ঢাকা, রবিবার, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

এভিয়াট্যুর

ঈদযাত্রা শুরুর আগেই শেষ আকাশপথের টিকিট

মাছুম কামাল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৮, ২০২৩
ঈদযাত্রা শুরুর আগেই শেষ আকাশপথের টিকিট

ঢাকা: ফারিয়ার হাসান একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। ইচ্ছে ছিল মা-বাবাকে নিয়ে ঈদে কোথাও ঘুরতে যাবেন।

এজন্য একটি এয়ারলাইন্সে অনলাইনে টিকিট কাটার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু টিকিট সোল্ড আউট (বিক্রি শেষ) দেখাচ্ছে। পরে অন্য একটি এয়ারলাইন্সের টিকিট কাটার চেষ্টা করলেও সেখানে টিকিটের দাম স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ দেখে তিনি আকাশ পথে যাত্রার পরিকল্পনা থেকে সরে আসেন।

সড়কপথে যানজট ও ভিড় এড়াতে ঈদযাত্রায় অনেকের পছন্দ আকাশপথ। পাশাপাশি সময় বাঁচাতে অনেকেই তাই যাতায়াত করেন উড়োজাহাজে। তবে অন্যান্য সময়ে যেমন-তেমন, ঈদ এলে স্বল্পমূল্যে টিকেট যেন সোনার হরিণ হয়ে যায়। এবারের ঈদ-উল-ফিতরকে কেন্দ্র করে স্বল্পমূল্যের টিকিট শেষ হয়ে গেছে অন্তত ১ মাস আগে। পাশাপাশি অল্প কিছু টিকিট পাওয়া গেলেও সেগুলো অন্তত দ্বিগুণ দামে কিনতে হচ্ছে, বাংলানিউজের কাছে এমন অভিযোগ করেছেন আকাশপথের একাধিক যাত্রী।

আসন্ন ঈদ-উল-ফিতরের আরও প্রায় দুই সপ্তাহ বাকি থাকলেও স্বল্পমূল্যের টিকিট পাচ্ছেন না সাধারণ যাত্রীরা। এবার এক থেকে দেড়মাস আগেই এসব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে বলে এয়ারলাইন্স সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

বর্তমানে দেশের সাতটি অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে চারটি এয়ারলাইন্স। সেগুলো হচ্ছে—রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ, ইউএস বাংলা, নভোএয়ার ও এয়ারঅ্যাস্ট্রা। আর অভ্যন্তরীণ রুটগুলো হলো- ঢাকা-সৈয়দপুর, ঢাকা-রাজশাহী, ঢাকা-যশোর, ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-কক্সবাজার, ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-বরিশাল। এসব অভ্যন্তরীণ রুটের মধ্যে কক্সবাজার ছাড়া অন্য রুটের ভাড়া সর্বনিম্ন তিন হাজার চারশ থেকে সর্বোচ্চ প্রায় ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে ঈদের ছুটি শুরু হতে এখনও অনেক দিন বাকি থাকলেও ইতোমধ্যে শেষ হয়ে গেছে তিন হাজার চারশ টাকা তথা সর্বনিম্ন মূল্যের টিকিট। এ কারণে একই উড়োজাহাজের একই আসনের টিকিট যাত্রীদের কিনতে হচ্ছে ৮ হাজার থেকে থেকে ১০ হাজার টাকায়।

যাত্রীরা অভিযোগ করেছেন, একচেটিয়া ব্যবসা করছে এয়ারলাইন্সগুলো। মূলত ঈদের সময়টাকে কেন্দ্র করে অতিরিক্ত লাভ করতে চাচ্ছেন তারা। ঈদযাত্রায় অধিক চাহিদার সুযোগ নিচ্ছে।

নভোএয়ারের হেড অব মার্কেটিং অ্যান্ড সেলস মেজবাহ উল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এই বিষয়টা হচ্ছে সর্বোতভাবেই চাহিদা-যোগান। যখনই চাহিদা বেশি হবে, ফ্লাইট পূর্ণ হয়ে গেলে তো মূল্য বাড়বেই। সারা দুনিয়ায় এয়ারলাইন্সের টিকিট এভাবেই চলে। এটা বাস বা ট্রেনের টিকিটের মতো না যে, ভাড়া প্রথম টিকিটে যা থাকবে, হাজারতম নম্বরের টিকিটেও তাই থাকবে। ঈদের সময় ফ্লাইট তো নির্দিষ্ট-ই থাকে, যাত্রীর চাপের কারণে ভাড়া বাড়তেই থাকে।

এয়ারঅ্যাস্ট্রার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইমরান আসিফ বাংলানিউজকে বলেন, ঈদের আগের ৭ দিন বা পরের ৭ দিন যে ডিমান্ড, এটা কিন্তু ওয়ানওয়ে ট্রাফিক (একটি রুটে শুধু যাওয়া বা আসার যাত্রীদের চাপ) হয়। আমরা ঈদের আগের ৫-৭ দিন আউটবাউন্ড যাত্রী পাই, ইনবাউন্ড পাই না। আবার ঈদের পরের ৭দিন ঠিক উল্টো চিত্র থাকে। এখন আমাদের ফ্লাইট পরিচালনার যে খরচ সেটা প্যাসেঞ্জার না থাকলেও হচ্ছে। তখন, আমরা যদি এই খরচটা সমন্বয় না করি, ফ্লাইটই পরিচালনা করতে পারব না। বিষয়টা এটা না যে, দাম বাড়িয়ে আমরা অতিমুনাফা করছি। বরং ফ্লাইট পরিচালনা করার জন্যই আমাকে এই মূল্য সমন্বয় করতে হয়।

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের  জনসংযোগ শাখার মহাব্যবস্থাপক কামরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, বিশ্বের সব দেশে একই পদ্ধতিতে আকাশপথের টিকিট বিক্রি হয়। টিকিটগুলো কয়েকটি ভাগে ভাগ করে সর্বনিম্ন থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ মূল্য ধরা হয়। এবার অনেকেই দেড় থেকে দুই মাস আগে বুকিং দেওয়ায় স্বল্পমূল্যের টিকিট শেষ হয়ে গেছে।

তবে, সাধারণ জনগণের চাওয়া, চাহিদার সময়ে যাতে আগের মতোই থাকে টিকিটের মূল্য। তারা মনে করেন এতে করে তারা যেমনি সুবিধা পাবেন, তেমনে এয়ারলাইন্সগুলোরও যাত্রীসংখ্যা আরও বাড়বে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ৮, ২০২৩
এমকে/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।