শরীর এক কবরখানা
চিনিরাও একদিন বাতিল হয়ে যায়,
তরকারি থেকে খুলে রাখতে হয় নুন,
হাতের পুরোনো কাজের মত
অন্যমনস্ক প্রেম শুয়ে থাকে।
সম্পর্ক!
শরীর!
কবরখানা ভেবে
কি এক একঘেয়েমি!
চলে যায় অন্যখানে।
জীবন, শুধু একা
এক পাণ্ডুলিপি!
সংশোধন হতে হতে
অসাবধানে
নামটাও কেটে ফেলে একদিন।
এই সব ষড়যন্ত্রের পিছনে
কারও কোন হাত নেই।
ঈশ্বর জানতেন,
শেষমেশ যা হবার তাই হয়।
সবুজ বৃক্ষ
ক্রমে একা হয়ে যাও
একদা সবুজ বৃক্ষ যেমন
পাতাহীন, পুস্প-ফলাদি হীন
প্রচণ্ড শীতে শুধু আত্মা সাথে করে
একা দাঁড়িয়ে থাকে।
কোন সমাধান নাই ভেবে
চুপ হয়ে যাও!
কোন অভিযোগ নাই ভেবে
ক্লান্তিহীন, পরিশ্রান্ত ঘুমের আশায়
সন্ধ্যা নামে, বাবার কবরের পাশে।
দ্যাখো গাছ কত একা
হয়তো, কোন এক বুধবার
তুমি মারা গেছো,
তোমার মনে নেই!
তুমি মরে আছো
তোমার ভিতরে।
সেখানে শোকসভা,
গোলাপজলের ঘ্রাণ,
ধোঁয়ায় ধোঁয়ায়
শ্বাসরুদ্ধ প্রায়
আন্তরিক সমাজ।
কার্যত এখনও
টিকে আছে হৃদপিণ্ড
নির্জন শীতকালে।
তোমার শরীরের বাইরে
বসন্তকাল,
কোকিল ডাকছে।
দূরে
একা দাঁড়িয়ে আছে গাছ
তার কাছে যাও
পাশে দাঁড়াও
জড়িয়ে ধরো,
সন্তান যেমন
গলে যায়
বাবার পুকুরে।
দ্যাখো গাছ কত একা!
দ্যাখো তার ভিতরে
গমগম করছে বসন্তকাল,
বাইরে
পাতা ঝরছে,
শীতকাল।
ঘুম এবং মৃত্যুর মাঝখানে
বুকের মাপ দেখেই বলে দেয়া যায়
কোন্ শস্য ভাণ্ডার থেকে এসেছ তুমি
নাকি জন্ম মাত্রই মহাকালের মোংগা এসে
গ্রাস করেছিল তোমাকে।
এসব অবশ্য বড় কথা নয়!
মানুষকে আরও বহুকাল টিকে থাকতে হবে,
আপাতত এ ছাড়া আর কোন পথ নাই!
শেষমেশ যদি কিছু নাই-ই হয়
তবে পেট ভরে মদ খাওয়া ভাল।
প্রেম আর নগ্ন হওয়া এক জিনিস নয়,
ভালবাসার যোগ্য হয়ে ওঠাও বরং এক এবাদত-
এ কথা জানতে জানতে, এই যে আমি মারা যাচ্ছি,
সেটাও কোন দুঃসংবাদ নয়!
ঘুম এবং মৃত্যুর মাঝখানে আর যা কিছু
অমিংমাসিত, তা আমাদের সকলের।
তুমি
তুমি কোথাও আছো।
হয়ত শুকোচ্ছো হৃদয়, ছড়িয়ে চুল,
তোমার অনুপস্থিতির গভীর হিমে
ফুল হ'য়ে,
পাতা হ'য়ে
ঝরে পড়ছি দিন শেষে।
তোমার মুখের আদল ভেবে
ভারত সাগরের নোঙ্গর-প্রিয় ফেনা,
লিখে রাখছে
অসীম বিরহের কবিতা।
তুমি কোথাও আছো।
হয়ত শুকোচ্ছো হৃদয়, ছড়িয়ে চুল।
সুন্দরেরা
সুন্দরেরা ঘুমিয়ে আছে বন-পাহাড়ের দলে।
ঘুমিয়ে আছে হলুদ ফুল,
হালকা কথাচ্ছলে। ।
কালো কাকের কালো ছায়া
যেই পড়লো জলে।
সুন্দর এক ডুব দিলো জলের রসাতলে।