ঢাকা: বিপরীত মতাদর্শকে দমন করতেই ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ইতিহাসের কলঙ্কতম অধ্যায় রচিত হয়েছিলো। ১৬ বছর আগের সেই কালো দিনকে সুরে সুরে জানানো হলো প্রতিবাদ।
শুক্রবার (২১ আগস্ট) একুশে আগস্টের কালো অধ্যায় স্মরণে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সঙ্গীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদ। সন্ধ্যায় পরিষদের ফেসবুক লাইভে সম্প্রচারিত হয় এ আয়োজন।
অনুষ্ঠানে অংশ নেন দেশের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমাম ও আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল। সঙ্গীত পরিবেশন করেন হাবিবুল আলম ও স্বর্ণময়ী মন্ডল। এছাড়া গান ও কবিতা পরিবেশনের পাশাপাশি অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মাহমুদ সেলিম।
পরিবেশনার শুরুতেই ধর্মান্ধতার আড়ালে লুকিয়ে থাকা ভণ্ডামির কথা প্রকাশ করেন মাহমুদ সেলিম। গেয়ে শোনান- মুখে বলো ধর্ম কথা/কাজে করো শয়তানি/একেই বলে মুনাফেকি/একেই কয় নাফরমানি ...। পরের পরিবেশনায় শিল্পী গেয়ে শোনান- মুক্তিযোদ্ধা নাই কি দেশে/নাই কি ছেলে বাংলা মার ...। সুরের স্রোতধারা থামতেই আবৃত্তি করেন ‘একুশ থেকে একুশ’ শিরোনামের কবিতা।
সুরের আশ্রয়ে মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদকে চপেটাঘাত করেন হাবিবুল আলম। প্রথমেই গেয়ে শোনান- তোরা মিছাই ধর্মের কথা বলিস, তোদের মুখে ধর্ম সাজে না/মানুষের ধর্ম লইয়া তোরা আর খেলিস না ...। দ্বিতীয় পরিবেশনা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে উচ্চকিত হন শিল্পী। গেয়ে শোনান- বোমা মাইডরা মানুষ মারে/সন্ত্রাস কইরা মানুষ মারে ....। সম্প্রীতির বার্তা শেষ হয় এ শিল্পীর পরিবেশনা। গেয়ে শোনান- দুঃখে সুখে শরিক হইয়া যারা বাঁচি দিন রাতে/হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খ্রিষ্টান যারা আছি বাংলাদেশে ...।
হিংস্রতার ঊনত্ব ধরণীতে মানবতার বাণী ছাড়াতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও সলিল চৌধুরীকে আশ্রয় করে পরিবেশনা উপস্থাপন করেন স্বর্ণময়ী মন্ডল। প্রথমে গেয়ে শোনান- হিংসায় উন্মত্ত পৃথ্বী, নিত্য নিঠুর দ্বন্দ্ব/ঘোর কুটিল পন্থ তার লোভজটিল বন্ধ/নূতন তবে জন্ম লাগি/কাতর যত প্রাণী/কর’ ত্রাণ মহাপ্রাণ, আন’ অমৃতবাণী ...। এরপর শিল্পীর কণ্ঠে গীত হয় ‘আজ যত যুদ্ধবাজ দেয় হানা হামলাবাজ’ শীর্ষক সঙ্গীত। ‘চলছে আজ চলবে কাল’ শিরোনামের গানের মাধ্যমে শেষ হয় তার পরিবেশনা।
আলোচনায় সৈয়দ হাসান ইমাম বলেন, একুশে আগস্টের গ্রেনেড হামলা আমাদের জাতীয় জীবনের একটি কালো অধ্যায়। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের জঙ্গিবাদী আক্রমণে বঙ্গবন্ধু অ্যাভেনিউ চত্বর রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল। ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় শহীদ হয়েছিলেন প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন, আহত হন কয়েকশ। ২০০৪ সালের এ দিনটি একটি কলঙ্কিত দিন হিসেবে ইতিহাসে লিপিবদ্ধ। এ দেশকে ধর্মান্ধ শক্তির হাতের তুলে দেওয়ার ষড়যন্ত্রের অংশ ছিল এ হামলা। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের মতোই আরেকটি হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছিল সেদিন। সম্প্রীতি ও প্রগতিশীল বাংলাদেশের পথচলাকে চিরতরে থামিয়ে দেওয়াই ছিল এ হামলার উদ্দেশ্য।
বাংলাদেশ সময়: ০১৪৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০২০
ডিএন/ওএইচ/