ঢাকা: যাত্রী সংকটের কারণে ঢাকা-বরিশাল আকাশ পথে একে একে বন্ধ হচ্ছে বেসরকারি যাত্রীবাহী এয়ারলাইন্সগুলো। এর আগে বন্ধ হয় বেসরকারি বিমান সেবা সংস্থা নভোএয়ারের ফ্লাইট।
বাকি রয়েছে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী উড়োজাহাজ সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। সংস্থাটি ঢাকা-বরিশালের ফ্লাইট বন্ধ করলে এ রুটের সব বিমানে যাত্রীদের চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে।
বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকা-বরিশাল রুটের ফ্লাইট বন্ধ হচ্ছে বলে জানিয়েছে ইউএস-বাংলা।
তথ্য বলছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত ধারণ ক্ষমতার ৮৪ ভাগ যাত্রী বহন করে ইউএস-বাংলা। কেবল জুলাই মাসেই ধারণক্ষমতার ৯২ ভাগ যাত্রী ওঠে তাদের উড়োজাহাজে। এরপরও ফ্লাইট বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে এয়ারলাইন্সটি। এক বছর আগেও ঢাকা-বরিশাল আকাশপথে দৈনিক ১১টি ফ্লাইট ওঠানামা করছে।
মূলত, পদ্মা সেতু চালুর পর থেকেই আকাশপথে যাত্রী কমেছে ঢাকা-বরিশাল রুটে। ২০১৫ সাল থেকে ঢাকা-বরিশাল-ঢাকা আকাশপথে নিয়মিত ফ্লাইট চালাচ্ছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। এখন সপ্তাহে তিনদিন বাংলাদেশ বিমান ও সপ্তাহে ৭ দিন ইউএস বাংলার একটি করে ফ্লাইট চলাচল করছিল।
হিসেব বলছে, একটি বিমানের ফ্লাইট স্বাভাবিকভাবে চলতে যেখানে ৩০ থেকে ৪০ ভাগ যাত্রী প্রাপ্তি যথেষ্ট, সেখানে এ বছর জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত ইউএস-বাংলা এ রুটে প্রতিমাসে প্রায় ৮০ শতাংশ ও বাংলাদেশ বিমান ৪৫ শতাংশ যাত্রী পেয়েছে। চলতি বছরের আগস্ট মাসে বাংলাদেশ বিমান বরিশাল থেকে আয় করেছে এক কোটি টাকারও বেশি, যেখানে তাদের টার্গেট হলো মাসে সাড়ে ৪ লাখ টাকা।
ফ্লাটগুলোর যাত্রী পরিবহনের ডাটা বেজ থেকে দেখা যায়, ঢাকা-বরিশাল-ঢাকা রুটে জানুয়ারি মাসে ইউএস-বাংলা যাত্রী পেয়েছে নির্ধারিত আসনের ৮৮ শতাংশ। একই সময় বাংলাদেশ বিমান পেয়েছে ৪০ শতাংশ। ফেব্রুয়ারি মাসে ইউএস-বাংলা ৯৩; বিমান ৫১, মার্চ মাসে ইউএস-বাংলা; বিমান ৪০, এপ্রিল মাসে ইউএস-বাংলা ৭১;বিমান ৫৫, মে মাসে ইউএস-বাংলা ৪১; বিমান ৪৩, জুন মাসে ইউএস-বাংলা ৪০; বিমান ৪২, জুলাই মাসে ইউএস-বাংলা ৮৫;বিমান ৫১ এবং আগস্ট মাসে ইউএস-বাংলা ৬৫ ও বিমান ৪২ শতাংশ যাত্রী পরিবহন করেছে। একই সাথে সাড়ে ৮ লাখ লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আগস্ট মাসে বরিশাল থেকে বাংলাদেশ বিমানের আয় ছিল প্রায় এক কোটি ৫ লাখ টাকা। জুলাই মাসে আয় ছিল ৪৭ লাখ টাকা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ শাখার মহাব্যবস্থাপক কামরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ঢাকা-বরিশাল রুটে ফ্লাইট স্থায়ীভাবে বন্ধ হচ্ছে না। আমাদের ওই রুটে যাত্রী সংকট রয়েছে। লস হচ্ছে। যে কারণে আমরা আপাতত ওই রুটে ফ্লাইট পরিচালনা বন্ধ রেখেছি। আমরা আসলে এই রুটে অনেক চেষ্টা করছি ফ্লাইট চালু রাখার। এতদিন ফ্লাইট চালু রেখেছিলাম আমরা। যেহেতু ইউএস-বাংলা বেসরকারি এয়ারলাইন্স, কাজেই দীর্ঘদিন লসে থেকে ফ্লাইট চালানো সম্ভব নয়।
কবে নাগাদ এ রুটে ফের ফ্লাইট চলবে? বাংলানিউজের এ প্রশ্নের উত্তরে কামরুল বলেন, সামনের শীত মৌসুমে আমরা এ রুটে পুনরায় ফ্লাইট চালু করার ব্যাপারে আশাবাদী।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৩
এমকে/এমজে