ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

কবিরা অক্সিজেন দেন বলেই ভাষা বেঁচে থাকে: শামীম রেজা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০২১
কবিরা অক্সিজেন দেন বলেই ভাষা বেঁচে থাকে: শামীম রেজা

ঝালকাঠি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও কবি শামীম রেজা বলেছেন, ভাষা হচ্ছে জনগণের সম্পদ, আর এই সম্পদের অভিভাবক হচ্ছেন কবি। ভাষাকে কবিরা অক্সিজেন দেন বলেই ভাষা বেঁচে থাকে।

বুধবার (২৪ মার্চ) সকালে ঝালকাঠিতে ‘সাহিত্য নিবেদিত জীবনের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি’ স্লোগানে লেখালেখি সাহিত্য সম্মাননা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

আমাদের লেখালেখি (বরিশাল), দক্ষিণের কবিয়াল (পটুয়াখালী) ও কবিতাচক্র (ঝালকাঠি) যৌথভাবে এ সম্মাননা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী।

জেলা প্রশাসক তার বক্তব্যে বলেন, এভাবে একটি আয়োজনের মধ্য দিয়ে কবি সাহিত্যিকদের মিলনমেলা ঘটানো সত্যিই ভালো উদ্যোগ। বর্তমান প্রজন্ম স্মার্টফোন-ল্যাপটপ নিয়ে ব্যস্ত থাকে, ফেসবুক-টুইটারে ব্যস্ত থাকে, কেউ বই পড়তে চায় না। জীবনের বাস্তবতায় লেখাপড়া করার খাতিরে বর্তমান প্রজন্ম হয়তো একাডেমিক বই কিছুটা পড়ে, এর বাইরে পত্রিকাও পড়তে চায় না।  সাহিত্য চর্চা থেকে আমাদের এ প্রজন্ম অনেক অনেক দূরে সরে যাচ্ছে, আমাদের ভাববার সময় এসেছে, এটাকে কীভাবে রক্ষা করতে হবে। কারণ সাহিত্য ও সংস্কৃতির চর্চা ছাড়া একটা জাতি সভ্য জাতি হিসেবে টিকে থাকতে পারে না। সভ্য জাতি হিসেবে টিকে থাকতে হলে অবশ্যই সাহিত্য ও সংস্কৃতির চর্চা থাকতেই হবে।

কবি মু. আল আমীন বাকলাই এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. শামীম রেজা।

তিনি বলেন, মুজিব শতবর্ষ, মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণজয়ন্তী এমন এক মাহেন্দ্রক্ষণে আজ আমরা এখানে জন্মভূমিতে দাঁড়িয়ে। ভাষা হচ্ছে জনগণের সম্পদ, আর এই সম্পদের অভিভাবক হচ্ছেন কবি। ভাষা ছাড়া একটা জনগোষ্ঠী বা আদান প্রদানের কথা চিন্তাই করতে পারি না। দুর্বল-সবল যে কবির কথাই বলছি, তারা ভাষাকে অক্সিজেন দেন বলেই ভাষা বেঁচে থাকে। আমি নিজের মতো করে যদি তুলনা দেই, একজন জেনারেল একটি বাহিনীতে থেকে যদি কাউকে স্যালুট দেন আর ওই বাহিনীতে যদি ৫ লাখ সৈন্য থাকে তাদের স্যালুট দেওয়া হয়। আর বিচ্ছিন্নভাবে যদি ১০ হাজার সৈন্য না বুঝে স্যালুট দেয় সেটার যে অর্থ আর একজন জেনারেলের স্যালুট দেওয়ার মধ্যে অনেক ফারাক। ফলে এখানে সেইসব জেনারেলরা উপস্থিত যারা ভাষাকে নিয়তই অক্সিজেন দেন।

কবি শামীম রেজা আরও বলেন, অক্তাভিও পাজ, যিনি একজন আমলা ছিলেন। ১৯৯০ সালে সাহিত্যে তিনি নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, জনগণ যেমন ভাষার সম্পদ, জনগণের সম্পদ হচ্ছে ভাষা আর সেই ভাষার অভিভাবক হচ্ছেন কবি।

অনুষ্ঠানে সম্মাননাপ্রাপ্ত ৫ জন হলেন—ঝালকাঠির সন্তান বিশিষ্ট লেখক ও কবি অমিতা মজুমদার; বরগুনার বামনা উপজেলার সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা, কলামিস্ট, গবেষক, নাট্যকার ও কবি মো. নুরুল ইসলাম; পটুয়াখালীর সন্তান কবি ও লেখক রাধেশ্যাম দেবনাথ; বরিশালের গৌরনদী উপজেলার সন্তান ইতিহাস গবেষক, গীতিকার, ঔপন্যাসিক, বেতার নাট্যকার, সম্পাদক, ছোট গল্প লেখ ও কবি সিকদার রেজাউল করিম; পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার সন্তান কবি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান।

বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলা-উপজেলার সন্তান ও লেখক-কবিদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানে কবি মাহামুদা খানমের অদৃশ্য অরণ্যে কাব্যগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। অনুষ্ঠানে কয়েকজন কবি তাদের স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৯ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০২১
এমএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad